ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ প্রাণঘাতি মহামারী করোনা ঝুঁকির কবলে বাংলাদেশ। পুরো রাষ্ট্র যন্ত্র করোনা প্রতিরোধে, করোনা যুদ্ধে যুদ্ধরত। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবিরাম যুদ্ধ চলছে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্র করোনা যুদ্ধে জীবনবাজি রেখে লড়ছে তো লড়ছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের একটি বড় অংশ সিভিল প্রশাসন ভুক্ত। স্বাভাবিক ভাবে মাঠ প্রশাসনের সাথে জড়িত প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থাদি সম্পন্ন করে থাকে। অন্যদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন রাখতে কাজ করে থাকে কিন্তু বর্তমান সময়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সত্যিকার অর্থে মাঠে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে, সড়কে সড়কে, হাট বাজারে প্রাণঘাতি করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে। বর্তমান সময়ে সরকারি ছুটি চলছে জনসাধারণকে ঘরে রাখতে, সামাজিক এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে চলমান সরকারি ছুটি যথার্থতায়- করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে প্রশাসন মাঠে। দৃশ্যতঃ করোনা ঝুঁকিকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসক হতে শুরু করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারি কমিশনার ভ‚মি, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহ সরকারি কর্মকর্তারা প্রতিদিন সকাল হতে রাত এমন ভাবে বিরামহীন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে দায়িত্বপালনকারী প্রশাসনের কর্মকর্তারা অজান্তেই জনসাধারণের কাছাকাছি চলে আসছে। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি রোধ বিরোধী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা, অহেতুক ঘোরাঘুরি, নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত দোকান খুলে রাখা সহ বিভিন্ন ধরনের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারীরা করোনা ঝুঁকিতে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায়, ত্রাণ বিতরনে অনিয়ম রোধ সহ করোনা বিরোধী যুদ্ধে প্রশাসনের সাথে প্রতিমূহুর্তে সেনা সদস্য, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে চলেছে। কেবল মাঠ প্রশাসন নয় মন্ত্রি পরিষদ বিভাগ, সংস্থাপন বিভাগ, ত্রাণ মন্ত্রণালয় সহ সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো দিন রাত কাজ করছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় করোনা যুদ্ধে প্রশাসনের বীরোচিত, মর্যাদাশীল প্রশংসনীয় ভ‚মিকা প্রতিমূহুর্তে দৃশ্যমান। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন শহরের অন্তত দশটি স্থানে ভ্রাম্যমান সবজি বাজারের মাধ্যমে জনসাধারণকে বাজারমুখি হতে দূরে রাখছে। ঘরে বসেই ক্রেতারা সবজি পাচ্ছে। শহরের সংকীর্ণ এলাকার সবজি বাজার সহ নিত্য পণ্যের বাজার উন্মুক্ত স্থানে এনেছেন। শহরের পাশাপাশি জেলার উপজেলাগুলোর লোক সমাগম হওয়া বাজার গুলো ফাঁকা ও উন্মুক্ত স্থানে স্থাপন করেছে। গর হাটগুলো স্থগিত করেছে। জেলার কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরনের পাশাপাশি আসন্ন বোরো ধান কাটার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটায় কোন ধরনের সমস্যা যেন না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। কৃষি উপকরন ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা যেন না হয় বিশেষ করে বীজ, সার, সেচ যন্ত্র এ বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম চিংড়ি বাজারজাত, উৎপাদন, রেনু পোনা সংগ্রহ ও ঘেরে অবমুক্ত করার ক্ষেত্র যেন প্রতিবন্ধকতা মুক্ত হয় সে বিষয়েও জেলা প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। ইতিমধ্যে কৃষি ও চিংড়ি বিষয়ে জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করেছেন জেলা প্রশাসক। ত্রাণ বিতরনে অনিয়ম রোধে প্রতিটি উপজেলায় মতবিনিময় সহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন জেলা প্রশাসক। জনসাধারনকে ঘরে রাখতে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে মিডিয়ার মাধ্যমে। বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে জেলাবাসির উদ্দেশ্যে অনলাইনের মাধ্যমে কবিতা আবৃতি করেছেন জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল। দেশের এই চরম সংকট কালিন সময়ে কেবল চাকুরির জন্য দায়িত্ব পালন নয়, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সত্যিকার অর্থে মানবিকতা, দায়িত্বশীলতা, কর্তব্য পরায়নতা সর্বোপরি যে দেশ প্রেমের স্বাক্ষর রেখে চলেছে যা কেবলমাত্র জাতীয় বীরদের জন্যই মানানসই। বর্তমান সময়ে করোনা ঝুঁকিকে সঙ্গী করে করোনা যুদ্ধে যুদ্ধরত মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সত্যিই জাতীয় বীর এবং সাহসী যোদ্ধা।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …