আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৯ মার্চ বুধবার এ রিপোর্ট লেখার সময় ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের ১৪তম দিন। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নির্দেশের পর ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনারা। এ অভিযানের অংশ হিসেবে স্থল, আকাশ ও জলপথে ইউক্রেনে হামলা চালানো হচ্ছে। অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো। সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সামরিক অবকাঠামোর বাইরে রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে আবাসিক ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল। ধ্বংস হয়ে গেছে সামরিক-বেসামরিক বহু অবকাঠামো। আর এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সরকারের কর্মকাণ্ড পরিচালনা, বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রদানে সহায়তা করতে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। অব্যাহত হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এদিকে ইতোমধ্যে তৃতীয় দফায় সমঝোতা বৈঠক হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। একদিকে সমঝোতা বৈঠক চলছে, অন্যদিকে ইউক্রেনে রাজধানী দখলে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। একই সময় যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে বক্তব্য দিয়ে রেকর্ড প্রশংসা কুড়ালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে তিনি বিশ্বনেতাদের অনুরোধ জানান।
ইউক্রেনের ২ হাজার ৫৮১ সামরিক স্থাপনা ধ্বংস
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে দেশটির ২ হাজার ৫৮১টি সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে রুশ বাহিনী। স্থানীয় সময় ৮ মার্চ মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর স্পুটনিকের। রাশিয়ার এই সামরিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি রুশ সেনারা ইউক্রেনের ৮৯৭টি ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান, ৯৫টি রকেট নিক্ষেপ ব্যবস্থা, ৩৩৬টি কামান ও মর্টার, ৬৬২টি বিশেষ সামরিক যান এবং ৮৪টি চালকবিহীন বোমারু বিমান ধ্বংস করেছে। রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের হামলায় শুধু মঙ্গলবারেই ইউক্রেনের ৩২টি সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইগর কোনাশেনকভ।
রাশিয়ার ১২ হাজার সেনাকে হত্যা, ৪৮টি যুদ্ধবিমান ও ৮০টি হেলিকপ্টার ধ্বংস
সামরিক অভিযান শুরুর পর রুশ সেনা হতাহতের খবর নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের দাবি, তারা এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ১২ হাজার সেনাকে হত্যা করেছে। এছাড়া রুশ বাহিনীর ৪৮টি যুদ্ধবিমান, ৩০৩টি ট্যাঙ্ক, ৮০টি হেলিকপ্টার এবং হাজারের বেশি সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা, দুই থেকে চার হাজার রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। গত সপ্তাহে অবশ্য নিজেদের ৪৯৮ সেনা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছিল মস্কো। অপরদিকে রুশ হামলায় ইউক্রেনের কতজন সেনা নিহত হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে ইউক্রেনে ৪৭৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। যদিও ইউক্রেনের ভাষ্যমতে, এই সংখ্যা দুই হাজারের বেশি।
জেলেনস্কির রেকর্ড, প্রশংসায় পঞ্চমুখ ব্রিটিশ নেতারা
যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে বক্তব্য দিয়ে রেকর্ড করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এই প্রথম কোনো দেশের নেতা ভাষণ দিলেন। জেলেনস্কি যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন সব আইনপ্রণেতাই ছিলেন নীরব। আর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর একের পর এক আইনপ্রণেতারা জেলেনস্কির প্রশংসা করলেন। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভিডিও বার্তায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন জেলেনস্কি। এ সময় ব্রিটিশ মন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতারা পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন। মূলত হেডফোন ব্যবহার করে জেলেনস্কির বক্তব্যের তর্জমা শুনছিলেন তাঁরা। বক্তব্য শেষ হলে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা জেলনস্কিকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিতর্ক রয়েছে। এই বিতর্কের বিষয় হলো, ইউক্রেনীয়দের জন্য ব্রিটিশ সরকার যথেষ্ট করেছে কি-না এবং রাশিয়ার ওপর যথেষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কি-না। কিন্তু যখনই ইউক্রেনকে সহায়তা ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার বিষয়টি আসে, তখনই যুক্তরাজ্যের বিরোধী ও সরকারি দল এককাট্টা। ৮ মার্চ মঙ্গলবার এর ছাপও পাওয়া গেল পার্লামেন্টে। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা জেলেনস্কির কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করলেন। স্কটল্যান্ডের স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির নেতা ইয়ান ব্ল্যাকফোর্ড বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, আপনাকে স্যালুট জানাই। ইউক্রেন জনগণের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকার।’ তিনি বলেন, ইউক্রেনের শান্তি, ন্যায়বিচার ও সার্বভৌমত্বের বিজয় নিশ্চয়ই হবে।
রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানির ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপের মানে হলো ‘পুতিনের নেতৃত্বকে আমেরিকার জনগণ আরও একটি বড় ধাক্কা দেবে। আমরা পুতিনের যুদ্ধের ভর্তুকির অংশ হবো না। ৮ মার্চ মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞার এই ঘোষণা দেন তিনি। খবর বিবিসি।
এদিকে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি রূপরেখার পরিকল্পনা করেছে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চলতি বছরেই রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ কমাবে। আর ২০৩০ সালের আগে আমদানি বন্ধ করবে। ৮ মার্চ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইইউ জানায়, চলতি বছর রাশিয়ান গ্যাস আমদানি দুই-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনবে। আর ২০৩০ সালের আগে তেল এবং গ্যাস আমদানির সামগ্রিক চাহিদা শেষ করবে।
রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ধর্ষণের অভিযোগ
দখল করা শহরগুলোয় রাশিয়ার সেনারা নারীদের ধর্ষণ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। ৪ মার্চ শুক্রবার তিনি এ অভিযোগ করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। তবে কুলেবা তার অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। রয়টার্সও নিরপেক্ষভাবে তার ওই দাবি যাচাই করতে পারেনি। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চ্যাথাম হাউসের এক অনুষ্ঠানে কুলেবা বলেন, যখন শহরগুলোয় বোমা পড়ে, যখন সৈন্যরা অধিকৃত শহরগুলোয় নারীদের ধর্ষণ করে, তখন আন্তর্জাতিক আইনের দক্ষতা সম্পর্কে কথা বলা কঠিন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যারা এ যুদ্ধকে সম্ভব করেছে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
আগুনে ঘি ঢালবেন না : ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে বেইজিং
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিরোধিতা করলেও বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশ চীন ভিন্ন সুরে কথা বলছে। এ যেন বিশ্ব কূটনীতিতে মস্কো-বেইজিং ভাই-ভাই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাশিয়াকে আগ্রাসন বন্ধে সরাসরি আহ্বান না জানিয়ে উল্টো পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে বেইজিং বলেছে, আগুনে ঘি ঢালবেন না, তা হলে এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে চীন। খবর বিবিসির। ইউক্রেন ইস্যুতে চীন বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা রুশ আগ্রাসনের নিন্দা জানায়নি; আবার রাশিয়াকে অভিনন্দনও জানায়নি। বরং আলোচনা ও মধ্যস্থতার মাধ্যমে সংকট সমাধানের কূটনৈতিক সুরে কথা বলছে বেইজিং। এদিকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে চীন ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দুবার ফোনালাপ হয়েছে।
কিয়েভে সর্বাত্মক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ বাহিনী
রাজধানী কিয়েভে সর্বাত্মক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ বাহিনীÑ এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশটির প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ৭ মার্চ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে ঠিক কবে নাগাদ এই হামলা হতে পারে, সে ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেনি ইউক্রেন। দেশটির সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানান, কিয়েভ শহরে হামলা চালানোর জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম একত্রিত করছে মস্কোর সামরিক বাহিনী। ট্যাঙ্ক ও মোটরচালিত পদাতিক ইউনিটগুলো নিকটবর্তী শহর ইরপিনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
যেসব দেশকে আর বন্ধু মনে করে না রাশিয়া
