কলারোয়ায় বিএনপির সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলাম পেয়েছেন ৬ ভোট

  1. আনিছুর রহমান, কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪৬৯টি। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলামের স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীকের নার্গিস সুলতানা পেয়েছেন ১ হাজার ৬২৮ ভোট। আর অপর প্রার্থী বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীকের শেখ শরীফুজ্জামান তুহিন পেয়েছেন ৫০৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। আর নির্বাচনের আগেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরে দাড়ানো দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীকের সাজেদুর রহমান খাঁন চৌধুরী মজনু পেয়েছেন ৮৩ ভোট ও সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলাম পেয়েছেন ৬ ভোট। শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিপুল সংখ্যক ভোটারদের উপস্থিতিতে কলারোয়া পৌরসভার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে প্রার্থীদের নানান অভিযোগও বাড়তে থাকে। বিভিন্ন অভিযোগে সকাল ১০টায় মেয়র প্রার্থী বিএনপি’র ধানের শীষের শেখ শরীফুজ্জামান তুহিন ও বেলা ১১টায় স্বতন্ত্র জগ প্রতীকের নার্গিস সুলতানা পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। একই সময় ২নং ওয়ার্ডের ৩জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩নং ওয়ার্ডের ৩জন কাউন্সিলর প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েও ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী উটপাখি প্রতীকের রফিকুল ইসলাম ও ২নং ওয়ার্ডের পাঞ্জাবি প্রতীকের আসাদুজ্জামান তুহিন বিজয়ী হয়েছেন। এদিকে দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াই কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়। পৌর এলাকার ৯টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিরতীহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। ভোটার ছিলো মোট ২১ হাজার ২৮০জন। মোট ভোট পড়েছে শতকরা ৭৬ ভাগ। বৈধ ভোট ১৫৭০১, বাতিল হয়েছে ৩৮০ ভোট। সকাল থেকেই পৌর এলাকার গোপিনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, তুলশীডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্র সহ প্রায় সকল কেন্দ্রেই নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন পরিলক্ষিত হয়। আর সন্ধ্যায় ভোট গনণাকে কেন্দ্র করে ৭নং ওয়ার্ডে মৃদু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে (তুলশীডাঙ্গা পশ্চিম) বিজয়ী হয়েছেন ডালিম প্রতীকের জিএম শফিউল আলম শফি। তিনি ভোট পেয়েছেন ৫৩২। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব উটপাখি প্রতীকের মফিজুল ইসলাম পেয়েছেন ৪১১ ভোট। অপর প্রার্থী টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের মেহিদী হাসান পেয়েছেন ২৩৯ ভোট ও পানির বোতল প্রতীকের আসাদুজ্জামান পেয়েছেন ১৮৩ভোট। ২নং ওয়ার্ডে (তুলশীডাঙ্গা পূর্ব ও বাজার) বিজয়ী হয়েছেন পাঞ্জাবি প্রতীকের আসাদুজ্জামান তুহিন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৮৩৯। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব পানির বোতল প্রতীকের সাঈদুজ্জামান পেয়েছেন ৬১৮ ভোট। অপর প্রার্থী ডালিম প্রতীকের শেখ বদরুজ্জামান বদি ২৫৩ ভোট, গাজর প্রতীকের আব্দুল হাকিম ৫৪ ভোট, ব্লাক বোর্ড প্রতীকের এসএম কামরুজ্জামান বাবু ২৭ ভোট ও উটপাখি প্রতীকের শেখ রবিউল ইসলাম ৩৭ ভোট পেয়েছেন। ৩নং ওয়ার্ডে (গদখালী) ৬০৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর উটপাখি প্রতীকের রফিকুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব ডালিম প্রতীকের এএসএম এনায়েত খান টুন্টু পেয়েছেন ৫৯৫ ভোট। অপর প্রার্থী পাঞ্জাবি প্রতীকের আসাদ খান ১০৯ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের মুজাহিদুল ইসলাম ১৬৮ ভোট পেয়েছেন। ৪নং ওয়ার্ডে (ঝিকরা উত্তর) ৪৯৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের মেজবাহ উদ্দীন খান লিলু। