অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চাচাতো ভাইকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :  চাচাতো ভাই কর্তৃক অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চক্রান্ত করে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কান্না জড়িত কণ্ঠে এ দাবি জানান একমাত্র সন্তান হারা মাতা বৃদ্ধা খাদিজা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার কন্যা মারিয়া ও ছেলে মুরাদের জন্মের কয়েকবছর পর আমার স্বামী আনুমানিক ২৫/৩০ বছর পূর্বে মারা যান। সে সময় দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অন্য স্বামীর ঘরে না গিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে, মানুষের কাছ থেকে সাহায্য তুলে দুই সন্তানকে মানুষ করি। সন্তানদের সুখের জন্য আমি বিগত ৩ বছর পূর্বে সৌদী আরবে কাজ করতে যাই। আমার একমাত্র পুত্র মুরাদ ঢাকার একটি বেসরকারি গার্মেন্টসে চাকুরি করত। তারই একাউন্টে আমি টাকা পাঠাতাম। ঢাকার গাজীপুরের বাসায় আমার পুত্রের সাথে আমার দেবর আজহারুল ইসলামের পুত্র (মুরাদের আপোন চাচাতো ভাই) সন্ত্রাসী প্রকৃতির বাধনও থাকতো। পরসম্পদ লোভী সন্ত্রাসী বাধন গোপনে আমার পুত্রের কাছ থেকে আমার পাঠাতো সমদূয় অর্থসহ তাা উপার্জিত অর্থ হানিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত করতে থাকে। কিন্তু আমার পুত্র মুরাদ অত্যান্ত নিরিহ এবং সহজ সরল প্রকৃতির হওয়ায় বাধনের চক্রান্ত বুঝে উঠতে পারেনি। সু কৌশলে বাধন তারই পূর্ব পরিচিত রবিশাল জেলার বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানরত চরিত্রহীন নিপার সাথে আমার পুত্র মুরাদের বিবাহ প্রদান করে। বিবাহের পর বিভিন্ন কৌশলে নিপা, বাধন ও নিপার ফুফু জনৈক মহিলা ৩ বছর ৮ মাস ধরে মুরাদের একাউন্টে আমার পাঠানো প্রতি মাসে ২২ হাজার টাকা মোট ৯লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। আমার পুত্র বিভিন্ন সময়ে আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় মুরাদকে সরকারি চাকুরি নেওয়ার নামে উক্ত টাকা গুলো হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও মুরাদ আমাকে বলেছিল বাধনের সাথে ওই চরিত্রহীন নিপার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। বাধন বিভিন্ন সময়ে নিপার সাথে কথা বলত। তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলেও আমাকে জানায়। আমি মুরাদকে সাতক্ষীরা ফিরে যেতে বললে সে বলেছিল করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যাবো। কিন্তু ২০২০ সালের রমজানের দুইদিন পূর্বে বাধন আমাকে ফোনে জানায় আমার পুত্র এক্সিডেন্ট করেছে। পরে নিপা জানায় আমার পুত্র গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বাধনের ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৭৬৮ ৫৩১৪২৮। উক্ত নাম্বারে ফোন দিলেও বাধন এখন আর রিসিভ করে না। নিপারও রিসিভ করে না। অথচ বাধন আমার পুত্রের মৃত্যুর তার বসের নিকট পাওয়া টাকা চেয়ে ঝামেলাও করেছিল। আমার কলিজার ধনকে অর্থের লোভে ওই বাধন চরিত্রহীন নিপার সাথে যোগসাজস করে তাকে হত্যা করেছে। আমি তার মৃত্যু খবর শুনে অস্তির হয়ে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি আসার পর জানতে পারি ওই লম্পট সন্ত্রাসী বাধন আমার পুত্রের স্ত্রী নিপাকে বিবাহ করে সংসার করছে। তাদের পূর্ব থেকেই সম্পর্ক ছিলো। পুত্র মুরাদের লাশ ঢাকা থেকে তড়িঘড়ি করে বাড়ি এনে কাউকে না দেখিয়ে তার দাফন সম্পন্ন করে। সে সময় গ্রামবাসী বা কোন আতœীয় স্বজনকে আমার পুত্র মুরাদের লাশ একটি বার দেখতেও দেয়নি তারা। এদিকে বাধন ঢাকায় ছোট একটি কোম্পানিতে চাকুরি করলেও বর্তমানে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় আসার যাওয়ার পথে বাসে না চড়ে বিমানে চলাফেরা করে। অথচ বাধনের পিতা একজন পঙ্গু এবং মাদক ব্যবসায়ী। বর্তমানে টিভি, ফ্রিজ সহ লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যে আসবাবপত্র ব্যবহার করে। আমি একজন পুত্রহারা অসহায় মাতা হিসেবে আমার কলিজার টুকরা সন্তানকে হত্যার সাথে জড়িত চরিত্রহীন মহিলা নিপা ও পর সম্পদলোভী সন্ত্রাসী বাধনকে গ্রেফতার পূর্বক সুষ্ঠু তদন্ত করে আমার পুত্র হত্যার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে আইজিপি মহোদয়সহ সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী খাদিজা বেগম।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।