তালায় সুদিন ফিরেছে পান চাষিদের

নাজমুল হক খান: পাটকেলঘাটা(সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা : সাতক্ষীরায় সুদিন ফিরেছে পান চাষিদের। উৎপাদন খরচেয়ের লাভ বেশি হওয়ায় পান চাষে ঝুকছে চাষিরা। এলাকায় চাষিদের মধ্যে দিন দিন পান চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চাষি ও কৃষি বিভাগের ভাষ্য, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পান চাষে ফলন বেশি হয়। উৎপাদন খরচ বেশি হলেও বছরের অধিকাংশ সময়ই দাম ভালো পাওয়া যায়। তাই অন্যান্য ফসল আবাদ ছেড়ে বর্তমানে চাষিরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালা উপজেলার প্রায় সব ক’টি ইউনিয়নে পান চাষ হয়। এর মধ্যে কুমিরা, খলিষখালী, মাগুরা, তালা, ধানদিয়া, ইসলামকাটি, তালা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। উপজেলার কুমিরা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে অনেক পানের বরজ রয়েছে। প্রতিটি বরজে সারি সারি পানের লতা। প্রতিটি লতার দুই পাশে পান ভরে গেছে, যা দেখে ভালোলাগায় মন জুড়িয়ে যাবে। চাষিরা জানান, পানগাছ লাগানোর ৬ মাস পর থেকেই ফলন পাওয়া যায়। আর একবার লাগানো গাছ থেকে প্রায় ২০-২৫ বছর পানপাতা সংগ্রহ করা যায়। ধানসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় পান চাষে লাভ অনেক বেশি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পানের ফলন ভালো হয়েছে। একই সঙ্গে দাম ভালো থাকায় পানচাষিরাও খুশি।
তালা উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের রাঢ়িপাড়া গ্রামের আজিবর রহমান সরদার খলিষখালী ইউনিয়নের বিনোদ, দোহার গ্রামের আব্দুল আলিম এবং মাগুরা ইউনিয়নের দীনেশ, অমল গাইন জানান, এক বিঘা জমিতে পান চাষ করতে প্রায় এক লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। একবার খরচ করলে বরজ থেকে ২০-২৫ বছর পান সংগ্রহ করা যায়। প্রতি বছর ৫০ থেকে ১ লাখ টাকার পান বিক্রি করা যায়। এ বছর পানের আবাদ খুব ভালো হয়েছে। একপন পান ২০০ থেকে ২২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তারা। স্বল্পসুদে ঋণ পেলে পান চাষ আরও বাড়ানো যেত বলেও জানান তারা। তারা জানান, তাদের উৎপাদিত পান ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। পান চাষ বেশ লাভজনক কিন্তু আম্পানের কারণে পানের বরজ লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ায় চাষিরা বেশ লোকসানে আছেন। পানের দাম পাওয়াতে চাষিরা বেশ খুশি।
তালা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম বলেন, নিয়মিত সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে পান চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এ বছর পানচাষিরা ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পেয়েছেন। আগামীতে কৃষকরা পানচাষে আরও আগ্রহী হবেন বলে তিনি আশা করেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তালার পান দেশের বিভিন্ন বাজারসহ বিদেশেও পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ বছর তালায় ৪২৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। সরকারি সহায়তা ও স্বল্পসুদে ঋণ পেলে আগামীতে এ উপজেলায় পানের চাষ আরও বাড়বে।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।