মিরাদুল মুনিম:ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ বার্ধক্যকে কখনো বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না। সত্যিই তাই, ষাটোর্ধ্বরা এমনকি সত্তরোর্ধরাও যেন ফিরে পেল তারুণ্য। সবার মুখে প্রাণ খোলা হাসি আর উচ্ছ্বাস। ছাড়িয়ে গেছে বয়সের সীমা। বয়সের ভারে শরীর নুয়ে পড়লেও মন যেন তাদের আলিফের মত খাড়া। নানা আর নাতিতে যেন এক অপূর্ব মিলন।
দিনটি ছিল শনিবার। বয়স্কদের নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে আনন্দভ্রমণ। গ্রামের নাম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পরানপুর। আনন্দ ভ্রমণের গন্তব্য মন্টু মিয়ার বাগান বাড়ি সাতক্ষীরা। এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনপ্রিয় পিকনিক স্পট।
সবাই যখন আনন্দ ভ্রমণ করবে তখন বৃদ্ধরা কেন বাদ যাবে ? তাই গ্রামের তরুণরা মিলে তাদেরকে আনন্দ দিতে এই আয়োজন। ছাপানো হয়েছে ব্যানার। ঘোড়ার গাড়িকে ব্যানারে শোভা পাচ্ছে – আনন্দ ভ্রমণ- ২০২০। আয়োজনে পরানপুর গ্রামের বয়স্ক ময় মুরুব্বিগণ। জনপ্রতি চাঁদা ৪০০ টাকা।
সকাল সাতটায় চারটি সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি প্রস্তুত। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলো আজ মাঠের কাজকে ছুটি দিয়েছে। কারণ আজ তাদের আনন্দ ভ্রমন। ত্রিশ জনের মত বৃদ্ধ আর গোটা বিশেক তরুণ মিলে সংখ্যা অর্ধশত । যুবক জাকির হোসেন, মাসুম, নূরে আলম ,হামিদুল, তহুরুল আর শহিদুল ইসলাম সহ অনেকেই। সাথে রয়েছেন পরানপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাস্টার দ্বীন ইসলাম বিশ্বাস দিনু এবং গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা তৈয়বুর রহমান।
সকাল ৭ টায় ঘোড়ার গাড়ি ছুটে চলেছে গন্তব্যের পানে। সাথে রয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। বাজছে আব্দুল আলীমের গান, পরের জায়গা পরের জমিন ঘর বানাইয়া আমি রই, আমি তো সেই ঘরের মালিক নই। এমনই বহুবিধ পুরনো দিনের বাংলা গান।
প্রায় দেড় ঘন্টা পর ঘোড়ারগাড়ি পৌঁছল মন্টু মিয়ার বাগান বাড়ি। টিকিট কেটে সবাই প্রবেশ করলো স্পটে। প্রথমে একটু ঘোরাঘুরির পর শূরু হল রান্নাবান্না। খাবারের মেনুতে রয়েছে গরুর গোশত, দোপেয়াজা (ডাল দিয়ে চর্বি) , আর সালাদ । খাওয়া শেষ হওয়ার পর আবার শুরু হল ঘোরাঘুরি। মিনি চিড়িয়াখানা আর রাইডে চড়া।
গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে এমন চমৎকার উদ্যোগের চিন্তা কিভাবে এলো , তা জানালেন পরানপুর গ্রামের অধিবাসী শহিদুল ইসলাম, আমাদের গ্রামটি বরাবরই সংস্কৃটিপ্রিয়। একসময় ভাবতাম গ্রামের বৃদ্ধদেরকে কিভাবে আনন্দ দেয়া যায় তার থেকে এই চিন্তা।
সত্তরোর্ধ্ব হবি চাচা বললেন, আমরা খুবই আনন্দিত। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া আব্দুল ওহাব বিশ্বাস জানালেন, শরীর এখন আর চলতে চায় না কিন্তু আজ কেন যেন ভালো ভালো লাগছে।
দিনশেষে এক চিলতে হাসি নিয়ে বাড়ি ফেরা।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …