ক্রাইমবাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় ফোর মার্ডারের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই রাহানুরের স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানা গেছে। পরিকল্পিতভাবে সে তার বড় ভাই, ভাবি ও ভাইপো-ভাতিজিকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে বলে সূত্রটি জানায়।
কলারোয়ায় নৃশংস ভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে স্বামী, স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েসহ একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সাতক্ষীরায় প্রেস ব্রিফিং করেছে সিআইডি।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিআইডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পড়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন সিআইডি এডিশনাল ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান, সিআইডি পরিদর্শক আক্তার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে সিআইডি তদন্ত দল জানান- পারিবারিক কলহ ও মাদক সংক্রান্ত বাধা নিষেধের জের ধরে দীর্ঘদিন ধরে ছোট ভাই রাহানুর হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করে আসছিলো।
১৫ অক্টোবর রাতে রাহানুর পরিবারের সকল সদস্যকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে প্রথমে বড় ভাই শাহিনুর রহমান, পরবর্তীতে তার ভাবী সাবিনা এবং ভাইপো ও ভাতিজাকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করে। পরবর্তীতে খুনের সকল আলামত ও তার পোশাক পরিচ্ছেদ পরিবর্তন করে পাড়া-প্রতিবেশীদের একত্রিত করে নাটকীয়ভাবে হত্যার ঘটনা ভিন্নদিকে ঘুরিয়ে দিতে জমিজমা ও ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধ সামনে এনে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে।
আলামত সংগ্রহের পরে নিহতের ছোট ভাই রাহানুর ইসলামের হাতের ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে হত্যার আলামত সংগ্রহকারী কিছু পোশাক ও শরীরের বিভিন্নস্থানে রাহানুরের ফিঙ্গার প্রিন্টের মিলে যাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৬অক্টোবর শুক্রবার তাকে হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১০দিনের রিমান্ড চায় সিআইডি।
মামলার শুনানীতে বিজ্ঞ আদালত রাহানুর কে রবিবার ৫দিনের রিমান্ডে দেন। রিমান্ডে থাকা রাহানুরের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকালে সিআইডি’র এডিশনাল ডিআইজি ওমর ফারুক ও সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার আনিচুর রহমানের নেতৃত্বে হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে থাকা নিহত শাহিনুর রহমানের লিজ নেয়া পুকুর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র (বড় দা) ও একটি তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে ৪খুন হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রতিবেশি আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের বাসিন্দা ও শাহিনুরের ঘের কর্মচারি আসাদুলকে গ্রেপ্তার করে। সর্বমোট ৪জন আসামী নৃশংস ও লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর ভোরে সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলশি গ্রামে মাছ ব্যবসায়ী শাহিনুর, তার স্ত্রী ছাবিনা ও পুত্র কন্যাসহ ৪ সদস্যকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন রাতে শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না খাতুন বাদি হয়ে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বর্তমানে রাহানুরকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে।কলারোয়ায় ফোর মার্ডারের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই রাহানুরের স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানা গেছে। পরিকল্পিতভাবে সে তার বড় ভাই, ভাবি ও ভাইপো-ভাতিজিকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে বলে সূত্রটি জানায়।