ক্রাইমবাতা রিপোট: জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর পৌনে ৫টার দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য তাদেরকে তুলে দেয় বলে জানান আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাদের দিকে পানি ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
ফলে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাত থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
তবে লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, কে বা কারা শিক্ষক ও পোশাক শ্রমিকদের তাড়িয়ে দিয়েছে তা তারা জানেন না।
এদিন ভোর সোয়া ৬টার দিকে সচিবালয় সড়ক থেকে এগিয়ে প্রেসক্লাব মোড়ে যেতেই দেখা মেলে শতাধিক পুলিশ সদস্যের। সংশ্লিষ্ট এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে আন্দোলনকারীদের পোস্টার, ব্যানার এবং বিভিন্ন কাগজপত্র।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত শাহবাগ থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে গণমাধ্যমকর্মী পরিচয়ে লাঠিপেটার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি এসবের কিছুই তারা জানেন না, দেখেনওনি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তারা এখানে অবস্থান নিয়েছেন।
তোপখানা রোডে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল বহু সংখ্যক শিক্ষক ও পোশাক শ্রমিককে।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন নীলফামারীর একটি স্বতন্ত্র এবতেদিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম। তিনি জানান, ভোরের দিকে হঠাৎ বাঁশির শব্দ ও চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়।
কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, ‘২২ বছরের চাকরিজীবনে বিনাবেতনে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে পড়াশোনা করিয়েছি। এই তার প্রতিদান। বাড়িতে গিয়ে পুলিশের এই অত্যাচারের কথা বলতেও পারব না। এ বড় লজ্জা।’
তার সঙ্গে থাকা অনেক শিক্ষকই অতর্কিত লাঠিচার্জে সরে যেতে বাধ্য হন বলে জানান। অনেকেরই মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা, জরুরি কাগজপত্র হারিয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই স্ব স্ব দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন স্বতন্ত্র এতবেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ২০১৮ প্যানেল প্রত্যাশী, তাজরিন গার্মেন্টস ও এওয়ান গার্মেন্টসে কর্মরত শত শত মানুষ।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ২০১৮ প্যানেল প্রত্যাশী শামীম আহসান জানান, তারা গত ৫৮ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। তাদের কোনো সহিংস কর্মসূচি ছিল না। ভোরবেলার মারধরে বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেতা মারাত্মক চোট পেয়েছেন।
প্যানেলে শিক্ষক শিক্ষক নিয়োগ হবে না বলে কয়েকবার গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।