প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ফলে পশ্চিমা দেশ ও তার মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে সেগুলোর জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে রাশিয়া। যেসব দেশ ও অঞ্চল রাশিয়ার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ নয়, সেসবের একটি তালিকা তৈরি করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই তালিকায় থাকা দেশ ও অঞ্চলগুলো হলোÑ সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, আলবেনিয়া, অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্সি, অ্যাঙ্গুইলা, ব্রিটিশ, জিব্রাল্টার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ দেশÑ আইসল্যান্ড, কানাডা, লিচটেনস্টেইন, মাইক্রোনেশিয়া, মোনাকো, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, স্যান মারিনো, উত্তর মেসিডোনিয়া, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, ইউক্রেন, মন্টিনিগ্রো ও জাপান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে জারি করা ডিক্রি অনুযায়ী, বন্ধুত্বপূর্ণ নয়- তালিকায় থাকা দেশ ও অঞ্চলগুলোর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এখন থেকে রুশ মুদ্রা রুবল ব্যবহার করা হবে। এছাড়া এই দেশ ও অঞ্চলগুলোর কোনো কোম্পানির সঙ্গে যদি রুশ কোনো কোম্পানি বাণিজ্যিক চুক্তি করতে চায়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রুশ কোম্পানিকে অবশ্যই সরকারের অনুমোদন নিতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ডিক্রিতে।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে জেলেনস্কির আবেগঘন ভাষণ
‘আমরা হাল ছেড়ে দেব না। আমরা কিছুতেই হারব না। দেশের জন্য যেকোনো মূল্যে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। যুদ্ধ চালিয়ে যাব বনে-জঙ্গলে, ক্ষেতে-খামারে, পথে-প্রান্তরে, জলে-স্থলে, আকাশে-বাতাসে, নদীর তীর থেকে তীরে। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।’ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে তীব্র আবেগঘন ভাষণে এসব কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং ইউক্রেনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে ভার্চুয়ালি তিনি এই ভাষণ দেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ। জেলেনস্কি বলেন, ‘এ লড়াই চালিয়ে নিতে আমরা সকলের সহায়তা চাই।’ এ সময় রাশিয়াকে সন্ত্রাসী দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান জেলেনস্কি। তিনি মস্কোর ওপর যুক্তরাজ্যকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতেও বলেন। জেলেনস্কির এ ভাষণকে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান।
দেশ ছেড়েছেন ২০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয়
দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেন ছেড়েছেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। ৮ মার্চ মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এক টুইট বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ৭ মার্চ পর্যন্ত ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার মানুষের সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছেছে। ইউএনএইচসিআর বলছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারির পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ২০ লাখ ১১ হাজার ৩১২ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোয় পালিয়েছেন। ইউক্রেনের শরণার্থীদের গ্রহণে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে পোলান্ড। দেশটিতে ৮ মার্চ পর্যন্ত গত ১৩ দিনে ১২ লাখের বেশি মানুষ পাড়ি জমিয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক এই সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাঙ্গেরিতে প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৫০, স্লোভাকিয়ায় ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৫ এবং রাশিয়ায় ৯৯ হাজার ৩০০ ইউক্রেনীয় ঢুকে পড়েছেন। ইউএনএইচসিআর বলেছে, ৬ মার্চ রোববার পর্যন্ত মলদোভা ও রোমানিয়া ৮২ হাজারের বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোয় পালিয়ে আসা ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে ইউরোপের অন্যান্য দেশে চলে গেছেন।
ইউক্রেনকে ৭২৩ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
ইউক্রেন সরকারের কর্মকাণ্ড পরিচালনা, বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রদানে সহায়তা করতে দেশটির জন্য ৭২৩ মিলিয়ন বা ৭২ দশমিক ৩ কোটি ডলারের জরুরি তহবিল বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, জাপান, ডেনমার্ক, লাটভিয়া, লিথুনিয়া এবং আইসল্যান্ড এই প্যাকেজে অর্থ জোগান দিচ্ছে। এছাড়া আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইউক্রেন ও প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য ৩০০ কোটি ডলারের একটি তহবিল ছাড় করার ব্যাপারেও তারা কাজ করছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট সহিংসতা এবং চরম বিপর্যয়ের মুখে ইউক্রেন ও দেশটির জনগণকে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক গ্রুপ দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …