পরীমনির ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন নাসির-অমি

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি। গেল মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের রিমান্ডে পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ।

ইতোমধ্যে রিমান্ডে মুখ খুলতে শুরু করেছেন নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি। সেদিন বোট ক্লাবে কি ঘটেছিল- তার পুরো চিত্র তুলে আনার চেষ্টা করছে গোয়েন্দারা। রিমান্ডে তারা বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। পাশাপাশি ক্লাবপাড়ায় বিনোদনের নামে অনৈতিক কাজ ও অপতৎপরতার বিষয়েও খোঁজ রাখছেন গোয়েন্দারা।

বুধবার গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রিমান্ডে তারা মারামারির কথা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি সেই রাতে বোট ক্লাবের যে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে- সেটিও বিশ্লেষণ করে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে বুধবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ বলেন, দুজনেই পরীমনিকে গালে থাপ্পড় মারা ও তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।  এছাড়া সেদিন বোট ক্লাবে কি ঘটেছিল? কার কি ভূমিকা ছিল, সবকিছুই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আছে।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১২টা ২২ মিনিটের সময় ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি থামে। গাড়ির সামনের দরজা থেকে নামেন চিত্রনায়িকা পরীমনি।পেছনের ডান পাশের দরজা দিয়ে বের হন গ্রেফতার হওয়া অমি, পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও তার বোন বনি। ক্লাবের বাইরের ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ক্লাবে ঢোকার সময় পরীমনি কালো টপস, জিন্সের প্যান্ট পরা ছিলেন। বনি লাল টপস, সঙ্গে জিন্সের প্যান্ট এবং জিমি কালো হাতাকাটা গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট পরা ছিলেন। অমির পরনে ছিল সাদা গেঞ্জি ও গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। শুধুমাত্র অমি ছাড়া বাকি সবাই মাস্ক পরে ক্লাবে প্রবেশ করেন।

রিসিপশনের ক্যামেরায় দেখা যায়, চারজন একসঙ্গে ভেতরে ঢুকছেন। তখন রিসিপশন ডেস্কে ছিলেন দুইজন এবং ডেস্কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরও একজন স্টাফ। তাদের দেখে রিসিপশনে থাকা স্টাফরা দাঁড়িয়ে যান। এর দেড় ঘণ্টা পর পরীমনিকে অচেতন অবস্থায় কোলে করে বের হতে দেখা যায় জিমি ও একজন নিরাপত্তা প্রহরীকে। পেছন আসেন অমিও। ক্লাবে অমির কালো গাড়িতে গেলেও পরীমনি ফিরেছেন সাদা রঙের একটি গাড়িতে। এ সময় অমি সাহায্য তো করেনইনি উল্টো শাসিয়েছেন সবাইকে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুন রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় পরীমনি বাদী হয়ে গত সোমবার নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত করে আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এজাহারভুক্ত দুই আসামি ব্যবসায়ী নাসির ও অমিকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছে সাভার থানার পুলিশ। একইসঙ্গে তাদের ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার নাসির, অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ইয়াবা ও মদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় করা মামলায় নাসির ও অমির সাত দিনের রিমান্ড এবং গ্রেফতার তিন নারীকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

Please follow and like us:

Check Also

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বেনজীর আহমেদের সম্পদের তথ্য চাইল দুদক

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।