বুড়িগোয়ালিনি/ মুন্সিগঞ্জ (শ্যামনগর): সুন্দরবনে জেলে প্রবেশের অনুমতির প্রথম দিনেই বনবিভাগের স্টেশনগুলোতে দালালদের উপস্থিতি লক্ষণীয়ও। পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অধীনে ফরেস্ট স্টেশন অফিসগুলোতে বুধবার ছিল দালালদের তৎপরতা। দীর্ঘ দিন পর জেলেদের সুন্দরবনে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে বনবিভাগ। প্রবেশের প্রথম দিনেই ৪টি স্টেশনে দালালদের আনাগোনা ছিল রীতিমতো চোখে পড়ার মতো।
বনবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দালালরা স্টেশনে প্রবেশ করতে পরবে না। তবে দালালরা বলেছেন, আমাদের কাউকে স্টেশনে প্রবেশ করতে নিষেধ করেনি কেউ। সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশনগুলোতে জেলেদের সকল কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে দালালরা। প্রতি স্টেশনে দালালদের জন্য রয়েছে কাগজপত্র রাখার পৃথক স্থান।
দালালরা বনবিভাগের পোষ্যপুত্র হিসেবে কাজ করে থাকেন বলে স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ। রীতিমত দালালদের কথা না শুনেলে হয়রানির শিকার হতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে বলেন, সুন্দরবনের পাশ নিতে হলে দালালদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। যোগাযোগ না করলে আমারা সময় মতো পাশ পাবো না। বনে প্রবেশ করতে অনেক বেগ পোহাতে হবে। তাই দালালদের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে টাকা একটু বেশি লাগলেও সময় মতো সব কাজ মিটে যায়।
জানা যায়, সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশনে দুই ডজনের মতো দালাল রয়েছে। যার মধ্যে খোদ বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে রয়েছে শহিদুল মোল্লা, জালাল মোল্লা, হাসান সরদার, ইসমাইল সানা, আসাদুল, মোকলেছুর রহমানসহ কয়েকজন। কোবদক স্টেশনে রয়েছে লুৎফর রহমান ও মাসুম। কদমতলা স্টেশনে আছে মতিয়ার রহমান, আজিবার রহমান ও আমজাদ হোসেন। কৈখালী স্টেশনে রয়েছে শহীদুল ইসলাম, মহাসিন গাজী, সালাউদ্দিনসহ কয়েকজন। এসকল দালালদের কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানি হতে হয় জেলেদের।
সুন্দরবনের টহলরত সকল প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়ার নামে জেলেদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এমনকি বনবিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে দালালদের সখ্যতা আছে বলেও জেলেদের সাথে পরিচয় দিয়ে থাকে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এমএ হাসান বলেন, আমি দায়িত্বে আসার পরে সকল স্টেশনে দালাল ঢুকতে নিষেধ করে দিয়েছি। যদি কেউ বনবিভাগের নাম ভাঙিয়ে জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেয়-প্রমান দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া জেলেদের সরাসরি স্টেশনে এসে তাদের প্রয়োজনে কাজ করে যাবে-তাতে কোন বাঁধা নেই।