সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসায় অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগে মোটা অংকের অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ প্রক্সি প্রার্থী দিয়ে সম্পন্ন হলো সকল কার্যক্রম!

ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসায় অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগে মোটা অংকের অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ। প্রক্সি প্রার্থী দিয়ে সম্পন্ন হলো সকল কার্যক্রম! আহছানিয়া মিশন মাদরাসায় অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ পওয়া প্রার্থী লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে প্রক্সি প্রার্থীকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি প্রকৃতপক্ষে কম্পিউটার অপারেটিংয়ে দক্ষ নন।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসায় অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে জনবল নিয়োগের জন্য গত ১৮/০৮/২০২০ তারিখে স্থানীয় দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে গত ১২/০৯/২০২০ তারিখে শহরের অদূরে দারুল হাদিস আহমাদিয়া সালাফিয়া মাদরাসায় এই নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ১২/০৯/২০২০ তারিখে আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসায় অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষার লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা দারুল হাদিস আহমাদিয়া সালাফিয়া মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে লিখিত ও ভাইভার পর প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। অভিযোগকারী জানান, পদটি যেহেতু অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর সেহেতু আবেদিত প্রার্থীদের কম্পিউটারে বসিয়ে প্রাকটিক্যাল (হাতেকলমে) পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা (বিধিবিধান) থাকলেও সেটি পরিপালন হয়নি। যা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিষয়টি নিয়ে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে। যেহেতু পদটি অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর। সে কারণে প্রার্থীকে অবশ্যই কম্পিউটার পরিচালনায় দক্ষ হতে হবে। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী নিজে লিখিত ও ভাইভাতে অংশগ্রহণ না করে মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের সাথে রফা করে প্রক্সি প্রার্থীকে দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার সকল কার্যক্রম অনৈতিক ও অবৈধভাবে সম্পন্ন করিয়েছে শিক্ষা বিভাগ ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে।

জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ওই অভিযোগে জানা যায়, আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসা কমিটির কয়েকজন, মাদরাসার সুপার মাওলানা আবদুল মজিদ ও দারুল হাদিস আহমাদিয়া সালাফিয়া মাদরাসা সংশ্লিষ্ট আহলে হাদিস আন্দোলন, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাধারণ মাওলানা আলতাফ হোসেন পরস্পর যোগসাজস করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অনৈতিক ও অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ সম্পন্ন করেছেন। সেখানে বড় ধরণের আর্থিক লেনদেন হয়েছে।

আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসার সুপার মাওলানা আবদুল মজিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। নিয়োগে আর্থিক অনিয়ম ও কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি।

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র জানান, তিনি নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি বলেন, প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর পরিবর্তে প্রক্সি প্রার্থীর সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়টি মিথ্যা।

জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আহছানিয়া মিশন আলিম মাদরাসা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তার কোনো কর্তৃত্ব নেই। এই বিষয়টি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে তার কোনো হস্তক্ষেপ ও জানাশোনা নেই।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন এস এম মোস্তফা কামাল অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এখনও পর্যন্ত (১৭ সেপ্টম্বর, বৃহস্পতিবার) তার কাছে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ হাতে পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা
১৭.০৯.২০২০
০১৭১৪ ৯৬৯৪৫৪

Please follow and like us:

Check Also

২৮শে এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারেও ক্লাসের পরিকল্পনা

আগামী ২৮শে এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।