অর্থনীতির মূলধারায় ফিরছে পাট সোনালি আঁশে আবারও সুদিনের স্বপ্ন

মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান : দেশ স্বাধীনের পর পাট ছিল প্রধান অর্থকরী ফসল। নানা কারণে ধীরে ধীরে দেশের অর্থনীতিতে পাটের অবদান কমতে থাকে। লোকসানে পড়ে সরকারি পাটকলগুলো। বন্ধ হতে থাকে একের পর এক পাটকল। তবে বেসরকারি খাতের পাটকলগুলো লাভে রয়েছে। লোকসান বৃত্ত থেকে বের হতে সরকারি পাট কলকে বেসরকারি খাতে লিজ দিচ্ছে সরকার। বিদেশীরা পাট খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফলে পাট হারিয়ে গেছে, এ ধারণা থেকে মানুষ এখন বের হয়ে আসছে। পাট হারিয়ে যায়নি, আবারও পাটের সুদিন ফিরেছে। যার বড় প্রমাণ গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পাট খাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পাট পণ্যের বিস্তার ঘটেছে। পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ফলে পাটের তৈরি বহুমুখী পাট পণ্য উৎপাদন করছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) বন্ধ কারখানাগুলো পুনরায় চালু করে পাটপণ্য উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে সৌদি আরব। ফলে সোনালি আঁশে আবারও সুদিনের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল পাট। রপ্তানি আয়ের অন্যতম খাত এটি। তবে সোনালি আশেঁর দেশেই সংকটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাটকল মালিকরা বলছেন, কাঁচাপাট রপ্তানি, কালোবাজারীদের কাচাঁপাট পাচার বন্ধ ও ফড়িয়াদের কারণে পাটের সংকট হবে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে পাট উৎপাদন কমছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাড়তি দামের কারণে লাভ হওয়ার পরও পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষি। এর পেছনে অন্যতম কারণ পাটের দাম অস্বাভাবিকভাবে ওঠা-নামা, বন্যা, শিলাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় ও পাট পঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় পানির অভাব। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত কয়েক বছর পাট চাষে খরচের তুলনায় দাম পাননি চাষিরা, যাতে পাটচাষ কমেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিরূপ আবহাওয়াও এর অন্যতম কারণ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮২ লাখ ৮৩ হাজার টন পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যেখান থেকে ৭৪ লাখ টন পাট পাওয়া গেছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার টন পাট উৎপাদন হয়েছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮০ লাখ টন পাট উৎপাদিত হয়। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৮৬ লাখ টন কাঁচা পাট উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষি অধিদপ্তর।
জুটমিল মালিকরা বলছেন, সরকার যদি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কাঁচা পাট বিদেশে রপ্তানি বন্ধ না করে এবং কালোবাজারিদের কাঁচা পাট পাচার রোধ ও ফড়িয়াদের নিয়ন্ত্রণ না করে তাহলে এবারও চাহিদার তুলনায় ৫-১০ লাখ বেল পাটের সংকটে পড়বে। এছাড়াও বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি ১৭টি পাটকল যদি পিপিপি’র মাধ্যমে এ বছর নতুন করে চালু হলে ওই পাটকলগুলোরও অনেক পাটের প্রয়োজন হবে। তারা বলছেন, কাঁচা পাট পাচার, সিন্ডিকেট ও ফড়িয়াদের কারণে গত বছর তিনগুণ বেশি দামে ফেব্রিক্স কিনতে হয়েছে, ফলে বেশি দামে পণ্য রপ্তানি করায় আমাদের রপ্তানি ভলিউম কমেছে অনেক। রপ্তানি আয় বাড়লেও তাতে আমাদের লাভ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিউটের তথ্যমতে, ১৯৯০-এর দশকে দেশে পাট হতো ১২ লাখ হেক্টর জমিতে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ লাখ ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে মাত্র ৬ লাখ ৮২ হাজার হেক্টর জমিতে। ফরিদপুর, যশোর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, জামালপুর এবং ঢাকা জেলায় পাট সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের প্রায় ১৩৫টি দেশে ২৮২টি পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়। বিগত বছরের তুলনায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩১ শতাংশ। যদিও তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ০.৪৭ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পাট রপ্তানি হয়েছে ১১৬.১৪ লাখ ডলার, যা টাকার অংকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮ সালের পর এবারই পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, বিগত ১২ বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে চারবার। প্রথমবার ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ১১১.