শীতকালীন সবজি চাষে লাভবান চাষিরা

ট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে এবার শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। আর নায্য দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরাও। যদিও নভেম্বরের শেষ দিকে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজির কিছুটা ক্ষতি হলেও ভালো ফলন হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে এখন লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন তারা।
স্থানীয় বাজারে দেখা যায়, পাইকারি বাজরে মুলা প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশী শিম ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ১০, ২০ বা ২৫ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, টমেটোসহ অন্যান্য সবজি এখনো পাইকারি বাজারে আসতে শুরু করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই পাইকারি বাজারে আসতে শুরু করবে।
সূত্র জানায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে সবজি বিক্রি হচ্ছে বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ধনে পাতা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অপর দিকে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১০০ টাকা। একইভাবে শিম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ টাকা এবং বরবটি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক আকতারুজ্জামান জানান, গত বছর জেলায় প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ হয়েছে। এ বছর ইতোমধ্যে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ হয়েছে এবং আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে শাকসবজি চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাকা আমন ধান প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ কাটা হয়েছে। ধান কাটা শেষ হলেই এসব জমিতে অধিকাংশ চাষিরা শাকসবজি চাষ করবেন।
জানা গেছে, এ বছর দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রাম জেলাজুড়ে গ্রীষ্মকালেও শীতকালীন শাকসবজিতে ভরপুর ছিল বাজার। যে কারণে মহামারী করোনাভাইরাসকে ছাপিয়ে রমজানে এসে ২০ টাকার বেগুন এক লাফে ৮০ টাকায় উঠে যায়। একই সময়ে ৭ টাকার টমেটো ২০ টাকায় এবং ২০ টাকার মুলা ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। এ কারণে বছরজুড়ে শাকসবজির চাহিদা বেশি থাকায় উৎপাদিত শাকসবজির দামে খুশি ছিল না চাষিরা।
সূত্র জানায়, শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হয়ে মার্চের মাঝামাঝিতে এসে গ্রীষ্মকালীন সবজির মৌসুম শুরু হলেও চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ওই সময়ে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন সবজি বিশেষ করে মুলা, বেগুন, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বরবটি ছিল।
চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানায়, গত বছর জেলায় ২৭ হাজার ৭৬ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে এবং চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত শাকসবজি উৎপাদন হয়েছে পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ২৩৫ টন। অপর দিকে জেলায় গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে এবং শাকসবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলায় শীত, বর্ষা বা হেমন্তসহ পুরো বছরজুড়ে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি বা গোলআলু উৎপাদন হলেও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গোলআলু, টমেটো, শালগম, পটোল, কাঁচা মরিচ, শুকনো মরিচ, ফুলকপি বাঁধাকপি এনে চট্টগ্রামের সবজির ঘাটতি মোকাবেলা করা হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম জেলা থেকে শুধু শিম ও শিমের বীচি দেশের বিভিন্ন এলাকায় অল্পবিস্তর সরবরাহ হয়।

Please follow and like us:

Check Also

আশাশুনির বদরতলা-ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের পরিত্যাক্ত খুটির রড: l দুর্ঘটনার শঙ্কা

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান( আশাশুনি) সাতক্ষীরা।। আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বদরতলা টু ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।