উপজেলা প্রতিনিধি (অভয়নগর) যশোর:
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ধূলগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বারবার অভিযান স্বত্বেও বন্ধ হয়নি অবৈধ কাঠ কয়লার ব্যবসা। ব্যবসাটি অধিক লাভজনক হওয়ায় সামান্য জরিমানা দিয়ে যেকোন মূল্যে তা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে যেন এই সকল সুবিধাবাদিরা।
উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অবাধে চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। এ সব অবৈধ চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি।
স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
উপজেলার দক্ষিণের শেষ ইউনিয়ন সিদ্দিপাশা। ওই ইউনিয়নের ধুলগ্রামে মোঃ ফারুক হাওলাদার, ইউনিয়নের নতুন হাট খেঁয়াঘাটের পাশে হরমুজ সর্দার, বানে ঘাটের পাশে রকশেদ সর্দার, সোনাতলায় হাবিব হাওলাদার স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্র-চ্ছায়ায় চারটি কয়লা তৈরির বিশেষ ধরনের চুল্লি তৈরি করেছে। সেই চুল্লিতে কাঠ পুঁড়িয়ে কয়লা বানানো হয়। কাঠ পোঁড়ানোর সময় নির্গত হয় প্রচুর কালো ধোঁয়া। কাঠ পোড়ানোয় একদিকে বনজ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে, অপর দিকে ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় লোকজন। কয়লা তৈরির এই প্রক্রিয়ায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলছে ।
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব কয়লা তৈরির কারখানায় অবাধে কাঠ পোঁড়ানো হচ্ছে। জনবসতি এলাকা ও ফসলি জমি নষ্ট করে এসব চুল্লি স্থাপন করা হয়েছে। মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন কয়েক’শ মণ কাঠ পোঁড়ানো হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যেখানে চুল্লিতে কাঠ পোঁড়ানো হয়, সেখান থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় আশপাশ আচ্ছন্ন হয়ে থাকে , ধোঁয়ায় চোখ জ্বালা করে,অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। চুল্লী মালিকেরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় সাধারণ মানুষ কিছুই বলতে পারে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে চুল্লির খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেওয়া হয় । প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোঁড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোঁড়ানো হয়। কাঠ পুঁড়ে কয়লা হয়ে গেলে সে গুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে চুল্লি মালিক রাশেদ হাওলাদার বলেন, আমাদের কোন অনুমতির প্রয়োজন পড়েনা, আমাদের ইচ্ছেতেই আমরা কাঠ পুঁড়িয়ে কয়লা তৈরি করি।
এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলার ইউএনও মেজবাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন আমি নতুন যোগদান করেছি, তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।