অসম পানিচুক্তির মাধ্যমে গোটা দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে : ডা. শফিক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ভারত ফারাক্কায় বাঁধ দেয়ার ফলে দেশের পুরো উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চল পানি শূন্য হয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তা চুক্তিরও এখনো কোনো সমাধান হয়নি। এখন আবার কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টনের এই অসম চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলো। এভাবে অসম পানিচুক্তির মাধ্যমে গোটা দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে ৭টি এমওইউ চুক্তিসই করে এসেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টন চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ কুশিয়ারা নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলন করতে পারবে। শুকনো মৌসুম নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর বাংলাদেশ অংশে গড়ে ৫ হাজার ২৯৫ কিউসেক থেকে ১৭ হাজার ৬৫০ কিউসেক পানি প্রবাহিত হয়, সে তুলনায় ১৫৩ কিউসেক পানি অতিসামান্য যা প্রবাহিত পানির ১-৩ শতাংশ। দেশের বিশিষ্টজন ও বুদ্ধিজীবী মহল মনে করেন ভারতের সাথে বিচ্ছিন্নভাবে কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টন চুক্তি করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ অন্যায্য চুক্তির ফলে ভারতের সাথে যৌথ নদীগুলো থেকে বাংলাদেশ পানি উত্তোলন করতে গেলে ভারত ভবিষ্যতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। সরকারের তরফে ১৫৩ কিউসেক পানি দিয়ে ১০ হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদ করার কথা বলা হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে বাস্তবে এ পানি দিয়ে ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির বেশি চাষাবাদ করা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সাথে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বন্টন এবং সীমান্ত হত্যা নিয়ে সমস্যাগুলো দীর্ঘ দিনের। শুকনো মৌসুমে ভারত নদীগুলোর পানি আটকিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করে এবং বর্ষায় পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যায় তলিয়ে দেয়। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ গোটা এলাকার মানুষ তা হাড়ে হাড়ে টের পায়। এ সময় অকাল বন্যায় এসব এলাকার ফসল পানিতে ভেসে যায়।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘ভারত ফারাক্কায় বাঁধ দেয়ার ফলে দেশের পুরো উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চল পানি শূন্য হয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তা চুক্তিরও এখনো কোনো সমাধান হয়নি। এখন আবার কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টনের এই অসম চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলো। এভাবে অসম পানিচুক্তির মাধ্যমে গোটা দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে। গত ১০-১২ বছর যাবৎ এ অঞ্চলসহ দেশের মানুষ যে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছেন, সে আন্দোলনের প্রতি সামান্য সম্মান দেখানোর পরিবর্তে ভারতের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই অসম চুক্তি করা হয়েছে। আমরা এ অন্যায্য চুক্তি সম্পাদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বর্তমান সরকারের উচিত অবিলম্বে জাতিসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ আইন ১৯৯৭-এ সই করে পানি বন্টন সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা।’

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

Please follow and like us:

Check Also

২৮শে এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারেও ক্লাসের পরিকল্পনা

আগামী ২৮শে এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।