পুলিশের বিরোধী নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ সংবিধান লংঘন: মির্জা ফখরুল

পুলিশ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে—এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটি সংবিধানের সুস্পষ্ট লংঘন।

বুধবার রাজধানী গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পুলিশ বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার নামে হয়রানি করছে এবং দেশে বিরাজমান ভয়ের পরিস্থিতিকে আরও আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের একজনের কাছ থেকে অন্যজনের তথ্য সংগ্রহেও লিপ্ত রয়েছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠন সমূহের কমিটির তালিকা সংগ্রহ করছে। পুলিশি এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ সংবিধান, ফৌজদারী কার্যবিধি, পুলিশ আইন বা পুলিশ বিধি কিংবা অন্য কোন আইন দ্বারা কোন ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। পুলিশের এ ধরনের কার্যক্রম একদিকে যেমন নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে অন্যদিকে তেমনি নাগরিকের আইনি অধিকার ভোগ করা এবং তার ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান হয় যা সংবিধানের ৩১,৩২ এবং ৪৩ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ৪২ এবং ৪৪ ধারায় একজন নাগরিক যুক্তিসঙ্গত কারণে কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করবে বলে বলা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিত ভিন্ন। ফৌজদারী কার্যবিধির আওতায় যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার এখতিয়ার ধারণ করে বা আমলযোগ্য অপরাধের সম্পৃক্ততার যুক্তিসম্মত কারণ পায় এবং সে ব্যক্তি যদি পালানোর চেষ্টা করে কিংবা তার শান্তিশৃংখলা ভঙ্গ করার কোন আশংকা থাকে বা রেলওয়ে, কেনাল, টেলিগ্রাফ অথবা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা ৪৪ ধারায় উল্লেখিত দণ্ডবিধির কোনো অপরাধ সংঘটনের তথ্য থাকে তবেই কেবল উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা একজন নাগরিকের সহযোগিতা চাইতে পারে, অন্য কোনো কারণে নয়। এই ৪২ এবং ৪৪ ধারা প্রয়োগ করতে গেলেও আগে প্রমাণ করতে হবে যে, নাগরিকের কাছ থেকে কোন তথ্য বা সহযোগিতা চাইতে হলে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হবে এবং সে কারণ অবশ্যই উল্লেখিত আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। চলমান অবস্থায় এটি দৃশ্যত প্রতীয়মান হয় যে, পুলিশ বিএনপিসহ ভিন্নমতালম্বীদের দমনের উদ্দেশে তাদের গণহারে শুধু নাম ঠিকানায় নয়, তাদের পেশা, সন্তান সম্পত্তির বিবরণসহ চৌদ্দ গোষ্ঠীর যাবতীয় বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে যা দেশে বিরাজমান আতঙ্কের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলছে। বিএনপি এই অবস্থার অবসান চায়।

Check Also

দুর্নীতিবাজ, খুনি, স্বার্থান্বেষী মহলকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না: চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ইসলামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।