বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে আরও একটি বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ ‘বাটাগুর বাসকা’ ২৩টি ডিম পেড়েছে। শনিবার রাত ১০টায় প্রজনন কেন্দ্রে পুকুর পাড়ে বালুর মধ্যে একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ডিম পাড়ে।
ডিমগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে বালুর মধ্যে রাখা হয়েছে। ৬৫ থেকে ৬৭ দিনের মধ্যে এসব ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে বলে জানিয়েছে সুন্দরবন বিভাগ। এনিয়ে এই কেন্দ্রে চলতি প্রজনন মৌসুমে ৪টি বাটাগুর বাসকা প্রজাতির মা কচ্ছপ ৯৬টি ডিম দিল।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রাপ্ত বয়স্ক বাটাগুর বাসকা প্রজাতির ৪টি কচ্ছপের মধ্যে চলতি প্রজনন মৌসুমে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম একটি মা কচ্ছপ ২৭টি ডিম পাড়ে। এরপর ৩ মার্চ রাতে একটি মা কচ্ছপ ২৩টি ডিম পাড়ে, ৫ মার্চ রাতে আরও একটি মা কচ্ছপ ২৩টি ডিম পাড়ে। শনিবার রাত ১০টায় প্রজনন কেন্দ্রে পুকুর পাড়ে বালুর মধ্যে একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ২৩ ডিম পাড়ে।
সুন্দরবনের করমজলের বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির মোবাইল ফোনে জানান, ২০০০ থেকে পৃথিবীতে খুঁজে না পাওয়া বিলুপ্ত প্রজাতির ৮টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ২০০৮ সালে আমাদের দেশের নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকার সন্ধান মেলে। এই ৮টি বাটাগুর বাসকার মধ্যে ছিল ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। ওই বছরই প্রজননের জন্য বাটাগুর বাসকা কচ্ছপগুলো গাজীপুরে নিয়ে যায় বন বিভাগ।
কয়েক বছরে ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৪টি মা কচ্ছপ বাটাগুল বাসকা। সেখানে ভালো সাড়া না পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেয়া ৯৪টি বাচ্চা করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। এই কেন্দ্রে ২০১৭ সালে দু’টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা জন্ম নেয়।
এরপর ২০১৮ সালে দু’টি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা, ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা, ২০২০ সালের ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা জন্ম নেয়। ইতোমধ্যে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে থেকে ২০১৭ সালে ২টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫টি বাটাগুল বাসকা কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করা হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা