দখলীকৃত পশ্চিমতীরে বিরল আলোচনায় মিলিত হয়েছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। ১০ বছরের মধ্যে এটাই দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক। অন্যদিকে ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জুনে দায়িত্ব নেন নাফতালি বেনেট। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই প্রথম এমন বৈঠক। সোমবার কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘নিরাপত্তা, বেসামরিক ও অর্থনীতি’ নিয়ে আলোচনার জন্য পশ্চিমতীরের রামাল্লায় পৌঁছেন বেনি গান্টজ। এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনি ৮৫ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ওয়াশিংটন সফর থেকে ফেরার কয়েক ঘন্টার মধ্যে তারা এ বৈঠকে মিলিত হলেন। ওয়াশিংটন সফরকালে নাফতালি বেনেট সাক্ষাত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতেও ওই বৈঠকের কথা বলা হয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে বেনি গান্টজ বলেছেন, ফিলিস্তিনের অর্থনীতি শক্তিশালী করবে এমন পদক্ষেপ নিতে চায় ইসরাইল। এ ছাড়া তারা পশ্চিমতীর এবং গাজার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করেন। এসব বিষয়ে অব্যাহতভাবে আরো যোগাযোগ রাখতে সম্মত হয়েছেন তারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনের বেসামরিক বিষয়ক ইসরাইলি সামরিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ঘাসান আলিয়ান এবং ফিলিস্তিনের সিনিয়র কর্মকর্তা হুসেইন আল শেখ ও গোয়েন্দা প্রধান মাজিদ ফারাজ।
বৈঠকের বিষয়ে টুইটারে নিশ্চিত করেছেন আল শেখ। অন্যদিকে বেনি গান্টজের অফিস থেকে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং আব্বাস দীর্ঘ বৈঠকের পর একান্তে মুখোমুখি আলোচনা করেছেন। এ সময় সেখানে অন্য কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ফিলিস্তিনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সম্পর্ক উন্নয়নকে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যায় তার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন গান্টজ ও আব্বাস। এর মধ্যে রয়েছে, পশ্চিম তীরে কিভাবে ইসরাইলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা যায়, ইসরাইলের ভিতরে বসবাসকারী পরিবারগুলোর পুনর্মিলনী কিভাবে করা যায় এবং ফিলিস্তিনি কর্মীদেরকে ইসরাইলের ভিতরে কিভাবে কাজে অনুমোদন দেয়া যায়।
নাফতালি বেনেট একজন কট্টরপন্থি জাতীয়তাবাদী। তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের তীব্র বিরোধী। এ অবস্থায় এই বৈঠক নিয়ে পশ্চিম জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক নাতাশা ঘোনিম বলছেন, এই আলোচনাকে দেখা হচ্ছে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হওয়া হিসেবে। কিন্তু এই আলোচনা যে শান্তি প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হবে তা নিয়ে গভীর সংশয় আছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন, এমনটা আশা করা যায় না।