সাতক্ষীরায় সবজি বাজারে আগুন ॥ বেকায়দায় ক্রেতা সাধারণ

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:   সবজি বাজারের উত্তাপ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। বলা যায় বাজার ব্যবস্থা অস্থিতিশীলতার সব ক্ষেত্রই স্পর্শ করেছে সবজি বাজার। বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় ভোক্তা সাধারনরা সবজি বাজার অর্থাৎ সবজির মুল্য নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন। বাজারে একদিকে সবজির উপস্থিতি কম অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধির অসম প্রতিযোগিতা। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় সবজির এমন মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটেনি। সাতক্ষীরার জনসাধারনের চাহিদার সিংহভাগ সবজি সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত হয়, চাহিদার বাদবাকি সবজি খুলনার চুকনগর, যশোরের বাগআচরা, ঝিকরগাছা সহ আশপাশের এলাকা হতে আসে। সাতক্ষীরার বাজারগুলোতে সবজির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারন অনুসন্ধানে যে বিষয়টি বিশেষ ভাবে সামনে এসেছে তা হলো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং মহামারী করোনা ভাইরাস। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এ সবজি ক্ষেত যেমন তছনছ হয়েছে অনুরুপ ভাবে বীজতলা লন্ডভন্ড হয়েছে যে কারনে সবজির উৎপাদন স্বাভাবিক গতিতে হইনি পক্ষান্তরে করোনা ভাইরাসের কারনে উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্টরা কিছুটা অনগ্রসর এবং ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করায় চাষাবাদে যথাযথ গতি ফেরেনি যে কারনে উৎপাদনে ছন্দপতন ঘটে। উৎপাদিত সবজি অপেক্ষা চাহিদা বেশী যে কারনে মুল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে এক শ্রেণীর সিন্ডিকেট মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রনে সবজি বাজার যে কারনের মূল্য বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া ছুটছে তো ছুটছেই। সাতক্ষীরা শহর কেন্দ্রীক একাধিক, কলারোয়া, বুধহাটা, পাটকেলঘাটা, পারুলিয়া, সখিপুর, কালিগঞ্জ ফুলতলা, শ্যামনগর বংশীপুর, ইশ্বরীপুর, মুন্সিগঞ্জ, আশাশুনী বাজার, বড়দল সহ বিভিন্ন এলাকাই পাইকারী সবজি আড়ৎ গুলোতে সবজি জমা হয় সেখান হতে খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে বাজারে যেয়ে তা সরাসরি ভোক্তাদের হাতে পৌছায়। আড়ৎগুলো কেন্দ্রীক সিন্ডিকেট চক্র ও সক্রীয়, ক্ষুদ্র, প্রান্তীক ব্যবসায়ী এবং সবজি চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায় উৎপাদন অধিক হলে, চাহিদার তুলনায় সবজির যোগান ততোধিক হলে সিন্ডিকেট বাজারে তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না, তবে সিন্ডিকেট চক্র সক্রীয় সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। প্রতিদিনই বাজারে সবজির মূল্য বেড়েই চলেছে তো চলেছেই, ছোট আকৃতির লাউ কয়েকদিন পূর্বে ও যার মূল্য ছিল বিশটাকা বর্তমান তার মুল্য পঞ্চাশ টাকা। তেমনি ভাবে এক তাড়ি পুইশাক বিশটাকা, শাক প্রতিকেজি ষাট টাকা, কাচকলা কেজি প্রতি পঁয়তাল্লিশ/পঞ্চাশ টাকা, পটল কেজি প্রতি চল্লিশ টাকা, ঢেড়স কেজি প্রতি পঁয়ত্রিশ/চল্লিশ টাকা, ওল কেজি প্রতি সত্তর/আশিটাকা, কচুর মুখির মূল্য প্রতি কেজি ষাট টাকা যা অতীতের সব ধরনের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে মিষ্টি কুমড়ো কেজি প্রতি সবধরনের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে মিষ্টি কুমড়ো কেজি প্রতি ত্রিশটাকা, গোল আলুর মূল্য অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা আকাশচুম্বি কেজি প্রতি ত্রিশটাকা, এক শ্রেণীর সিন্ডিকেট আলু ব্যবসায়ীরা হিমাগারে আলু রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে আলুর মূল্য বৃদ্ধির অশুভ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সাতক্ষীরার হিমাগার গুলোতে বিপুল পরিমান আলু সংরক্ষিত অথচ আলুর মুল্য প্রতিকেজি ত্রিশটাকা, এবং তার মাসুল দেচ্ছে ভোক্তা সাধারণ, সাতক্ষীরার সবজি বাজারের আগুনের ছোয়া মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্তদের জন্য গলার ফাঁসে পরিনত হয়েছে। কৃষকদের সবজি উৎপাদনে বিশেষ ভাবে উদুদ্ধ করতে হবে। প্রনোদনা এবং ভর্তুকির বিষয়টিও বিশেষ ভাবে ভাবতে হবে। সবজি বীজ বিতরন করতে হবে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে জেলার পিপে গাছের সর্বনাশ করেছে। বাজারে বর্তমান প্রতিকেজি পিপে পঞ্চাশ হতে ষাট টাকা। ছোট ছোট পিপেগাছ বিক্রি হচ্ছে চল্লিশ/পঞ্চাশ টাকা। বীজ বিতরনের পাশাপাশি গাছ ও বিতরন করতে হবে। সরকারি ভাবে কীটনাশক ও বিতরন করতে হবে এই মুহুর্তে কৃষকের উৎপাদিত সবজি পণ্য পরিবহন খরচ কম সিন্ডিকেট হতে দুরবর্তী অবস্থান, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করা সর্বপরি ভূর্তকীর ব্যবস্থা করতে হবে।

Check Also

সাতক্ষীরা শহর শখার ২ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি সাতক্ষীরা শহর শখার ২ নং ওয়ার্ড (রাজারবাগান ও সরকারপাড়া ইউনিট) এর উদ্যোগে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।