৫০ বছর আগে দাফন করা লাশ অক্ষত! ছবি ভাইরাল

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কবর ভেঙে প্রায় অর্ধশত বছর আগে দাফন করা একটি অক্ষত লাশ উদ্ধার নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। লাশ দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে লাশের ছবিটি।

উদ্ধার করার পর পুনরায় দাফনের আগে দোয়া মিলাদে অংশ নিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছুটে আসেন বহু মানুষ। অক্ষত লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের চরঘূণি এলাকার বড়াগৌরঙ্গ নদী তীরের হাতেম আলী ফকিরের বাড়ির ঘটনা। তবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গল ও বুধবারের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ ও নদী তীরবর্তী এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সেই সঙ্গে নদীভাঙনে উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের চরঘূণি এলাকা বড়াগৌরঙ্গ নদী তীরের হাতেম আলী ফকির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান নদী ভাঙনের কবলে পড়ে।

নদী ভাঙনে ওই এলাকার ফকির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ভেঙে একটি অক্ষত লাশ বেরিয়ে আসে। এ নিয়ে শুক্রবার বিকাল থেকে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অক্ষত লাশ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে দশমিনা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ একনজর দেখার জন্য শুক্রবার থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন ওই এলাকায়।

এ ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় অক্ষত লাশের ছবিটি। বিভিন্ন মানুষ ফেসবুকে ছবিটি আপলোড দিয়ে লাশকে মোমিন বান্দা দাবি করে বিভিন্ন লেখা পোস্ট করেন।

শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় ওই বাড়ির রবিউল ইসলামের সাথে। তিনি  জানান, লাশটি তাদের বাড়ির হাশেম ফকিরের। তার দাবি হাশেম ফকির ৪৫ থেকে ৪৬ বছর আগে মারা গিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, হাশেম ফকির তাদের বাড়ির হাতেম আলী ফকির চিশতিয়ার ভক্ত ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই ছিলেন।

অন্যদিকে ওই এলাকার ৯০ বছরের বৃদ্ধ মো. হাবিবুর রহমান (চন্দন মাস্টার)  জানান, মরহুম আইন উদ্দিনের ছেলে হাশেম ফকির। হাশেম ফকির সত্তরের বন্যার পর মারা গেছেন। হাশেম ফকিরের বাবা আইন উদ্দিন ফকির সত্তরের বন্যার আগে মারা গেছেন। হাশেম ফকিরের দুই ছেলে খালেক ও বারেক। তবে অক্ষত লাশটি হাশেমের কিনা আমি জানি না। ওই অক্ষত লাশটি হাশেমের বাবা আইন উদ্দিনের কিনা সেটাও নিশ্চিত নয় বলে তিনি জানান। তার বক্তব্য অনুযায়ী অক্ষত লাশটির পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

হাশেম ফকিরের ছেলে মো. খালেক জানান, লাশটি তার বাবার। তিনি ১৯৭৫ সালের দিকে মারা গেছেন।

স্থানীয়রা যুগান্তরকে জানান, জৈনপুরী পীর সাহেবের নির্দেশে অক্ষত লাশটির শরীরের কোনো অংশ খুলে না দেখে শুধু মিলাদ দিয়ে শনিবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

রনগোপালদী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম আসাদুল হক নাসির সিকদার জানান, লাশ পাওয়ার খবর শোনার পর তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। অক্ষত লাশটি দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছেন।

দশমিনা কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা রেজাউল করিম জানান, ইমানি ব্যক্তি হলে তাদের একটি পশম পর্যন্ত মাটি খায় না। এরকম প্রমাণ আমরা আগে বহু দেখেছি। এ নিয়ে কোরআন হাদিসেও বলা আছে।

দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-আমিন জানান, অক্ষত লাশ উদ্ধারের খবর শুনেছি। ইসলামের দৃষ্টিতে বললে এমন হতে পারে। আবার বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলে মাটির কারণেও হতে পারে।

Check Also

তালায় ইউপি পরিষদ কক্ষে দুই সাংবাদিকের উপর হামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন

তালা প্রতিনিধি তালার ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদে সাংবাদিক আক্তারুল ইসলাম ও আতাউর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী রমজান আলী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।