রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নিদের্শের পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইউক্রেনে হামলা শুরু হয়েছে। ইউক্রেনও রাশিয়ায় পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় উভয় পক্ষের ৯০ সেনাসহ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। পুতিনের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকটি দিক থেকে ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে রাশিয়ান সৈন্যরা।
রাশিয়ান ট্যাঙ্ক এবং ভারী সামরিক অস্ত্রবাহী যানগুলো ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। রাশিয়া অধিভুক্ত ক্রিমিয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়েও ঢুকেছে কিছু যান। আল জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি, এনডিটিবি, বিবিসি।
রাশিয়ান বাহিনীকে প্রতিহত করতে গিয়ে ইউক্রেনের ৪০ জনের বেশি সৈন্য ও ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দফতর সূত্রে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এর আগে অবশ্য ইউক্রেন দাবি করেছে তারা রাশিয়ার ৫০ জন সৈন্যকে নিহত করেছেন। সেই সাথে ধ্বংস করা হয়েছে রাশিয়ার চারটি ট্যাঙ্ক ও ছয়টি যুদ্ধবিমান।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলেনস্কি দেশজুড়ে মার্শাল ল জারি করেছেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বিজয়ের শপথও করেছেন জেলেনস্কি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, পুতিনের নির্দেশের পরপরই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ দেশটির অন্যান্য শহরে নানামুখী হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এতে ইউক্রেনের অন্তত ৪০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির ওডেসসা অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৮ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
অপরদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার অন্তত ৫০ সেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে। রাশিয়ার স্থল সেনারা বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ইউক্রেন ভূখ-ে ঢোকার পরই এমন দাবি করেছে কিয়েভ। এর আগে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার হামলায় তাদের ৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন। আতঙ্কে কিয়েভ ছাড়ছে ইউক্রেনের মানুষ।
খবরে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বে রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়া উপদ্বীপ থেকে রুশ সাঁজোয়াযান ঢুকছে ইউক্রেনে। ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীরা এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া খারকিভ, লুহানস্ক ও শেরনিহিভ এলাকা দিয়েও রাশিয়া স্থলবাহিনীর বহর ইউক্রেনের সীমানায় ঢুকে যাচ্ছে।
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি দেশজুড়ে মার্শাল ল জারি করেছেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বিজয়ের শপথও করেছেন জেলেনস্কি।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর রাশিয়া হামলা শুরু করেছে। তাদের আগ্রাসন রুখতে দেশের মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে বরং রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেওয়ার পর ওই ভিডিও বার্তা দেন জেলেনস্কি।
অপরদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত দেশটির সামরিক সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। পুতিনের সামরিক বাহিনীর হামলায় কিয়েভে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় শহর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাতে শুরু করেছে মানুষ।
নাগরিকদের যুদ্ধে নামার আহ্বান জেলেনস্কির
দেশকে রক্ষায় রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেইনের নাগরিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, যারা অস্ত্র চাইবে তাদের তা দেওয়া হবে।
রাশিয়ার আক্রমণ আসছে ‘সব দিক থেকে’: ইউক্রেইন
স্থল, আকাশ ও সমুদ্র পথে ইউক্রেইনে সর্বাত্মক আক্রমণ চালাচ্ছে রাশিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের কোনো দেশ একই মহাদেশের অন্য দেশে এত বড় আক্রমণ চালায়নি।
রাশিয়ার সামরিক যানগুলো উত্তরে বেলারুশ ও দক্ষিণে ক্রিমিয়া থেকে শুরু করে একাধিক দিক দিয়ে ঢুকছে।পূর্ব দিকের খারকিভ ও লুহানস্ক অঞ্চল দিয়েও রুশ সেনারা প্রবেশ করছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেইন।
দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সামরিক যান নিয়ে এগোনোর আগে রুশ বাহিনী গোলাবর্ষণ করছে।
বন্দরনগরী ওডেসার বাইরে অবস্থিত সামরিক ইউনিট পোডিলস্কে রাশিয়ার হামলায় ৬ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এছাড়া মারিউপোল শহরে একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
জবাব দেবে মিত্ররা: বাইডেন
ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে ‘বিনা উসকানিতে অন্যায্য হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, মিত্ররা এর জবাব দেবে।
তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট (ভ্লাদিমির) পুতিন একটি পরিকল্পিত যুদ্ধ শুরু করেছেন, যা মানুষের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় আর দুর্দশা ডেকে আনবে।
“এই হামলা যে ধ্বংস ডেকে আনবে, যে প্রাণক্ষয়ের কারণ হবে, তার দায় পুরোপুরি রাশিয়াকেই বহন করতে হবে। সেজন্য বিশ্বের কাছে রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে।”
বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর কী কী ব্যবস্থা নেবে,।
ইউরোপের জন্য অন্ধকার দিন: জার্মান চ্যান্সেলর
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের ‘অযৌক্তিক এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসাবে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বার্লিন তার অংশীদার জি-৭, নেটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এ ব্যাপারে পরামর্শ করবে।
“ইউক্রেনের জন্য এটা ভয়ানক এক দিন এবং ইউরোপের জন্য একটি অন্ধকার দিন।”
কিয়েভে বিস্ফোরণের শব্দ
ইউক্রেইনের রাজধানী কিয়েভ থেকে বিবিসির প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দূর থেকে আসা পাঁচ থেকে ছয়টি ‘বিস্ফোরণের’ শব্দ শুনেছেন তিনি। দেশটির বিভিন্ন এলাকা থেকে বিস্ফোরণের খবর আসছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কেই ধরনের খবর দিয়েছে সিএনএন। ইউক্রেইনের স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার কিয়েভের প্রধান বিমানবন্দর বরিস্পিলের কাছে গুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে
ইউক্রেইনীয় সেনাদের অস্ত্র ত্যাগ করার আহ্বান
ইউক্রেইনের দনবাস অঞ্চলে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা দেওয়ার পর দেশটির যুদ্ধাঞ্চলে অবস্থানরত ইউক্রেইনীয় সেনাদের অস্ত্র তাগ করে বাড়ি যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রক্তপাত হলে সেজন্য ‘কিয়েভ দায়ী থাকবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘ন্যায় ও সত্য’ রাশিয়ার পক্ষে। রাশিয়ার সঙ্গে কেউ লড়াই করতে এলে মস্কো ‘তাৎক্ষণিক’ জবাব দেবে।বুধবার পূর্ব ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ‘আগ্রাসন’ প্রতিরোধে মস্কোকে সাহায্যের অনুরোধ জানানোর পর পুতিন এ ঘোষণা দিলেন।
‘আমি সাতটি রকেট গুনেছি’
ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর রাজধানী কিয়েভের কাছ থেকে এক সাংবাদিক সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরে জানিয়েছেন, তিনি সাতটি রকেট বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। কিয়েভের নিকবর্তী একটি সামরিক ঘাঁটির কাছে বসবাস করা এই সাংবাদিকের নাম লুবোভ ভেলিচকো বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ভেলিচকো জানান, ‘প্রচ- বিস্ফোরণের শব্দে’ ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ঘুম ভেঙে যায় তার, কী হচ্ছে কিছু জানতেন না তিনি। “আমি বাইরে বের হয়ে আসি আর আগুনের মতো কিছু দেখলাম।” ভেলিচকো জানান, তার প্রতিবেশীরা প্রচ- ভয় পেয়েছে আর তাদের মধ্যে কয়েকজন কাঁদছিলেন।
আজোভ সাগরে নৌ চলাচল বন্ধ
পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আজোভ সাগরে বাণিজ্যিক নৌযানের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া, তবে নৌ চলাচলের জন্য কৃষ্ণ সাগরের জলপথ খোলা রেখেছে।
বৃহস্পতিবার একাধিক কর্মকর্তা ও শস্য খাতের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ গম রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া মূলত তার কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো থেকেই জাহাজে শস্য সরবরাহ করে। আজোভ সাগরে দেশটির স্বল্প ধারণক্ষমতার একাধিক অগভীর বন্দর আছে।
লিথুয়ানিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি
ইউক্রেইনে রাশিয়ার হামলার পর লিথুয়ানিয়ার দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেদা। তবে বিষয়টি পার্লামেন্টে পাস হতে হবে।
বেলারুশ ও রাশিয়ায় বিপুল সৈন্য সমাবেশের প্রেক্ষিতে নেটো জোটভুক্ত দেশগুলোকে সীমান্তে সৈন্য মোতায়েনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এক সময় মস্কোর শাসনে থাকা লিথুয়ানিয়া এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য, সামরিক জোট নেটোতেও তারা আছে।
দেশটির সীমান্ত রয়েছে বেলারুশের সাথে। বেলারুশ থেকেও ইউক্রেইনে আক্রমণ করছে রাশিয়া। রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ পোল্যান্ড ও লিথুনিয়ার মধ্যবর্তী একটি ছিটমহল।
৫০ রুশ সেনা নিহত, ৪ ট্যাংক ধ্বংস: ইউক্রেইন
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের কাছে একটি রাস্তায় রাশিয়ার চারটি ট্যাংক তারা ধ্বংস করেছে। লুহানস্ক অঞ্চলের একটি শহরের কাছে ৫০ রুশ সেনাকে তারা হত্যা করেছে। এ ছাড়া রাশিয়ান বিমান ভূপাতিত করার দাবিও তারা জানিয়েছে।