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব পাঞ্জাবি প্রতীকের মাগফুর রহমান রাজু পেয়েছেন ৪২৭ ভোট। অপর প্রার্থী ডালিম প্রতীকের শরীফুজ্জামান উজ্জ্বল ১০১ ভোট, উটপাখি প্রতীকের আমানুল­াহ আমান ১২৬ ভোট পেয়েছেন। ৫নং ওয়ার্ডে (ঝিকরা দক্ষিণ) ৯৯৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন উটপাখি প্রতীকের শেখ জামিল হোসেন। তার একমাত্র প্রতিদ্ব›িদ্ব ডালিম প্রতীকের সঞ্জয় সাহা পেয়েছেন ৮৯২ ভোট। ৬নং ওয়ার্ডে (গোপিনাথপুর) ৮৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন উটপাখি প্রতীকের আলফাজ উদ্দীন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব ডালিম প্রতীকের আবু জাফর সরদার পেয়েছেন ৮১৯ ভোট। অপর প্রার্থী পানির বোতল প্রতীকের আজহারুল ইসলাম ৩০ ভোট, পাঞ্জাবি প্রতীকের শফিউদ্দীন বিশ্বাস ২৩ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে (মুরারীকাটি দক্ষিণ) ১১৭৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ডালিম প্রতীকের জাহাঙ্গীর হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব উটপাখি প্রতীকের আজিজুর রহমান পেয়েছেন ১০৬১ ভোট। সেখানে পাঞ্জাবি প্রতীকের আরিজুল মোড়ল ৩ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের সাইদুর রহমান মলি­ক ৫১ ভোট পেয়েছেন। ৮নং ওয়ার্ডে (মুরারীকাটি উত্তর) ১০১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন পানির বোতল প্রতীকের শেখ ইমাদুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের মোস্তাফিজুর রহমান পেয়েছেন ৪৬৭ ভোট। অপর প্রার্থী ব্রিজ প্রতীকের গোস্ট চন্দ্র পাল ১২৫ ভোট, পাঞ্জাবি প্রতীকের শেখ আব্দুস সাত্তার ৯০ভোট, উটপাখি প্রতীকের মাহফুজুর রহমান ৫৭ ভোট, ডালিম প্রতীকের আফজাল হোসেন ১৬ ভোট পেয়েছেন। ৯নং ওয়ার্ডে (মির্জাপুর) ৫৯৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ডালিম প্রতীকের আকিমুদ্দিন দফাদার। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব উটপাখি প্রতীকের আব্দুল লতিফ সরদার পেয়েছেন ৪৩৪ ভোট। অপর প্রার্থী পানির বোতল প্রতীকের রুহুল কুদ্দুস ১০৯ ভোট, টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের শওকত হোসেন ৪১ ভোট ও পাঞ্জাবি প্রতীকের মোস্তাফিজুর রহমান ২১ ভোট পেয়েছেন। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হয়েছেন যারা সংরক্ষিত-১ (১, ২ ও ৩নং) ওয়ার্ডে ২৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন টেলিফোন প্রতীকের ফারহানা হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব বলপেন প্রতীকের রেজওয়ানা আক্তার লিলি পেয়েছেন ৯১৫ ভোট। অপর প্রার্থী আনারস প্রতীকের নাজমা বেগম দোস্তি ৫৯৪ ভোট, চশমা প্রতীকের সালমা আক্তার পান্না ৭৮৯ ভোট পেয়েছেন। সংরক্ষিত-২ (৪, ৫ ও ৬নং) ওয়ার্ডে ১৬২৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন জবা ফুল প্রতীকের সন্ধ্যা রাণী বর্মণ। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব আনারস প্রতীকের রেশমা খাতুন পেয়েছেন ১৫৬৭ ভোট। অপর প্রার্থী টেলিফোন প্রতীকের সেলিনা পারভীন ভোট ৫৪৮, চশমা প্রতীকের খালেদা আক্তার ১২১৯ ভোট পেয়েছেন। সংরক্ষিত-৩ (৭, ৮ ও ৯নং) ওয়ার্ডে ২০৭৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের আংটি প্রতীকের দিথী খাতুন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব জবা ফুল প্রতীকের হাসিনা আক্তার পেয়েছেন ১১৮৩ ভোট। অপর প্রার্থী টেলিফোন প্রতীকের জাহানারা খাতুন ৭৬৪ ভোট, আনারস প্রতীকের শাহানাজ খাতুন ৮৬৪ ভোট, চশমা প্রতীকের রুপা খাতুন ৫৮২ ভোট পেয়েছেন। পৌরসভা জুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় বলে জানান এই নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস। তিনি জানান, পৌর এলাকায় ৯জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৯টি ভ্রাম্যমাণ টিম, গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার, স্ট্রাইকিং ফোর্স নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলো।
Please follow and like us:

Check Also

২৮শে এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারেও ক্লাসের পরিকল্পনা

আগামী ২৮শে এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।