যে গ্রামের সবাই নামাজি

গ্রামের সবাই অন্য সবার চেয়ে আলাদা। তারা নামাজের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস। সবাই মিলে নামাজ পড়ার জন্য চেষ্টা করে এবং তারা এ ব্যাপারে শতভাগ সফল। তাই গ্রামের সব মানুষই নামাজি। গ্রামের কোনো দোকানে বা বাড়িতে টিভি নেই।
পাকিস্তানের এমন একটি গ্রাম, যেখানে ছোট থেকে বড় সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। ওই গ্রামের কেউ নেশা করেন না। এমনকি সিগারেটও খান না। পুরো গ্রামের দোকানগুলোয় গত ২০ বছর ধরে সিগারেট বিক্রিই করা হয় না। গ্রামে বিয়েশাদি হয় মসজিদে। সাদাসিধেভাবে। এক্ষেত্রে ইসলামী বিধানের পরিপূর্ণ লক্ষ রাখা হয়। বিয়ের মধ্যে গানবাজনা হয় না। কোনো বিয়েতে গানবাজনার ব্যবস্থা করা হলে সামাজিকভাবে ওই বিয়েকে বয়কট করেন সবাই। গ্রামের প্রতিটি কবর মাটির। ইটবালু দিয়ে পাকা করা হয় না। ওই গ্রামে কোনো ভিখারি নেই। সবাই কাজকর্ম করে উপার্জন করেন।
গ্রামটি পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে। জানা যায়, ওই গ্রামে ৯০ বছরের পুরোনো একটি মাদরাসা রয়েছে। যেখান থেকে সাধারণ মানুষকে ইসলামের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। যেকোনো ধরনের সমস্যা নিয়ে লোকজন মাদরাসায় হাজির হন আগে। ওই মাদরাসার প্রভাবেই পুরো গ্রামে এমন পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি করেন, মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ আমীন। তিনি টানা ৪০ বছর ধরে ওই মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন।
হাফেজ আমীন পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম উর্দু পয়েন্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের গ্রামে পরিবর্তন এমনিতেই আসেনি। আমাদের মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ গ্রামে দাওয়াতি কাজ করেছেন। মানুষের মাঝে ইসলামকে সুন্দর ও সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন। ইসলামের বিধান মানার ক্ষেত্রে এ গ্রামের সবাই একপন্থী। যার কারণে সবাইকে এক দিকনির্দেশনায় পথ দেখানো সহজ হয়।
হাফেজ আমীন বলেন, আমাদের গ্রামের এক লোক তার পরিবারের এক সদস্যের বিয়েতে গানবাজনার ব্যবস্থা করলে ওই বিয়েতে গ্রামের কেউ যায়নি। এমনকি তার নিকটাত্মীয়রাও যায়নি। গ্রামের পরিবর্তনের পেছনে সবার এমন নজিরবিহীন একতাও একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের কোনো দোকানে বা বাড়িতে টিভি নেই। হাতেগোনা কয়েকটি বাড়িতে আছে। তবে আমাদের মাদরাসা থেকে তাদের বলে দেয়া আছে- টিভি চালালেও ভলিউম কমিয়ে দেখতে হবে। কোনো পথচারী কোনো বাড়ি থেকে টিভির শব্দ শুনতে পেলে সাথে সাথে তিনি দাঁড়িয়ে যান এবং ওই বাড়িতে গিয়ে লোকজনকে বোঝান। এসব বিষয়ে গ্রামের কেউ কখনো বিতর্ক করেন না বলেও জানান তিনি। বরং দুঃখপ্রকাশ করে অসামাজিক বা অনৈসলামিক কাজ থেকে বিরত থাকেন।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।