সে এক বেদনা বিধুর অধ্যয়……..

মুহা. রুহুল আমিন,
মাবুদের নৈকট্য হাসিল করা ও তারই দিদারের রোমাঞ্জকর মোহনায় মিলিত হওয়ার যত পথ রয়েছে শাহাদাতের খুনে রঞ্জিতপথ তার মধ্যে সবচেয়ে প্রসস্ত ও সংক্ষিপ্ত ।
ভাই তুমি গোপনে মহান প্রভুকে কত বেশি খুশি করেছ ?
যে আজ আমাদের রেখে চলে গেলে জান্নাতের ওপারে সুন্দর ভূবনে ?

ওরা তাদের মুখের ফুঁ দিয়ে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। অথচ আল্লাহর ফায়সালা হলো তিনি তার নূরকে পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত করবেনই। কাফেররা তা যতই অপছন্দ করুক না কেন।
(সুরা আস সাফ-৮)

শাহাদাত এর উপর যখনই লিখতে গিয়েছি তখনই কলম অক্ষমতা প্রকাশ করেছে, আবেগ আব্রুত হয়ে পড়েছি। ছাত্র ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বের কারনে বারবার আমাকে শাহাদাতের মিছিলে যেতে হয়েছে। হায়নাদের গুলির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত, শহীদের লাশের পাশে দাড়িয়ে কথা বলেছি বার বার। শহীদ পরিবারের মাতা- পিতা, ভাই বোন, আত্নীয় স্বজন, সহপাটিদের বিলাপ ও রোনাজারিতে সান্তনা দিতে গিয়ে বেশামাল হয়েছি, বহুবার তাদের অশ্রু মুছতে গিয়ে নিজিই হয়ে পড়েছি অশ্রুসিক্ত!

সত্যিই আজও বিশ্বাষ করতে কষ্ট হয় যে আমিনুর ভাই নেই।
আমার সাথে প্রথম পরিচায় শ্যামনগর সরকারী কলেজে, আমি তখন শ্যামনগর উপজেলা সভাপতি আর আমিনুর ভাই কালিগজ্ঞ কৃষ্ঞনগর ইউনিয়ন সভাপতি। প্রথম সাক্ষাতে যে আপন হয়েগিয়েছিল জীবনের শেষ পর্যন্ত তা আর ভোলার নয়। একসাথে আন্দোলনের কাজ করতে যেয়ে দেখেছি, সাংগঠনের আনুগত্য করতে দেরি করতেন না জান্নাতের এই ফুটান্ত গোলাপটি।

২৭ এপ্রিল ২০১৪ সকাল থেকে সাংগঠনিক কাজ করে দুপুরে খাওয়া শেষ করতেই বাসার চারদিকে আওয়ামী সন্ত্রাস ও পুলিশ ঘেরাও করে গুলি করতে থাকে। হায়নাদের গুলির আঘাতে ঝাঁজরা হয় আমিনুর রহমান ভাইয়ের বুক!
নিথর দেহো পড়ে থাকে জমিনে!
সে এক বেদনা বিধুর অধ্যয়.……..
আমি তখন কেন্দ্রের দশ দিনের শিক্ষা শিবিরে ঢাকাতে, হঠাৎ করে এ খবর। ভাই হারানোর বেদনা যে কত কঠিন তা বলে বুঝান সম্ভাব নয়, অশ্রু সিক্ত নয়নে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম। এরপর আমিনুর ভাইযের কফিন নেওয়া, এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করা, হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ভাইদের চিকিৎসা, রক্তের ব্যাবস্হা করা, এভাবে কাটতে থাকল বেদনা বিধুর মুহুত্ব গুলি।
অত্যাচারী শাষকের জুলুম নীপিরনের বিরুদ্ধে জনগনের প্রতিবাদ মুখর আন্দোলনে আমিনুর ভাইয়ের ভুমিকা ছিলো অবিশ্বরনিয়, তাই জালিমরা তাকে শয্য করতে পারেনি. ইতিহাসে পাতা থেকে আমিনুর নামটি মুছে ফেলতে চেয়েছিলো।কিন্তু ওরা জানে না আমিনুর রহমানের মত লক্ষ-কোটি তরুণ ইসলামী আন্দোলনে আমিনুরের উত্তরসুরী ?
তারা গেয়ে উঠেঃ
“সেই সংগ্রামী মানুষের সারিতে আমাকেও রাখিও রহমান, যারা কুরআনের আহবানে নির্ভীক নির্ভয়ে সব করে দান।”

শহীদ আমিনুর রহমান ভাইকে আন্দোলনের কাজে কষ্টের সাগর হাঁসি মুখে পাড়ি দিতে, জুলুমবাজ সরকার যখন ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান,সাড়াসি অভিযান,দেখা মাত্র গুলি করার ঘোসনা দিলো তখন কিছু দিন একসাথে থাকতাম, আহ প্রচন্ড শিতে নিজের চাদর সাথিদের দিয়ে কত কষ্টে রাতের পর রাত কাটিয়েছে, সেই সময় গুলি আমাদের জন্য ছিলো এক অন্য রকম বেদনা বিধুর।
হে মালিক প্রিয় ভাইকে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন….!

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।