অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এসকে সিনহা)। আর্থিক কেলেঙ্কারিতে এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো প্রধান বিচারপতি সাজা হলো। এর আগে বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজির আছে কিনা তা বলতে পারছেন না কোনো আইনজীবী।
পলাতক থাকায় এ মামলায় এসকে সিনহার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর আসামিদের আইনজীবী মো. শাহীনুর ইসলাম অনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতির সাজা হওয়াটা যে কোনো বিচারব্যবস্থার জন্য কোনো সুখদায়ক বিষয় না। আমরা যারা এই অঙ্গনে আছি, যারা বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত, যখন প্রধান বিচারপতির সাজা হচ্ছে কোনো মামলাতে, তখন আলটিমেটলি নেতিবাচক প্রভাব বলেই মনে করি।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বের কোথাও প্রধান বিচারপতির আর্থিক কেলেঙ্কারির সাজা হয়েছে কিনা, সেটি জানি না। তবে উন্নত দেশে অনেক সময় দেখেছি— একজন বিচারপতিকে ইমপিচমেন্ট করা হয়েছে। উনি স্কুলজীবনে হাশিশ (এক ধরনের মাদক) খাইতেন। কিন্তু আর্থিক কেলেঙ্কারি বা মানিলন্ডারিংয়ের জন্য দুর্নীতির দায়ে বিশ্বের কোনো দেশে প্রধান বিচারপতির বিচার হয়েছে কিনা বলতে পারব না।
তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের দেশে এর আগে হয়নি, এটি আমরা জানি। পাকিস্তান আমলেও এটি হয়েছে কিনা জানা নেই। ভারতবর্ষে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ইলিগেশন আসছে, কিন্তু মানিলন্ডারিং বা দুর্নীতির জন্য উনার বিরুদ্ধে সাজা হয়েছে, এটি আমার জানা নেই।’
দুদক আইনজীবীর কাছে এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান— এসকে সিনহা যখন (২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর) বিদেশে চলে যান, তখন তিনি বলেছিলেন— দেশের প্রধান বিচারপতি যখন বিচার পায় না, তখন সাধারণ মানুষ কীভাবে বিচার পায়।
জবাবে খুরশিদ আলম বলেন, তত্ত্ব, উপাত্ত ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ রায় দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচার পাননি যখন বলেছিলেন, আমার জানা মতে, তখন তো উনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। উনি কীসের বিচার পাননি তা তো ব্যাখ্যা করেননি। উনি বলেছেন— শুধু বিচার পাননি। উনি কার কাছে বিচার চেয়েছিলেন। কোন আদালতে গিয়েছিলেন। সেটির তো তিনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি। উনি শুধু বলেছেন— প্রধান বিচারপতি বিচার পায়নি। কী বিচার পায়নি, সেটি তো আমরা জানি না।