অভয়নগর প্রতিনিধিঃ
যশোর জেলার অভয়নগর থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যের পরকীয়ায় পথে পথে ঘুরছে স্ত্রী-সন্তান! ঝিনাইদহ জেলার এক পুলিশ সদস্য’র বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরকীয়ায় জড়িয়ে স্ত্রী ও সন্তানের নিচ্ছে না খবর, দিচ্ছে না কোন খরচ। প্রায় ২ বছর কোন খবর না নেওয়ায় অসহায় জীবন যাপন করছে মা ও শিশু সন্তানটি। স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে চাইলে করা হচ্ছে মারধর ও নির্যাতন। এ বিষয় নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অভিযোগ ও আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্য আশিক হোসেন (বিপি নং-৯৫১৪১৬৮৫১১) ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের পান্নু মোল্লার ছেলে। বর্তমানে আশিক যশোরের অভয়নগর থানার পাথালিয়া ক্যাম্পে কর্মরত আছে।
ভুক্তভোগী শামীয়া শারমিন অনি বলেন, ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে আশিকের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। তাদের সংসারে ৩ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। অনি অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে সে মোবাইলে বিভিন্ন নারীদের সাথে কথা বলত। বিষয়টি আমি টের পেয়ে তাকে নিষেধ করলে বকা-বকি ও মারধর করতো। এভাবেই চলছিল তাদের সংসার। এর মাঝে ২ লাখ টাকা যৌতুকও দাবি করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আশিক।
২০১৯ সালে কুষ্টিয়ায় কর্মরত থাকা অবস্থায় যশোর কোতয়ালী থানার শংকরপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ফারহানা ইয়াসমিনের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। ফারহানার ৮ বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। পুর্বে ২ টি স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। ফারহানার সাথে পরকীয়ার বিষয়টি অনি টের পেলে তার উপর শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন। অনিকে কুষ্টিয়া শহরে একটি বাসা ভাড়া করে রেখে আসে আশিক। বন্ধ করে দেয় সংসারের খরচ দেওয়া। এই সুযোগে ফারহানার সাথে পরকীয়া চালিয়ে যায় আশিক। অসহায় অনি তার সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন শুরু করে। এ নিয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের বরাবর অভিযোগও দেন ভুক্তভোগী অনি। বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় মামলা হলে (মামলা নং-১৯/২১) আশিক বদলি হয়ে যশোর চলে যায়। সেখানে গিয়ে অনিকে মারধর ও হুমকি দেওয়া শুরু করে। অনি তার শ্বশুরবাড়ি গেলে তাকে শারিরীক ভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে (মামলা নং-৬৬/২১)। অনি পুলিশ সুপারের বরাবর অভিযোগ দিলেও এখনও তিনি সু-বিচার পাননি। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী শামীয়া শারমিন অনি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আশিক হোসেন বলেন, এসব কথা তো মোবাইলে বলা যাবে না। অনেক সমস্যা আছে সামনা সামনি কথা বললে ভালো হয়।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) মো: ইয়াছির আরাফাত বলেন, আশিকের স্ত্রী অনি পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগের কিছু বিষয়ের সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। মামলা এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। আশাকরি দ্রুতই এর রিপোর্ট পেশ করা হবে।