শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা করতে বিএনপিকে কোনো ধরনের পার্টি করতে হবে না। বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে পার্টি না করে আমাদের সঙ্গে বসুন। আমাদের সঙ্গে চা খেতে খেতে আলোচনা করা যাবে। আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই।’
নওফেল বলেন, ‘সম্মিলিতভাবে নির্বাচনে অংশ নিন। সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। কেউ নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন হবে।’
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যারা দেশের সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করবে, তাদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিহত করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শেখ রাসেলের জন্মদিন গাহি তারুণ্যের জয়গান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশে উপমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে চান, তাহলে নির্বাচনে এসে ভোটের মাধ্যমে সংসদে গিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করুন। অন্যথায় সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের রাজনীতিতে কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের সুযোগ আমরাই করে দিয়েছি।বিশ্বের কোথাও কূটনীতিকরা সে দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ পায় না। বিদেশি কূটনীতিকদের দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি আমরা। ফলে তারা দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পেয়েছে। ’
এ সময় নওফের বলেন, ‘সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জিয়াউর রহমানের আমলের বীজ আজকে গাছে পরিণত হয়েছে, এই আগাছা আমাদের পরিষ্কার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের কতিপয় লোক ধর্মকে ব্যবহার করে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সম্প্রতি এক জনসভায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী রাজনৈতিক মাঠে এসে ধর্মীয় স্লোগান ব্যবহার করেছেন। এরা রাতের বেলা মদের পার্টি করে আর দিনের বেলা ধর্ম ব্যবসা করে।’
মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শেখ রাসেল একটি অদৃশ্য আদর্শিক অবস্থান, যা প্রগতিশীল রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তরুণদের মধ্যে এই চেতনা কাজ করেছে। আমার মতো অনেকেরই রাজনীতির প্রথম হাতেখড়ি হয় শেখ রাসেলের নামে। শেখ রাসেল নামটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। কর্মী বাহিনী ঐতিহাসিক দ্রোহের চেতনা থেকে উজ্জীবিত করেছে। রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাসেল হত্যার বিচারের দাবি থেকে প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তির উত্থান।’
তিনি আরও বলেন, একজন শিশু যে ১০ বছরের; সে তো কোনো রাজনৈতিক সমীকরণের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। সে জায়গা থেকেই কিন্তু ছাত্রলীগ, যুবলীগের সৃষ্টি হয়েছে। আমারও রাজনৈতিক অরিয়েন্টেশন হয়েছে ‘আমরা রাসেল নামে’ একটা সংগঠনের মাধ্যমে। বাংলাদেশে স্বৈরাচারের পতন হতো না যদি সে সময়ে শেখ রাসেলের স্মৃতি নিয়ে তরুণ ও যুব সমাজ পুনরায় উজ্জীবিত না হতো। আমাদের বিপরীত শক্তিও শেখ রাসেল হত্যার বিচারের দাবিতে মাঠে নেমেছিল।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া, মাওলানা এহসান উদ্দিন, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় প্রমুখ।