গত৬ দিন যাবত শিশুটি এখন ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের কাছে রয়েছে। তিনি এখন শিশুটির দেখভাল করছেন। প্রতিদিন মারিয়াকে দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন ইউপি সদস্যের বাড়িতে। বাড়ীতে কোন শাড়ি পরিহিত মহিলা দেখলেই শিশু মারিয়া তার গর্ভধারিনী মায়ের মুখের খোঁজে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকছে।
কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী জেরিন কান্তা বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শিশুটিকে ইউপি সদস্যের হেফাজতে রেখে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি ও দেখভাল করছি। তার জন্য খাদ্য ও পোশাক কিনে দিয়েছি। তার স্বাস্থ্যসেবার খোঁজ নিয়েছি।
জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, বাবা-মা, ভাই-বোনসহ একই পরিবারের ৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করায় এই মুহূর্তে শিশু মারিয়ার কোনও অভিভাবক নেই। যাতে কন্যা শিশু মারিয়া ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, আমি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আপাতত তাকে কলারোয়ার হেলাতলা ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের কাছে রাখা হয়েছে। তবে তার অভিভাবকরা নিতে চাইলে আইনুযায়ী তাদের কাছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে কলারোয়া উপজেলার খলসি গ্রামের একই পরিবারের চার সদস্যকে গলা কেটে হত্যার ঘটনার পর শিশু মারিয়াকে ঘাতকরা নিহত মা ও ভাইবোনের পাশে রেখে চলে যায়। শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক নিহত শাহিনুর রহমান ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি ও মেয়ে তাসনিমকে কলারোয়ার ব্রজবাকসা গ্রামে নানার বাড়িতে দাফন করা হয়। রাতে শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না খাতুন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা (নম্বর-১৪) দায়ের করেন। মামলায় তাৎক্ষনিক কলারোয়া থানা পুলিশ কুল কিনারা করতে না পারায় এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশকে। এরপর নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ১৮ অক্টোবর রবিবার গ্রেফতার নিহতের ভাই রায়হানুল ইসলামকে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে রবিবার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রায়হানুলকে সিআইডি পুলিশ জিজ্ঞাবাদ শুরু করেছে।
এ লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান জানান, হত্যাকাণ্ডটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত। কোন ভাড়াটিয়া কিলার দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতে পারে। এ জন্য একটু ধৈর্যধারন করতে হবে। অধিকতর তদন্ত চলছে। অচিরেই মামলার ক্লু বেরিয়ে আসবে। খুনিদের গ্রেফতার করতে সিআইডি পুলিশ অব্যশই সক্ষম হবে।