বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান ইইউ সংসদের

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির নিন্দা জানিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা। ব্রাসেলসে গত ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিত ‘হুমকির মুখে বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন’ বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উপদেষ্টা ভ্যালেরিও বালজামো এবং আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ম্যানেল মসালমির সহায়তায় ইপিপি গ্রুপ এবং পার্লামেন্ট সদস্য ফুলভিও মার্তুসিলো এ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

দ্য ইউরোপীয়ান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর কথা বলতে ইইউ প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের পাশাপাশি এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধি দলটি শ্রম অধিকার নিয়ে আলোচনা করেছিল। ইউরোপ প্রবাসী বাঙালিদের উপস্থিতিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মী এবং রাজনৈতিক কর্মীদের সাথে নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংখ্যালঘুদের অধিকার, গণতন্ত্র ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন।

পার্লামেন্ট সদস্য ফুলভিও মার্তুসিয়েলো বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ উদ্বিগ্ন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাদের ওপর ক্রমাগত হামলা ও নিপীড়ন চলছে। তিনি সব সম্প্রদায়, রাজনৈতিক দল এবং মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান।

পার্লামেন্ট সদস্য গানসিয়া বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে। স্থানীয় ও জাতীয়- উভয় নির্বাচনই অত্যন্ত বিতর্কিত। নির্বাচনে কারচুপি ও সহিংসতা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তা ও স্বার্থের দিক থেকে হুমকির সম্মুখীন। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবশ্যই সাহসিকতা এবং দৃঢ়তার সাথে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানাতে হবে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সংস্কৃতি ও শিক্ষা কমিটির সদস্য অ্যাডিনলফি ২০২১ সালে বাংলাদেশের বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আলোকপাত করে বলেন, এটি সত্যিই উদ্বেগজনক। বাংলাদেশে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশটির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা করা প্রয়োজন।

বেলজিয়াম প্রবাসী মানবাধিকারকর্মী সাইদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতারা ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ নির্বাচনের আহ্বান জানান।

ব্রিটেন প্রবাসী মানবাধিকারকর্মী হুমায়ুন কবির বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেন।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদল কর্তৃক শ্রমিকদের আরো বেশি অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকারের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার বিষয়টির ওপর জোর দেন। বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনে আমীর খসরু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানান।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।