পুলিশ সদস্যের ধর্ষণে মা সন্তানের জননি হলো স্কুলছাত্রী

 ফেনী প্রতিনিধি :  ফেনীর ফুলগাজীতে বিয়ের কথা বলে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রী একটি মেয়েসন্তানের জন্ম দিয়েছে।

তার দায়ের করা মামলায় শুক্রবার অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল তৌহিদুল ইসলাম ওরফে শাওন রাঙ্গামাটির শালবাগান পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। শুক্রবার রাঙ্গামাটি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিকালে ফেনীর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

ফুলগাজী থানার ওসি মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা ও প্রধান আসামি গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আদালত, পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, তৌহিদুলের মামার বাড়ি এবং ওই কিশোরীর বাবার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় তাদের মধ্যে পরিচয় ছিল। তৌহিদুল বেড়ানোর কথা বলে কিশোরীকে ফেনী শহরে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই সময় ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে।

পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আরও কয়েকবার কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। ১১ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরী ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়।

ঘটনার পরই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার ফেনীর ফুলগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।

আসামিরা হলেন- ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার তৌহিদুল ইসলাম ওরফে শাওন, তার বাবা আমিনুল ইসলাম, মা শানু ও মামা ফিরোজ আহম্মদ বাবু।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্কুলছাত্রী ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে ২২ ধারায় বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ, ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে কন্যাসন্তানের জন্ম, নবজাতককে গোপনে অন্যত্র দত্তক এবং বর্তমানে পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানোর নানা ঘটনার বর্ণনা দেয়।

ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বর্তমানে তার বয়স ১৫ বছর ৪ মাস বলে উল্লেখ করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, তৌহিদুলের মামা ফিরোজ আহম্মদ চাপে ফেলে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নবজাতক মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিছেন। প্রথমে কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে এর সমাধান করার কথা বললেও পরে তা অস্বীকার করে কিশোরীর পরিবারকে গ্রামে ‘একঘরে’ করে রাখার পরিকল্পনা করেন।

ফুলগাজী থানার ওসি মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের বিরুদ্ধে মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় সব ঘটনার বর্ণনা করেছে। সেই হিসেবে মামলার প্রধান আসামি তৌহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।