আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো সংস্কৃতি। সংস্কৃতি মানুষের জীবনকে করে তোলে সুন্দর, সুচারু, পরিশীলিত ও পরিমার্জিত। আর এই সংস্কৃতি যদি হয় সুস্থ ও সবল ধারার, তবে তার জীবনটা হবে সফল। সুস্থ ধারার সংস্কৃতির উৎস হলো ইসলাম। আর এর মূলে রয়েছে কুরআন ও সুন্নাহ। ইসলামী সংস্কৃতি ছাড়া অন্য কোন সংস্কৃতি সুস্থ ধারার সংস্কৃতি নয়। ইসলামী সংস্কৃতি হচ্ছে একটি মানবতাবাদী সংস্কৃতি। অন্যদিকে আধুনিক সংস্কৃতির মূলে রয়েছে ধর্মহীনতা, বেহায়াপনা ও উলঙ্গপনা, এতে নেই কোন মানবিকতা, নৈতিকতা ও শালীনতা। সংস্কৃতি শব্দটার বিশ্লেষণে বিভিন্ন পন্ডিতগণ বিভিন্ন দিনে গড়ে ওঠা আচার আচরণের সমষ্টি হিসাবে অভিহিত করেছেন। কিছু পন্ডিত আবার বিভিন্ন জাতী বা ধর্মের আচারকে বুঝিয়ে থাকেন । আমরা যদি সকল দিক বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাব ইংরেজি নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতিতে কখনই আসতে পারিনি। আমরা একসময় ব্রিটিশ তথা ইংরেজদের আমাদের অভিষাপ মনে করতাম।কারণ তারা ছিলেন আমাদের শাসক। যেমনটা এখন করে থাকি পাকিস্তানিদের উপর।আবার যদি এটা ভাবা হয় ইংরেজি বর্ষ তো প্রতিবছর পালন করা হয় তাহলে এটা কি আমাদের সংস্কৃতি নয়।তাহলে আমি বলবো না কেননা এটা আমাদের স্বীয় সংস্কৃতি বিরোধী। কেননা উপরোক্ত দুটো সংঘায় আমাদের বর্তমান অবস্থান বিরোধী।কাজেই এটা বলা যায় যে যারা এটা পালন করছে তারা আমাদের সংস্কৃতিবিরোধী।
এছাড় হাদীস শরিফে উল্লেখ করা হয়েছে, “হযরত জাবির রাযিয়াল্লাহু আনহু হুযূরপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হতে বলেন বর্ণনা করেন যে, একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রাযি. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমরা ইয়াহুদীদের থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? রাসূল (সা.) বললেন, তোমরাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছ? যে রকম ইয়াহুদী-নাসারাগণ দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি তোমাদের নিকট পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার ধর্ম নিয়ে এসেছি। নবী মুসা (আ.) যদি দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে তাঁকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।” (মুসনাদে আহ্মদ, বাইহাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত ইত্যাদি)
বাঙালি মুসলমানদের জন্য বাংলাদেশের সংবিধানের একটি ধারা শোনানুর যৌক্তিকতা মনে করছি। সংবিধানের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। সে প্রেক্ষিতে দেশে ইংরেজি ভাষাসহ বিভিন্ন উপজাতীয় ভাষার ঊর্ধ্বে যেমন রাষ্ট্রভাষা বাংলার মর্যাদা ও প্রাধান্য তেমনি সংবিধানের ২ নম্বর ধারায় বর্ণিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের কথা স্বীকারের প্রেক্ষিতে অন্যান্য ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীর উপরে ইসলাম ও মুসলমানের মর্যাদা ও প্রাধান্য স্বীকৃত হওয়া আবশ্যকের দাবিদার। তাই, থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো অসাংবিধানিক সাস্কৃতিক আগ্রাসন রোধে কার্যকরী ভূমিকা প্রণিধানযোগ্য। আবেগী আর হুজুগি মুসলিম বাঙালি ভাই-বোনেরা আসুন! এসব ঈমান বিধ্বংসী অপসংস্কৃতি পরিত্যাগ করি, এগিয়ে আসুন, সচেতনরা ভূমিকা রাখুন। পাশাপাশি ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অনেক বেশি হওয়া কর্তব্য মনে করি।