নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজারে ইজারাদারের অত্যাচারে এক সপ্তাহ ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে ডিম ব্যবসায়ীরা। টোল বন্ধে অভিযোগ দিয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে ডিম ব্যবসায়ীদের।এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
জানা যায়, সুলতানপুর বড় বাজারের চাঁদনি স্বত্ত্বের পেরিফেরী জায়গায় পট্টিতে যারা ডিম বিক্রয় করবে তাদের কাছ থেকে টোল নেওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত ডিম বিক্রেতারা ডিম ক্রয় করে তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করানোর সময় ভ্যান গাড়ী রাস্তার উপর আটকে জোরপূর্বক তাদের প্রতি ডিমে ২০ পয়সা দিতে হচ্ছে। কোন ক্রেতা ডিম কিনলেও তাদের একইভাবে জোরপূর্বক ২০ পয়সা অবৈধ টোল নিচ্ছে ইজারাদর শেখ ফিরোজ আহমেদ রানার লোকজন। অন্যায়ভাবে টোল বন্ধে পৌরসভার সুলতানপুর বড় বাজার ডিম ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলীসহ ১৩জন স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করলে জেলা প্রশাসক বিষয়টিকে দেখার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী ব্যবসায়ীদের আবেদনটি তার অবগতি ও বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দেন। ইউএনওর চিঠির জবাবে পৌর মেয়র সরেজমিনে পরিদর্শন করে চিঠিতে বলেন, বিধি সম্মতভাবে মূল্য তালিকা অনুযায়ী আদায় কার্যক্রম চলমান। প্রকৃতপক্ষে খামারিরা বাজারে পাইকারী ডিম বিক্রিয় করতে আসলে টোল রেট অনুযায়ী কুড়ি প্রতি ২ টাকা হারে প্রদান করার বিধান আছে এবং বসতি দোকনাদরবৃন্দ প্রতি ৫ টাকা প্রদান প্রদান করবেন। পৌরসভা হাট-বাজার ইজারা ও ব্যবস্থাপনার ম্যানুয়াল অনুযায়ী পৌরসভা হাট-বাজারগুলো একসনা ইজারা প্রদান করা হয়। অন্যায়ভাবে ডিম ব্যবসায়ীদের নিকট হতে ইজার/টোল আদায় করা হচ্চে না, বিধি সম্মতভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে।
ক্রেতা জহরুল কবীর বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সুলতানপুর বড় বাজারের মূল ডিম ব্যবসা বন্ধ আছে। নতুন একজন ডিম ব্যবসা শুরু করেছে। সে ডিমের দাম বেশি নিচ্ছে।
বড়বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মো. কবির বলেন, আমি অনেক বছর ডিম ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু কখনও টোল দিতে হয়নি। বর্তমান ইজারাদার ডিম প্রতি ২০ পয়সা টোল দাবী করছে। না দিলে গাড়ী আটকে দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের মারধর করছে। করোনার কারণে আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। সে কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে আমরা সুুলতানপুর বড় বাজারে ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবসা বন্ধ রেখেছি। গ্রাম থেকে কিনে আনা ৪০ হাজার ডিম আমার ঘরে পড়ে আছে, যেগুলো নষ্টের পথে। আমাদের খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যেতে হবে।
ডিম ব্যবসায়ী ওজিয়ার রহমান খোকন বলেন, আর আগে কখনও টোল দিতে হয়নি, বর্তমান ইাজারাদার গায়ের জোরে টোল আদায় করছে। দিতে না চাইলে রাস্তার মধ্যে ডিম আটকে রাখছে। মালিকানা প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা করি তারপরও পৌরসভার ইজারদারা ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেতে জোরপূর্বক টোল আদায় করছে। ক্রেতাদের ডিম আটকে টাকা আদায় করছে। ইজারাদারের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এক সপ্তাহ আমাদের ব্যবসা বন্ধ রেখেছি। বৃহস্পতিবার পৌর মেয়র ডিম ব্যবসায়ী এবং ইজারাদারদের নিয়ে বসেছিলেন।
তিনি আবার আমাদের জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে বলেন। আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে রেখে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।
ডিম ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, এভাবে খাজনা আদায় করা হলে তাদের পথে বসতে হবে। তারা নিরপেক্ষভাবে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল সুলতানপুর বড় বাজারে ডিম বিক্রেতা ও ক্রেতার কাছ থেকে জোরপূর্বক টোল আদায়ের অভিযোগ এ সংক্রান্ত নিউজ প্রকাশিত হয়।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …