বেওয়ারিশ কুকুরের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ সাতক্ষীরাবাসি

আবু সাইদ বিশ্বাস: ক্রাইমবার্তা রিপোট: সাতক্ষীরা: বেওয়ারিশ কুকুরে যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ সাতক্ষীরা পৌরবাসি। গোটা শহর যেন বেওয়ারিশ কুকুরে ভরপুর। রাতের সাতক্ষীরা শহর যেন বেওয়ারিশ কুকুরের দখলে। বাড়ছে দুর্ঘটনা। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সদর হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা চোখে পড়ার মত। বেওয়ারিশ কুকুর অপসারণের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে শহরবাসী। পৌরমেয়ারের কাছে বার বার দাবী জানিয়েও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। গোটা জেলাতে ও প্রায় একই অবস্থা।

ভুক্তভোগীরা বলছে তারা কুকুরের যন্ত্রণায় বাসা থেকে বের হতে পারেন না, মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারেন না কিংবা বাচ্চারা নির্বিঘ্নে খেলাধুলা করতে পারেন না। বেওয়ারিশ কুকুরের এ রকম অবাধ বিচরণে হতবাক সাধারণ মানুষ।

সূত্র বলছে কুকুরের মোট সংখ্যাকে দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। বেওয়ারিশ ও মালিকানাধীন। অন্যভাবে বলতে গেলে বেওয়ারিশ ও নিয়ন্ত্রিত । যারা মুক্তভাবে চলে, ঘোরাঘুরি করে তারাই বেওয়ারিশ। এরা দুই প্রকৃতির। সংযত ও অসংযত । মালিকানাধীন কুকুরগুলো হারিয়ে গেলে, মালিকানা হারালে, অসংযত প্রকৃতির হয়ে পড়লে বেওয়ারিশ হয়ে যায়। পরে এরা নিজেরা প্রাকৃতিক উপায়ে বংশবৃদ্ধি করে করে বেওয়ারিশ হয়। আর এভাবেই থেকে যায়।

প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছে, কুকুরের পূর্ণাঙ্গ বয়সে পৌঁছাতে মাত্র ছয় মাস বা ততোধিক সময় লাগে। এদের গর্ভকাল সময় ছোট। দু’মাস বা তার কিছুদিন বেশি। কুকুরের প্রতি প্রসবে বাচ্চার সংখ্যা অনেক বেশি। জাত ভেদে তা পাঁচ থেকে শুরু হয়। এমনকি বিশও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এসব মিলিয়ে প্রতি প্রজনন পরপর অনাবশ্যক কুকুরের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলে।

সাতক্ষীরাতে শখের বসে দেশীয় জাতের কুকুর পুষছে এমন লোকের সংখ্যা খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। অথচ বেওয়ারিশ কুকুরের সিংহভাগ দেশীয় জাতের। কোন এক অলিখিত নিয়মে এদেশের মানুষ শুধুমাত্র খাওয়ার বেলায় দেশী জাতের চিকেন অধিকতর পছন্দ করে। বাকিসব ক্ষেত্রে দেশের হিসেব বিবেচনাধীন। বেওয়ারিশ কুকুরগুলোও এই নিষ্ঠুর বাস্তবতার বাইরে নয়।

পরিবেশবিদরা বলছে,নিঃসন্দেহে কুকুর হত্যা অমানবিক। বিপজ্জনক। পরিবেশ দূষণ ও রোগ সংক্রমণের বড় কারণ। বাস্তুসংস্থানে জীবিত নির্দিষ্ট একটি প্রজাতির সাথে পরিবেশগত নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। নির্বিচারে কুকুর হত্যা এটি বিনষ্ট করবে। ইঁদুর, শেয়াল, নেকড়ে বা সদৃশ প্রাণীগুলোও তখন বেড়ে যাবে।

নির্বিচারে কুকুর হত্যা শিশু ও জনমনে গভীর হতাশা ও আতংকের উদ্রেক করে। মানুষের মত এদেরও রয়েছে বেঁচে থাকার সমান অধিকার। তাদের মতে নির্বিচারে কুকুর হত্যার লাইসেন্স কোন ধর্মের নিষেধ বিধিতেও নাই।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, নির্বিচারে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন কোন কিছুর সমাধান নয়। বেওয়ারিশ কুকুর হত্যার প্রধানতম টার্গেট জলাতঙ্ক রোধ। জলাতঙ্ক, ভাইরাস জনিত একটি মারাত্মক রোগ যা মানুষসহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণিদের আক্রান্ত করে।
সাতক্ষীরা পৌরবাসি ‘নিরাপদে চলতে চায়, বেওয়ারিশ কুকুর মুক্ত শহর চাই’, ‘কুকুর থাকবে আঙ্গিনায়, বেওয়ারিশ কুকুর অপসারণ চাই’, ‘আর কত মানুষকে কামড়ালে সাতক্ষীরাা শহর বেওয়ারিশ কুকুর হতে মুক্তি পাবে’, ‘মাননীয় পৌরমেয়ারের কাছে প্রশ্ন শহরবাসির।

এ সম্পর্কে সাতক্ষীরা পৌরমেয়ার তাসকিন আহম্মেদ চিশতি জানান, বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রনে দ্রুত কার্যকরি পদক্ষে নেয়া হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

One comment

  1. অবিলম্বে সাতক্ষীরা শহরবাসিকে কুকুর যন্ত্রনা থেথে মুক্তি দিন মেয়ার সাহেব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।