আবু সাইদ বিশ্বাস রেকর্ড গড়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। দলে থাকা সাবিনা খাতুন ও মাসুরা পারভীনের বাড়ি সাতক্ষীরায় বইছে আনন্দের জোয়ার।
বিকাল থেকে শহরের সবুজবাগে সাবিনাদের বাড়িতে খেলা দেখছেন এলাকার অনেক মানুষ। ফাইনালে গোল না পেলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার গৌরবে গৌরান্বিত সাবিনার পরিবারসহ ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই। অনেক এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
সাবিনার মা মমতাজ বেগম বলেন, ‘সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে- কী যে আনন্দ লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এই দলে আমার মেয়ে রয়েছে এর চেয়ে গর্বের কিছু হতে পারে না। আমার মেয়ের ধ্যান-জ্ঞান ফুটবলকে নিয়ে। টুর্নামেন্টে আট গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ায় আমাদের আনন্দের অন্ত নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওর বাবা যদি বেঁচে থাকলে কী যে খুশি হতো তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়।’
সাবিনার পরিবারের দেখভাল করেন বড় বোন সালমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘সারাদিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছি জয়ের জন্য। যখন দেখলাম বাংলাদেশ ৩-১ গোলে জয়ী হয়েছে তখন মন ভরে গেলো স্বপ্ন সার্থক হয়েছে আমার বোনটার।’
অপরদিকে, সাতক্ষীরা সদরের বিনেরপোতায় নারী ফুটবল দলের অপর খেলোয়াড় মাসুরার বাড়ি। সেখানেও চলছে জয়ের উৎসব। বাবা রজব আলী মাসুরাকে খেলতে দিতে চাইতেন না। কিন্তু স্থানীয় কোচ আকবার আলী ও মা ফাতেমা খাতুনের উৎসাহে জায়গা করে নিয়েছেন মাসুরা।
মাসুরার মা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ছোটবেলা থেকে মাসুরার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি তাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেছিলাম। কোচ আকবর আলীই আমার মেয়েকে এ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য হলো, এতবড় জয় আকবর আলী দেখে যেতে পারলেন না। গত দুই মাস আগে তিনি মারা গেছেন।’
সাতক্ষীরা শহরের শেখ সুমন বলেন, ‘সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এতে আমাদের জেলার দুই মেয়ে খেলেছে। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। তারা ফুটবলে বিপ্লব আনলো।’
সাতক্ষীরা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরিফ হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘নারী ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় গর্ব অনুভব করছি। সাবিনা ও মাসুরার মতো খেলোয়াড়রা সাতক্ষীরার মাটি থেকে আজ জাতীয় দলে শক্ত জায়গা করে নিয়েছে। তাদের এ সফলতার ধারা অব্যাহত থাকুক।’
স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট অর্জন করেছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা।