বলেছেন, উদ্বিগ্ন হবেন না। কোনো সমস্যা নেই। কাবুল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
ওদিকে যেসব মানুষ কাবুল ত্যাগ করতে চান, তাদেরকে নিরাপদে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তালেবানের সিনিয়র নেতারা। এতে বলা হয়, রোববার ভোরে পূর্বাঞ্চলীয় জালালাবাদ শহর দখল করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কাবুল দখলের মিশন শুরু করে তালেবান যোদ্ধারা। কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থানরত তালেবানের এক নেতা বলেছেন, তার যোদ্ধাদের আজ সব রকম সহিংসতা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে কাবুল ত্যাগ করতে দেয়ার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনায় প্রস্তুত আফগান সরকার
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত আফগান সরকার। রাজধানী কাবুলকে আজ রোববার চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তালেবানরা। তারা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য অপেক্ষা করছে। কর্মকর্তারা মিডিয়াকে এ অবস্থায় বলেছেন, দেশটিতে তালেবানদের দাবি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, তালেবানরা কাবুলের ভিতরে প্রবেশ করেছে। তবে কাতার থেকে তালেবানের মুখপাত্র সুহেইল শাহিন বলেছেন, তাদের যোদ্ধারা এখনও শহরের ভিতরে প্রবেশ করেনি। তারা শহরে ঢোকার গেটগুলোতে অবস্থান করছে। অপেক্ষা করছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য। এদিন আকস্মিকভাবে চিরচেনা কাবুল যেন অচেনা হয়ে যায়। ফাঁকা হয়ে গেছে সড়ক, রাজপথ। মানুষ যার যার ঘরে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের শিরদাঁড়া বেয়ে নামছে হিম আতঙ্ক। শহরে নেই কোনো যানজট।
ওদিকে যেসব মানুষ কাবুল ত্যাগ করতে চান, তাদেরকে নিরাপদে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তালেবানের সিনিয়র নেতারা। এতে বলা হয়, আজ রোববার ভোরে পূর্বাঞ্চলীয় জালালাবাদ শহর দখল করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে কাবুল দখলের মিশন শুরু করেছে তালেবান যোদ্ধারা। কাতারের রাজধানী দোহা’য় অবস্থানরত তালেবানের এক নেতা বলেছেন, তার যোদ্ধাদের আজ সব রকম সহিংসতা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে কাবুল ত্যাগ করতে দেয়ার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য অপেক্ষা, সরকারি অফিস থেকে পালাচ্ছেন কর্মীরা
রাজধানী কাবুলে ঢুকে পড়েছে তালেবান। পুরো রাজধানীতে এখন আতঙ্ক। ভয়ে সরকারি অফিসগুলো থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা। মার্কিন কূটনীতিকদের উদ্ধারে দূতাবাসে উড়ে গেছে হেলিকপ্টার। শক্তি প্রয়োগ করে ক্ষমতা না নিতে যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছেন তালেবান নেতারা। তারা এখন অপেক্ষা করছেন ‘শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের’ জন্য। কাতারে অবস্থানরত তালেবান মুখপাত্র সুহেইল শাহিন অনলাইন আল জাজিরাকে এ কথা বলেছেন। আফগানিস্তানের তিনজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপি’কে বলেছেন, কাবুলের কালাকান, কারাবাগ এবং পাগমানে অবস্থান করছে তালেবান যোদ্ধারা। কয়েকদিনে মার্কিন সেনাবাহিনীর আকাশপথে সাপোর্ট সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই তালেবানরা সরকারি সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করেছে। অনেক ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা পালিয়ে গেছে। তালেবানের এই ত্বরিতগতিতে দখল নিয়ে এরই মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, বছরের পর বছর আফগান সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কোটি কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন এত সহজে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী দুমড়ে মুচড়ে গেল!
তালেবানের বিবৃতি
অনলাইনে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে তালেবানরা। এতে যোদ্ধাদেরকে কাবুলের গেট অতিক্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই শহরটি জোর করে দখল না করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা বলেছেন, পক্ষান্তরে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিরাপদে সম্পন্ন করার বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্য দিয়ে কাবুলের জনগণের জীবন, সম্পদ ও কারো সম্মানহানী ছাড়াই সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আরেকটি বিবৃতি পোস্ট করেছে তারা। তালেবানরা ব্যাংক, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং উদ্যোক্তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে। বলেছে, তালেবানরা তাদের কোনো সম্পদ, অর্থ বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করবে না। কিন্তু এই নিশ্চয়তায় বিশ্বাস রাখতে পারছেন না স্থানীয়রা। তারা বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধার অভিযান শুরু
কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। মার্কিন দু’জন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কূটনীতিকদের বহনকারী গাড়ি দূতাবাস চত্বর ত্যাগ করার পর হেলিকপ্টার অবতরণ করেছে দূতাবাস ভবনে। তিনি বলেছেন, কথামতো এখন আমরা অল্প পরিমাণ মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছি। তবে দূতাবাসের বেশির ভাগ সদস্য কাবুল ত্যাগ করতে প্রস্তুত। এখনও দূতাবাসে কার্যক্রম চলছে। দূতাবাসের ছাদে গাঢ় ধোয়া উঠার পর পরই সেখানে হেলিকপ্টার উপস্থিত হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মার্কিন কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, দূতাবাসের ভিতরে যেসব স্পর্শকাতর ডকুমেন্ট আছে তা ধ্বংস করে দিতে হবে। এ জন্য তা পুড়িয়ে ফেলার কথা বলা হয়। ফলে ওই ধোয়া সেই ডকুমেন্ট ধ্বংসের কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি।
সীমান্ত বন্ধ করেছে পাকিস্তান
আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের তোর্খাম সীমান্ত পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ বলেছেন, ওই সীমান্তে পাকিস্তান অংশের অন্যপাশ তালেবানরা দখল করে নিয়েছে। এরপরই তারা এ ব্যবস্থা নিয়েছেন।