৪৯ কোটি ডলার রপ্তানি আয় হয়। দ্বিতীয়বার ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ১০৩.০৬ কোটি ডলার, তৃতীয়বার ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ১০২.৫৫ কোটি ডলার ও সর্বশেষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১১৬.১৪ কোটি ডলার। কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছে ১৩.৮১ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৬% বেশি। জুট ইয়ার্ন এবং টোয়াইন আগের বছরও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭৫ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৭৯.৯০ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬.৫৪ শতাংশ বেশি। পাটের ব্যাগ ও থলে রপ্তানি বেড়েছে ৩০ শতাংশ, অন্যান্য পণ্য ৫ শতাংশ এবং হাতে বাছাই করা পাটের আঁশ ও স্ট্যাপল ফাইবার রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশ।
বাংলাদেশ থেকে এখন কাঁচা পাটের পাশাপাশি পাটের সুতা, দড়ি, ব্যাগ ও থলে এবং হাতে বাছাই করা আঁশ রপ্তানি করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় পাটের সুতা ও দড়ি পণ্য। পাট দিয়ে তৈরি বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানিও বেড়েছে। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীন জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার গত বছর ২৮২টি বহুমুখী পাটপণ্যের তালিকা প্রণয়ন করে। এসব পণ্যের তালিকায় রয়েছে সব ধরনের ব্যাগ, বাস্কেট, নারী-পুরুষের জুতা-সেন্ডেল, ম্যাটস, জুয়েলারি, স্যুটস, সোয়েটার, খেলনা, বিয়ের সামগ্রী, শাড়ি, জুট ডেনিম, শার্ট, পাঞ্জাবি, কোটি, পাট থেকে উৎপাদিত গার্মেন্ট সামগ্রী ইত্যাদি।
বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেজিইএ) চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম জানান, দেশে যে পরিমাণ পাট উৎপাদন হয়, তা পর্যাপ্ত; কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী পাট কিনে স্টক করার কারণে সংকট তৈরি হয়। বিদেশে বিগ ভলিউমে পাট রপ্তানি হয় কমার্শিয়াল আইটেম, যা হচ্ছে জুট ইয়ার্ন ও জুট ব্যাগ ইত্যাদি। দেশের বাজারেও এই পণ্যের ব্যবহার বেশি। মেজর এই খাতের সঙ্গে এখন পাটের বাই-প্রডাক্টও রপ্তানি হচ্ছে। এই ডাইভারসিফাইড বা ভ্যালু অ্যাডেড পণ্যও রপ্তানি বাড়াতে ভূমিকা রাখছে।
এদিকে এক হাজার মণের বেশি কাঁচাপাট এক মাসের বেশি মজুত করতে পারবেন না পরিবেশক ও আড়তদাররা। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে পাট অধিদপ্তরকে এই নির্দেশনা কার্যকরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিত এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। মন্ত্রী বলেন, লাইসেন্সহীন ব্যবসায়ীকে কাঁচাপাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ করতে দেবে না সরকার। ভেজাপাট ক্রয়-বিক্রয়েও রোধ করা হবে। এসব বিষয়ে পাট অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
পাট উৎপাদন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো বাংলাদেশের পাট বীজের প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ প্রতি বছর ভারত থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। পাট মৌসুম এলেই তাদের বীজ নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়। ভারত থেকে সময়মতো বীজ পাওয়া যায় না। এছাড়া বীজের মান নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানান, দেশে পাটবীজ উৎপাদনের মূল সমস্যা হলো অন্য ফসলের তুলনায় কম লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা চাষ করতে চান না। পাটবীজে কৃষকদের আগ্রহী করতে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছে। সেই জিনোম ব্যবহার করে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চ ফলনশীল পাটবীজ রবি-১ জাত উদ্ভাবন করেছে, যার ফলন ভারতের পাটজাতের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ভাগ বেশি। কৃষক পর্যায়ে এটির চাষ বাড়াতে পারলে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব। পাট বীজের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, কৃষি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ভর্তুকি দিয়ে হলেও পাটবীজের উৎপাদন বাড়াতে হবে। অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকলে সবসময় অনিশ্চয়তায় থাকতে হয়। পাটবীজ রপ্তানির ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ভয়ও থাকে। পাট আঁশ এবং পাটবীজ দুইটি আলাদা ফসল। দেশে মূলত দেশি ও তোষা জাতের পাটের চাষ হয়। বর্তমানে দেশি পাট ১৫ ভাগ ও তোষা পাট ৮৫ ভাগ উৎপন্ন হয়। তোষা পাটবীজের চাহিদার প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ ভারত থেকে আমদানিকরা জেআরও-৫২৪ জাতের মাধ্যমে মেটানো হয়।