সুশাসনের ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টিআইবির ১২ দফা সুপারিশ

প্রাণহানি কমানো, দুর্যোগ মোকাবেলার একটি কাঠামোবদ্ধ মডেল প্রস্তুত করা, এবং তা অনেক দেশ কর্তৃক অনুসরণসহ বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় যথেষ্ট সুনাম অর্জন করলেও এখাতে এখনো যথেষ্ট উৎকর্ষ সাধনের সুযোগ আছে এবং এখনই আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। কারণ ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিদ্যমান সুশাসনের ঘাটতির কারণে এখনো বছরে জাতীয় আয়ের প্রায় দুই দশমিক দুই শতাংশ ক্ষতি হয়। এসব ঘাটতি নিরসন করা গেলে দেশের জাতীয় আয়ের বিশাল এই ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়: ঘূর্ণিঝড় আমফানসহ সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্যোগ মোকাবেলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণে ১২ দফা সুপারিশ প্রদান করে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা- নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ইউনিটের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নেওয়াজুল মওলা এবং জলবায়ু অর্থায়নে পলিসি ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার কাজী আবু সালেহ। গবেষক দলের অপর সদস্যরা হলেন জলবায়ু অর্থায়নে পলিসি ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্টের ম্যানেজার মো. মাহ্ফুজুল হক, জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ইউনিটের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রাজু আহমেদ মাসুম এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মু. জাকির হোসেন খান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় আমফানসহ সাম্প্রতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সুশাসনের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ পর্যালোচনা করার উদ্দেশ্যে ২০২০ সালের ১৮মে থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই গবেষণার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হলো সাম্প্রতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সুশাসনের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ পর্যালোচনা করা এবং গবেষণায় প্রাপ্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুপারিশ প্রদান করা। গুণগত পদ্ধতিতে পরিচালিত এই গবেষণায় প্রয়োজন অনুযায়ী সংখ্যাগত তথ্যও ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য, আইন ও নীতি’র প্রতিপালন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সক্ষমতা, অংশগ্রহণ, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সমন্বয়- সুশাসনের এই ৭টি নির্দেশকের আলোকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, সেনডাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তিসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার, এবং দুর্যোগ বিষয়ক জাতীয় আইন, নীতি এবং আদেশাবলী প্রতিপালনে ঘাটতি রয়েছে। সুন্দরবনসহ পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় কয়লা ও এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ স্থাপন, দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি’র সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ এবং ক্ষয়-ক্ষতির প্রতিবেদন প্রণয়ন ও প্রকাশে ঘাটতি, আন্তর্জাতিক উৎস হতে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহে সক্ষমতার ঘাটতিসহ দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যবসা ভিত্তিক ‘বীমা ও বন্ড’ ব্যবস্থার প্রতি নির্ভরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সতর্কবার্তা ঝুঁকিপূর্ণ জনসাধারণের বোধগম্য না করতে পারাসহ স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে দুর্যোগ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে কাঠামোবদ্ধ নির্দেশিকার অনুপস্থিতি যেমন রয়েছে তেমনি দুর্যোগ প্রস্তুতি, সাড়াদান ও পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য উন্মুক্তকরনে (প্রকাশ ও প্রচার) ঘাটতিও রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা-২০১১, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী ২০১৯ সহ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধানে উল্লেখিত সুনির্দিষ্ট নির্দেশাবলী প্রতিপালনে ব্যত্যয় হয়েছে।

গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পূর্বে সংঘটিত দুর্যোগসহ সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো দুর্গম এলাকায় দুর্যোগের পূর্বাভাস সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ ও সতর্কতামূলক বার্তা প্রচারসহ আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে হট লাইনের নম্বর প্রচার করা হয় নি; স্থানীয়ভাবে ত্রাণ ও সুবিধাভোগীর তালিকা এবং মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভাগ ও জেলা ভিত্তিক তদারকি প্রতিবেদন করার দায়িত্ব থাকলেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয় নি।

জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামো চিহ্নিত করা, দুর্যোগের আগেই ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামো মেরামত এবং প্রকৃত ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে যেমন ঘাটতি ছিলো, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো দ্রুত মেরামত করা হয় নি। রাজনৈতিক বিবেচনায় তহবিল বরাদ্দের কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে কম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নিয়মিত মেরামতের ঘাটতির করণে বাঁধের মোট ৮৪টি পয়েন্ট ভাঙ্গাসহ ২৩৩ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা মেরামতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে দুর্গত এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি আমফান আঘাত হানার ৬ মাস পরেও সাতক্ষীরার আশাশুনিতে বাঁধ সংস্কার না করায় ঘর-বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ গৃহহীন থেকেছে।

এছাড়া দুর্যোগ বিষয়ক মহড়ার আয়োজন, যথাযথভাবে ত্রাণের চাহিদা নিরূপণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী শনাক্ত ও নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি ছিলো। জমির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষয়-ক্ষতি বিবেচনায় না নেয়ায় শুধুমাত্র উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঘূর্র্ণিঝড় আমফান পরবর্তী প্রথম বছরান্তে কৃষিতে প্রাক্কলিত ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় ২,০৩৫ কোটি টাকা এবং আগামী দুই থেকে তিন বছর প্রায় ৬১ হাজার ৬০২ হেক্টর জমি ব্যবহার অনুপযোগী থাকার ঝুঁকি রয়েছে।

