তালা প্রতিনিধি: তালায় ছেলেদের নামে জমি লিখে না দেয়ায় দু’পুত্র ও ভাই মিলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে অসহায় পিতাকে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জাতপুর গ্রামে। এ ঘটনায় তালা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তালা থানার ওসি মো. মেহেদী রাসেল বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভূক্তভোগি অসহায় পিতা জাতপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের পুত্র শেখ অজিয়ার রহমান জানান, তার ২ পুত্র ও এককন্যা সন্তান রয়েছে। দুই পুত্র পড়ালেখা শেষ করে বর্তমানে চাকরি করছে। তাদের পড়াশুনা করাতে ও চাকরির ব্যবস্থা করতে গিয়ে প্রায় নি:স্ব হয়ে যান তিনি। এক পর্যায়ে তিনি আর্থিক অনটন কাটিয়ে উঠতে তালা সোনালী ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন অজিয়ার রহমান। এক পর্যায়ে তার ছোট ভাই শেখ আজিজুর রহমানের কু-পরামর্শে তার ২পুত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মো. মেহেদী হাসান পিতার ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করবে বলে ২০ শতাংশ জমি লিখে নেয়। কিন্তু অদ্যাবধি তারা সেই বকেয়া ঋণের কোন টাকা পরিশোধ করেনি।
এ বিষয়ে ছেলেদের কাছে জানতে চাইলে ও তাদেরকে বকাঝকা করলে তারা গত ১৭ মে বাড়ি থেকে পিতাকে বের করে দেয়। এরপর থেকে বাড়ির বাইরে সরকারি খাসের জায়গায় একটি কুঁড়েঘর নির্মাণ করে সেখানে একাকী বসবাস করতেন ওজিয়ার রহমান। কিন্তু তাতেও ছোটভাই ও দুই ছেলের রোষানল থেকে তিনি রক্ষা পাননি। সেখান থেকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সকালে ছোটভাই আজিজুর, ছোট পুত্র বর্তমানে সাতক্ষীরা সমবায় অফিসে কর্মরত মেহেদী হাসান ও ১০/১৫ জন ভাড়াটিয়া লোকজন উক্ত ঘর ভেঙে দিন দুপুরে ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে ও বেদম মারপিট করে ওজিয়ার রহমানকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। এসময় ব্যাপক লুটপাট চালায় তারা। এক পর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স যোগে ওজিয়ার রহমানকে খুলনা আদ্-দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে তালা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। এদিকে ছোটভাই ও পুত্র কর্তৃক বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় তালা থানায় একটি অভিযোগ করে ভুক্তভোগি ওজিয়ার রহমান। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তালা থানার ওসি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে তালা থানার ওসি মো. মেহেদী রাসেল বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোন সুরাহা হয়নি।