ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, পৃথিবী থেকে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ‘হয়তো কখনোই নির্মূল হবে না।’ এ ছাড়া এই ভাইরাস কবে নির্মূল হবে সে বিষয়ে ধারণা প্রকাশ করার ব্যাপারেও বুধবার সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সি বিষয়ের পরিচালক ডা. মাইক রায়ান।
তিনি বলেন, প্রতিষেধক যদি পাওয়াও যায়, তবুও এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ‘ব্যাপক প্রচেষ্টা’ চালাতে হবে। খবর বিবিসির
এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৪৩ লাখের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় তিন লাখ মানুষের।
জেনেভার ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে ডা. রায়ান বলেন, ‘এই ভাইরাস আমাদের জাতিগত রোগ হিসেবে আমাদের সঙ্গেই থাকতে পারে এবং হয়তো কখনোই শতভাগ নির্মূল হবে না।’
এক্ষেত্রে তিনি এইচআইভির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এইচআইভি’ও নির্মূল হয়নি। কিন্তু আমরা ওই ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থান অর্জন করতে পেরেছি।’
ডা রায়ান আরো বলেন, ‘এই ভাইরাস কবে নির্মূল হবে’ সেই ধারণা যে কেউ দিতে পারে – তাও তিনি বিশ্বাস করতে চান না।
বর্তমানে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য প্রতিষেধক তৈরির অন্তত ১০০টি প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে প্রতিষেধক আবিষ্কারই যে ভাইরাসের বিলুপ্তি নিশ্চিত করে না, তা মনে করিয়ে দেন ডা রায়ান। তিনি উল্লেখ করেন, হামের টিকা বহুদিন আগে আবিষ্কার হলেও হাম এখনও বিলুপ্ত হয়নি পৃথিবী থেকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব টেড্রোস ঘেব্রেয়েসাস অবশ্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এর গতিপথ আমাদের হাতে এবং এটি আমাদের সবার মাথাব্যথা। এই মহামারি থামাতে আমাদের সবার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রোগতত্ববিদ মারিয়া ভ্যান কারখোভ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এই মহামারি পরিস্থিতি থেকে বের হতে আমাদের সময় লাগবে, আমাদের মানসিকভাবে এর জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারার এমন সময় এই মন্তব্য করলেন যখন বিভিন্ন দেশ পর্যায়ক্রমে তাদের লকডাউনের কড়াকড়িতে শৈথিল্য আনছে এবং আরো অনেক দেশের নেতাই তাদের নিজ নিজ দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উন্মুক্ত করে দেয়ার চিন্তা করছে।
ডা. টেড্রোস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিলে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। তিনি বলেন, ‘অনেক দেশই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ শিথিল করতে চাইবে। কিন্তু আমাদের সুপারিশ, এখনও যে কোনো দেশকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকা উচিত।’
ডা. রায়ান সতর্ক করে বলেন, ‘অনেকেই চিন্তা করছেন লকডাউন শতভাগ কার্যকর ছিল এবং লকডাউন উঠিয়ে নিলে পরিস্থিতি ভালো হবে। এই দুইটি ধারণাই ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ।’