ট্যাংক ধ্বংস কিংবা বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর অস্বীকার করেছে রাশিয়া। এদিকে ইউক্রেনের বর্ডার গার্ড সার্ভিস জানিয়েছে, দক্ষিণ খেরসন অঞ্চলে তাদের তিনজন সেনা নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ইউক্রেইনে যুদ্ধ নেটোর উস্কানিতে: ইরান
পশ্চিমা সামরিক জোট নোটোর ‘উস্কানিমূলক কর্মকা-ের কারণে’ ইউক্রেইনে যুদ্ধের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার মিত্র দেশ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান। বৃহস্পতিবার এক টুইটে তার এ মন্তব্য আসে।
‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউক্রেইনে ‘বর্বরোচিত’ হামলার জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘নতুন ও কঠোর’ নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবারের পর এক জরুরি বৈঠকে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন জোটের নেতারা।
ইইউ প্রধান উরসুলা ফন ডার লেইন বলেছেন, “ইউরোপে যুদ্ধ ফেরানোর জন্য দায়ী প্রেসিডেন্ট পুতিন। ইইউ তাকে এর জন্য দায়ী করবে।”
রাশিয়ার প্রধান প্রযুক্তিখাত এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রগুলোকে নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে জানিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমরা রাশিয়ার অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং তার আধুনিকীকরণের ক্ষমতা দুর্বল করব।…আমরা ইইউতে রাশিয়ান সম্পদ জব্দ করব এবং ইউরোপের বাজারে রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর প্রবেশ বন্ধ করব।”
ইউক্রেইনের দুই অঞ্চলকে রাশিয়া স্বীকৃতি দেওয়ার পর বুধবার প্রথম দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় ইইউ। রাশিয়ার শীর্ষ রাজনীতিবিদদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয় সেখানে।
ব্রিটিশ জুনিয়র পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিও বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেবে, তা হবে ‘নজিরবিহীন’।
স্কাই নিউজকে তিনি বলেন, “আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক বন্ধু এবং মিত্রদের সঙ্গে মিলিত হচ্ছি। রাশিয়ার ভয়ঙ্কর এই সিদ্ধান্তের শাস্তি হিসাবে অভূতপূর্ব ও সমন্বিত নিষেধাজ্ঞার আরোপ করতে যাচ্ছি।”
তেলের ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়াল
ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ষোষণার পর বিশ্ব বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মত ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে। সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল রপ্তানি করে রাশিয়া। সেইসঙ্গে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক গ্যাস রাশিয়াতেই উত্তোলন করা হয়। আর ওই গাসের ওপর ইউরোপ অনেকটা নির্ভরশীল।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই চাপের মধ্যে ছিল বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার। সংকট কাটিয়ে উঠতে চাহিদার সঙ্গে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওপেক জোট উৎপাদন বাড়িয়ে সংকট কাটানোর চেষ্টা করছে। তবে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় জ্বালানি তেলের বাজার যে অস্থির হয়ে উঠবে তা আগেই বোঝা যাচ্ছিল। ইউক্রেইন সংকট সেই ‘আগুনে ঘি ঢেলেছে’।
জেপিমরগান চেজ অ্যান্ড কো. বলছে, ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তেলের গড় দাম ১১০ ডলারও ছাড়াতে পারে। পরবর্তী প্রান্তিক পর্যন্ত এই উচ্চ দাম অব্যাহত থাকতে পারে।
ইউক্রেইন থেকে বাংলাদেশিদের পোল্যান্ড হয়ে ফেরানোর পরিকল্পনা
ইউক্রেইনে যুদ্ধাবস্থার মধ্যে পড়া বাংলাদেশিদের পোল্যান্ড হয়ে ফেরানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ইতোমধ্যে ইউক্রেইন থাকা আড়াইশ বাংলাদেশি পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশি আছেন পাঁচশর মত।
“আমরা বলেছিলাম, ইউক্রেইন থেকে যারা চলে আসতে চান, তাদের বের হয়ে আসার জন্য। এক্ষেত্রে কারও যদি কোনো সহায়তার দরকার হয়, ওয়ারশতে আমাদের যে দূতাবাস আছে, তারা সহযোগিতা করবে।”
তিনি বলেন, “আমরা পোল্যান্ডের সরকারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন জানিয়েছিলাম, তারা বলেছেন যেহেতু তাদের কারও পোলিশ ভিসা নেই, ইউক্রেইনে যদি এমন পরিস্থিতি সত্যিকার অর্থে উদ্ভূত হয়, তাহলে তারা ভিসার জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা করবেন। তবে সেটি বাস্তবায়ন শুরু হয়নি।
”আজকে সকালে আমরা পররাষ্ট্র দপ্তরে আবার অ্যাপ্রোচ করেছি, যে আমাদের এই আড়াইশর মত বাংলাদেশি ইউক্রেইন থেকে সীমান্ত পার হয়ে পোল্যান্ডে আসতে চান। তাদেরকে যেন অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হয় এবং আমাদের দূতাবাস তাদের পরিচয় নিশ্চিত করবে।”