গবেষণায় পূর্ববর্তী দুর্যোগসমূহের মত আমফানেও দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা, অংশগ্রহণ ও সমন্বয়ে ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। সক্ষমতার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রচার পদ্ধতি আধুনিকায়নসহ সতর্কবার্তা সাধারণ জনগণের জন্য বোধগম্যভাবে প্রচার করতে না পারা, চাহিদা অনুযায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের নির্মাণ ও প্রস্তুতে ঘাটতি, স্থানীয় পর্যায়ে ত্রাণের চাহিাদসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদে ঘটতি উল্লেখযোগ্য। দুর্যোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর গৃহস্থালী সম্পদের নিরাপত্তা, মূল্যবান সম্পদ নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য পর্যাপ্ত পরিবহন এবং জরুরি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা এবং স্যানিটেশন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও পুনঃনির্মাণে পদক্ষেপের ঘাটতিসমূহ এই গবেষণায় উঠে এসেছে।

এছাড়া দুর্যোগ মোকাবেলায় নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রর স্থান নির্বাচনে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণ না করা, বাঁধ নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে স্থানীয় নাগরিক ও জনগণের অংশগ্রহণে নিশ্চিত না করা, দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারে সমন্বয়ের ঘাটতি, আশ্রয়কেন্দ্রের অভিন্ন নকশা প্রণয়নে ঘাটতি এবং আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্যোগকালীন সুযোগ-সুবিধা এবং ব্যবহার উপযোগীতা নিশ্চিতে ঘাটতির বিষয়গুলো এই গবেষণায় উঠে এসেছে।

এছাড়া স্থানীয় জনপ্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়ের ঘাটতির ফলে দুর্গম এলাকায় যথাসময়ে ত্রাণ না পৌঁছানো, একই সুবিধাভোগীর একাধিকবার ত্রাণ পাওয়াসহ বিবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। যেমন, দুর্যোগ সহনশীল বাঁধ, রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে যেমন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে তেমনি আশ্রয়কেন্দ্র/বাঁধ নির্মাণে রাজনৈতিক ক্ষমতার ব্যবহার ও ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে এবং ত্রাণ বিতরণে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার উদাহরণও এই গবেষণায় উঠে এসেছে।

উল্লেখ্য উপকূলীয় অবকাঠামো নির্মাণ, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত ৪টি প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে ০.২৬-১৪০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্প বাজেটের শতকরা হিসেবে এই আর্থিক ক্ষতির হার ছিলো সর্বনিম্ন ১৪.৩৬ ভাগ হতে সর্বোচ্চ ৭৬.৯২ ভাগ পর্যন্ত।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে কোন কোন দেশ আমাদের মডেল অনুসরণও করছে। কিন্তু ব্যাপক অগ্রগতি স্বত্ত্বেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার, জাতীয় আইন, নীতিমালা এবং আদেশাবলী প্রতিপালনে এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঘাটতি রয়ে গেছে। পাশাপাশ বিদ্যমান গবেষণায় সুশাসনের প্রতিটি নির্দেশকেই ব্যাপক ঘাটতি দেখা গেছে। যেহেতু বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় ভালো করেছে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে যথেষ্ট প্রস্তুতি ও সক্ষমতাও আছে, তাই বিদ্যমান ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ এড়িয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় আরো ভালো করা সম্ভব। আশা করি এই গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল ও সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে এই ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ নিরসনে উদ্যোগী হবেন।’

বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় একধরণের আত্মতুষ্টি আছে মন্তব্য করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই আত্মতুষ্টির কারণে দুর্যোগ মোকাবেলায় দীর্ঘকালীন যে চ্যালেঞ্জগুলো এখনো বিদ্যমান সেগুলো অবহেলা করা হয় এবং চ্যালেঞ্জসমূহ নিরসন করে আরো অগ্রগতির প্রয়াসে ঘাটতি দেখা যায়। তাই আমরা যদি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরো উৎকর্ষ সাধন করতে পারি তাহলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে জাতীয় আয়ের গড়ে ২.২ শতাংশ বাৎসরিক যে বিশাল ক্ষতি হয় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

এই গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল ও তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ঘূর্ণিঝড় আমফানসহ সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণে টিআইবি ১২ দফা সুপারিশ প্রস্তাব করেছে।

উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো-
বিদ্যমান সতর্কবার্তা প্রদান পদ্ধতি হালনাগাদ করে সাধারণ জনগণের বোধগম্য ভাষায় প্রচার করা;

ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলসমূহকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে যথাসময়ে পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা প্রদান করা;

অধিকতর বিপদাপন্ন পরিবার ও এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সাথে পরিচালনা করা;

ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত তথ্য জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য বাতায়নের মাধ্যেমে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা;

আপদকালীন পরিস্থিতি ও দুর্যোগের সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ের কমিটি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের কার্যকর অংশগ্রহণে দুর্যোগ প্রস্তুতি গ্রহণ করা;

নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুবিধা সম্বলিত এবং এলাকা ভিত্তিক পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নিশ্চিত করা;

আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত খাদ্য, পানি, পয়ঃনিস্কাশন ও জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রস্তুতি গ্রহণ এবং তা সরবরাহ নিশ্চিত করা;

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন ‘অংশগ্রহণমূলক’ পদ্ধতিতে দুর্যোগ সহনশীল এবং টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ, সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা;

প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতাসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রমে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অপচয় বন্ধে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা;

প্রকাশিত অনিয়ম-দুর্নীতির স্বচ্ছ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারী ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা;

দুর্যোগের ফলে বাস্তুচ্যূত পরিবারগুলোর জীবিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নতুন জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা তৈরিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা;

এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিশেষ করে নেদারল্যান্ডের মত দেশের পানি ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে উপকূলীয় অঞ্চলকে সুরক্ষার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা; ইত্যাদি। -বিজ্ঞপ্তি

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।