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (বীজ ও অন্যান্য উপকরণ) ড. সুরজিত সাহা রায় জানান, আগামী ৫ বছরেই পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ। প্রতি বছর ভারত থেকে সাড়ে ৪ হাজার টন বীজ আমদানি করা হয়। আগামী ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ এই ৫ অর্থবছরের মধ্যে দেশে ৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন পাটবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে দেশে আর কোনো পাটবীজ সংকট হবে না; আমদানি নির্ভরতাও থাকবে না।
বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) তথ্যমতে, সারা দেশে ২৯১টি জুট মিল রয়েছে, যার মধ্যে ৫৪টি বন্ধ। এসব মিলে গড়ে ৭৮ লাখ বেল জুট উৎপাদন হয়। দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা ৬৫ লাখ বেল আর বিদেশে রপ্তানি হয় ১৪ লাখ বেল। সংগঠনটির হিসাবমতে, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় রয়েছে ৯৪টি পাটকল, যার মধ্যে ১২টি বন্ধ। বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) আওতায় রয়েছে ১৬৫টি মিল, যার মধ্যে ৪২টি বন্ধ। আর বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) আওতায় রয়েছে ৩২টি।
পাটকলগুলোতে কর্মসংস্থান প্রায় দুই লাখ। বিজেএসএ -এর তথ্যমতে, তাদের আওতায় থাকা মিলগুলোর কর্মসংস্থার প্রায় ৭৫ হাজার, বিজিএমএ-এর আওতায় থাকা মিলে ৬০ হাজার আর বিজেএমসির মিলগুলোতে কর্মসংস্থান প্রায় ২৭ হাজার মানুষের।
১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতির এক আদেশে ব্যক্তিমালিকানাধীন, পরিত্যক্ত ও সাবেক ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের ৭৮টি পাটকল তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনায় বিজেএমসি গঠিত হয়। ১৯৮১ সালে মিলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮২। ১৯৮২ সালের পর ৩৫টি পাটকল বিরাষ্ট্রীয়করণ, ৮টি মিলের পুঁজি প্রত্যাহার ও ১টি পাটকল একীভূত করা হয়। ১৯৯৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের পাটখাত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন সময়ে ১১টি কল বন্ধ, বিক্রি ও একীভূত করা হয়। ২০০২ সালে আদমজী জুট মিলস বন্ধ করা হয়। বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রণাধীনে বর্তমানে পাটকল আছে ৩২টি। সর্বশেষ তিনটি নন-জুট মিলসহ সচল ছিল ২৫টি।
এদিকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) বন্ধ কারখানাগুলো পুনরায় চালু করে পাটপণ্য উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে সৌদি আরব। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসসা ইউসেফ ইসসা আল দুহাআলান এ আগ্রহের কথা জানান।
সৌদি রাষ্ট্রদূত জানান, সৌদি আরব আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। সেজন্য সৌদি আরব বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাটখাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটাতে আগ্রহী। মন্ত্রী সৌদি রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশে বিশ্বের সেরা মানের পাট উৎপাদিত হয় এবং এ পাট থেকে এখন উচ্চমানের ও আকর্ষণীয় বহুমুখী পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। পাটপণ্য সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব। সৌদি আরবে সম্প্রতি পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়াতে সে দেশে বহুমুখী পাটপণ্যের চাহিদা অনেকগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি দেশের তালিকায় অন্যতম অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব। বাংলাদেশও ভবিষ্যতে অধিক পরিমাণে বহুমুখী পাটজাত পণ্য সৌদি আরবে রপ্তানি করতে চায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, একটা সময় আমরা পাট দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম। কিন্তু আমরা সে অবস্থান ধরে রাখতে পারিনি। এখন আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আমাদের পাটের সোনালি আঁশের স্বপ্ন শুরু হয়েছে। এটি আমরা নিশ্চিত করবো।

Please follow and like us:

Check Also

আশাশুনির বদরতলা-ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের পরিত্যাক্ত খুটির রড: l দুর্ঘটনার শঙ্কা

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান( আশাশুনি) সাতক্ষীরা।। আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বদরতলা টু ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।