দেশের জাতীয় বাজেটের আকার বেড়েছে বহুগুণ। দেশ উন্নত হচ্ছে, বাড়ছে প্রবৃদ্ধি। শিক্ষায়ও বরাদ্দ বেড়েছে, বে-সরকারী শিক্ষকগণ ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতাসহ কিছু সুযোগ-সুবিধাও পেয়েছেন বর্তমান সরকারের কাছ থেকে। কিন্তু বিগত ১৮ বছর ধরে চালু থাকা বেশিকদের সিকিভাগ উৎসবভাতা শতভাগে উন্নীত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অধিকিন্তু, সরকার ও শিক্ষা প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তির উদাসীনতায় পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক পরিবারের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। কেননা, তাদের উদাসীনতায় বিগত ১৮ বছর ধরে বে-সরকারী শিক্ষকগণ মূল বেতনের মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পাচ্ছেন। যেখানে গেল দু’বছরে শুধু স্বস্থ্যখাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমে, সেখানে মাত্র ৫-৬’শ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের দাবি (পূর্নাঙ্গ উৎসব ভাতা) প্রদানে আর্থিক সক্ষমতার দোহাই দেয়া হচ্ছে সরকারের দায়িত্বশীল মহল থেকে!
যারা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে চায়, যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে দিতে চায়, শিক্ষা বান্ধব নয় বলে প্রচার করতে চায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে, তারাই শিক্ষকদের শতভাগ উৎসবভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতাসহ জাতীয়করণে বড় বাধা বলে মনে করেন বেসরকারী শিক্ষকসমাজ। উল্লেখ্য, বর্তমানে বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীগণ জাতীয় বেতন কাঠামোর মধ্যে থেকেই শতভাগ বেতন-ভাতাদি, সরকারী নিয়মেই বৈশাখী ভাতা ও বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন, তবে উৎসব ভাতার ক্ষেত্রে বৈষম্য কেনো?
বাঙ্গালিজাতির স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সব স্বপ্নের মূলেই কিন্তু শিক্ষা আর শিক্ষিত জনগোষ্ঠী, এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরীর কারিগর হচ্ছেন শিক্ষক, অথচ শিক্ষক সমাজকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করে, তাদের সামাজিক মর্যাদা ভুলুন্ঠিত করে, শিক্ষক সমাজকে সাধারণ জনগণের নিকট উপহাসের পেশা হিসাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কারা শিক্ষকতা পেশাকে উপহাসের পেশা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি শিক্ষকদের সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে শিক্ষকরা বিশ্বমানের শিক্ষাদান করে দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করতে নিজেদের উৎসর্গ করতে পারে।
শিক্ষক সমাজ মুজিব বর্ষে নতুন প্রজন্মের নিকট মুজিব আদর্শ, মুজিব দর্শন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ, সার্বিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত জাতি গঠনে যে ভূমিকা রেখেছে, আর কোন পেশার লোকজন তা কি করতে পেরেছে? না পারেনি বা পারবেও না। তাই শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার (শতভাগ উৎসব ভাতাসহ অন্যান্য দাবি) বাস্তবায়নে সরকারের সুদৃষ্টির প্রত্যাশা জাতি গঠনের কারিগরদের।
বিলাল হোসেন মাহিনী
প্রভাষক, গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা, অভয়নগর, যশোর।
নির্বাহী সম্পাদক, ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র, যশোর।