হাসপাতাল ফেরত বৃদ্ধকে করোনা-রোগী সন্দেহে মারধর

ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: পাড়া জুড়ে হুলস্থুল। চার দিক থেকে চিৎকার, “করোনা রোগী! করোনা রোগী! পাড়ায় করোনা রোগী ঢুকে পড়েছে!” কেউ লাঠি হাতে তেড়ে গেলেন তাকে তাড়াতে। কেউ আবার বাড়িতে ঢুকে পড়া আটকাতে তিনি কাছাকাছি যেতেই বন্ধ করে দিলেন দরজা-জানলা!

শেষে ক্লান্ত হয়ে মাঝ রাস্তাতেই বসে পড়লেন সেই রোগী। বয়স আনুমানিক ৭০। দু’হাতেই স্যালাইনের চ্যানেল করা। মাথায় সার্জিক্যাল ক্যাপ, মুখে মাস্ক। ডান হাতটা ফুলে রয়েছে। ভিড় থেকে একজন বেরিয়ে এসে বললেন, “নির্ঘাত করোনার রোগী। কোনো হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসেছে। খোলা রাখলেই যাকে-তাকে ছুঁয়ে দেবে। তাই বেঁধে রাখা ভাল।”

পাড়া খুঁজে দড়ি নিয়ে এসে প্রাণশক্তি প্রায় ফুরিয়ে আসা সেই বৃদ্ধকে এর পরে বেঁধে রাখা হল গাছের সঙ্গে! তাকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

সোমবার সন্ধ্যায় এমনই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়।  কলকাতার মানিকতলার ১৫ নম্বর বস্তিতে। দীর্ঘক্ষণ পরে পাড়ারই এক ব্যক্তি চিনতে পারেন বৃদ্ধকে। মানিকতলারই ক্যানাল ইস্ট রোডের পাশের পাড়ায় তার বাড়ি। করোনায় নয়, লিভারের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তিনি। অনেকের মতে, জনমানসে করোনা নিয়ে সচেতনতার কতটা অভাব, এই ঘটনাই ফের তা সামনে নিয়ে এল।

দিন কয়েক আগেই করোনার ভয়ে গিরিশ পার্কের এক রোগীকে জ্বর থাকায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে। তবে করোনার ভয়ে কাউকে বেঁধে রাখার এবং মারধরের এমন অভিযোগ এই প্রথম।

এলাকার লোকজন জানান, খবর দেওয়া হয়েছিল মানিকতলা থানাতেও। সেখানকার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বলেন, “এই ধরনের রোগীকে আমাদের ধরাটা ঠিক হবে না। লালবাজারের অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা হয়েছে। সেই অ্যাম্বুল্যান্সই যেখানে নেওয়ার নিয়ে যাবে।”

ততক্ষণ অবশ্য বাঁধাই থাকেন বৃদ্ধ। পরে এলাকার এক ব্যক্তি চিনতে পারেন তাকে। বৃদ্ধের পাড়ার লোক তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশও চলে যায়। মানিকতলা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা অবশ্য এ ব্যাপারে দাবি করেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দেখছি।” আনন্দবাজার।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।