ক্রাইমবাতা রিপোট”সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার নামে পিতা-পুত্রসহ ৩ প্রতারকের বিরুদ্ধে ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার গোলাম রসুল বাদি হয়ে ১০নং আগরদাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালতে ৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন-সদর উপজেলার চুপড়িয়া গ্রামের মুজিবর রহমানের পুত্র মোশারফ হোসেন, মৃত অজেদ আলির পুত্র মুজিবর রহমান ও কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের স্ত্রী তাজমুন নাহার। অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, মোশারফ হোসেন ঢাকায় থাকেন। সেই সুবাদে মাদ্রাসার সুপার গোলাম রসুলের মোবাইল ফোনে মোশারফ হোসেন এইমর্মে কথা বলেন, আপনার আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করে দেওয়া হবে। সচিব, অর্থ উপদেষ্টা ও মন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে। তবে এমপিওভুক্ত করতে ৩০ লাখ টাকা দেওয়া লাগবে, এমন চুক্তি করেন প্রতারক মোশারফ হোসেন। একপর্যায় আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার এমপিওভুক্ত করার জন্য ২০১৭ সালে ৩০ লাখ টাকার চুক্তির বিনিময়ে সরল বিশ^াসে মোশারফ হোসেনের কথামত ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ১০ অক্টোবরের মধ্যে প্রাইম ব্যাংকের একাউন্ট হিসাব ১৬২২১০২০০২৩৩১৪, ২১৬২২১৩০০৬২৫৬, নম্বরে, ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট হিসাব ২৫৮১৫১৩৫৪৪৫ নম্বরে ও বিকাশ ০১৭৫৯৯৬২২৯৮ মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে সহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে মোশারফ হোসেন ও তার পিতা মুজিবর রহমান, বোন নাহারের কাছে মোট ২১ লাখ টাকা প্রদান করে মাদ্রাসার সুপার গোলাম রসুল।
কিন্তু মাদ্রাসাটি ৩ বছরের মধ্যে এমপিওভুক্ত করে দিতে পারেনি এই তিন প্রতারক। এমপিওভুক্ত করে দিতে না পারায় মোশারফ ও তার পিতা মুজিবর রহমান, বোন নাহারের কাছ থেকে ২১ লাখ টাকা ফেরত নিতে মোশারফ হোসেনের বাড়িতে ধর্ণা দিতে থাকেন এবং মোশারফ হোসেনের ফোনে কথা বলতে মাদ্রাসার শিক্ষকরা। কিন্তু প্রতারক মোশারফ ও তার পিতা মুজিবর একের পর এক শিক্ষকদের ওয়াদা করতে থাকেন। ইতোমধ্যে মোশারফ হোসেনের গ্রামের বাড়ি চুপড়িয়ায় একটি শালিস বৈঠক হয়। শালিস বৈঠকে ওই ২১ লাখ টাকা নিয়েছেন এবং টাকা ফেরত দিবেন মৌখিক ভাবে এবং মোবাইল ফোনে স্বীকার করেন মোশারফ হোসেন ও তার পিতা মুজিবর রহমান। কিন্তু শিক্ষকরা টাকা ফেরত না পেয়ে অবশেষে আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার গোলাম রসুল বাদি হয়ে মোশারফ হোসেন ও তার পিতা মুজিবর রহমান, বোন নাহারের নামে ১০নং আগরদাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। মোশারফ ও তার পিতা মুজিবর রহমান, বোন নাহারের নামে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালত থেকে ২বার হাজিরা নোটিশ প্রদান করলেও প্রতারক মোশারফ ও তার পিতা মুজিবর রহমান, বোন নাহার ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালতে হাজির হননি। মাদ্রাসার এক শিক্ষক জানান, মোশারফ হোসেনকে বিশ^াস করে ব্যাংকের একাউন্ট ও বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে মোশারফ হোসেনকে ২১ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তবে মোশারফ হোসেন তার নিজের বাড়িতে থাকেন না, সে ঢাকায় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিচয় দিয়ে এবং আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী, ও সচিবদের নাম ভাঙ্গিয়ে আমাদের সাথে প্রতারনা করে টাকা নেওয়াসহ এরকম বহু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ করেন।
এবিষয়ে মোশারফ হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনের সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষকরা।