0 অনলাইন ডেস্ক: টানা লকডাউনের ফলে দিন মজুর মায়ের আয়ের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ। ঘরে যেটুকু খাবার ছিল এই কয়েকদিনে তাও ফুরিয়ে গেছে।অসহায় এই পরিবারের কোন খোঁজ নেয়নি কথিত সভ্যতাগর্বি রাষ্ট্রও।ক্ষুধা-কাতর সন্তানদের খাবারের জোগাড় করতে না পেরে পাঁচ সন্তানকে নদীতে ফেলে দিলেন অসহায় এক মা।গতকাল রোববার এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে আমাদের প্রতিবেশি পরাশক্তি ভারতের উত্তরপ্রদেশের ভাদোলি জেলায়।
ইতিমধ্যে ’অপরাধী’ ওই মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।শিশুদের খোঁজে গঙ্গায় শুরু হয়েছে তল্লাশি।বলা হচ্ছে অভিযুক্ত নারী গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ।তবে সূত্র জানাচ্ছে, অভিযুক্ত ওই নারী একজন দিনমজুর। লকডাউনের ফলে উপার্জন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় তার। যেটুকু সঞ্চিত অর্থ ও খাবার ছিল তাও শেষ হয়ে যায়। ফলে তার ও সন্তানদের অনাহারে দিন কাটছিল।
স্থানীয়রা জানান, ক্ষুধার্ত সন্তানদের কষ্ট সহ্য করতে না পেরেই তিনি তাদের গঙ্গায় ফেলে দেন।
এদিকে লকডাউনের কারণে রাজ্যের একজনও মানুষ অভুক্ত থাকবে না বলে যে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার কর উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার, ভাদোহি জেলার ঘটনা রাজ্যের প্রান্তিক মানুষের বিপন্নতার ছবি আরও একবার প্রকট করে তুলল।
করোনা লকডাউনে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের গরিব মানুষ। তাদের একটা বড় অংশের মানুষের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ঘরে ঘরে তীব্র হচ্ছে দারিদ্র। এই দুর্দিনে সরকারের করনীয় সম্পর্কে সম্প্রতি একটি সুস্পষ্ট দিশা দেখিয়েছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। কেন্দ্রের মোদী সরকারের প্রতি তাঁর পরামর্শ ছিল, এই মুহূর্তে সরকারি অর্থ খরচের ক্ষেত্রে গরিবদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আরও বেশি করে সরকারকে গরিবদের পাশে দাঁড়াতে হবে। একটি জনকল্যাণকর রাষ্ট্রের এটাই প্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। রাজনের এই বক্তব্য কতটা ভারতের বাস্তব পরিস্থিতির উপরে দাঁড়িয়ে আছে ভাদোহি জেলার এই মর্মান্তি ঘটনা তা আরও প্রকট করে তুলল।
এখন পর্যন্ত ভারতে করোনায় আক্রান্ত ৯ হাজার ১৫২ জন। মারা গেছেন ৩০৮ জন।