সাতক্ষীরার সব ইউনিয়নে নারী ও যুবদের জন্য লিংকেজ ক্লাব স্থাপনের দাবি

মীর খায়রুল আলম: নারী ও যুববান্ধব সমাজ গড়তে হলে জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্য ক্লাব বা ইয়ুথ গ্রো সেন্টারের দাবি জানিয়েছেন যুব ও নারীরা। ডিজিটাল তথ্য নির্ভর সেন্টার না থাকায় সঠিক সময়ে সঠিক সেবা নিতে ব্যার্থ হচ্ছেন গ্রাম পর্যায়ের সুবিধাভোগীরা। এতে করে জেলার অনেক যুব ও নারীরা নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ছেন বলেও দাবি করেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে প্রতিবছর সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যুব ও নারীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু যোগ্যতা থাকার শর্তেও একটি অংশ এই উন্নয়নে নিজেদের অংশিদার করতে ব্যার্থ হচ্ছেন কেবলমাত্র তথ্যগত সমস্যার কারনে। যার ফলে সেবা নিতে গিয়ে নানা দূর্ভোগে পড়তে হয় এসব নারী ও যুবদের। অভিযোগ রয়েছে এলাকা ভিত্তিক তথ্য ক্লাব বা ইয়ুথ ক্লাব না তাদের জন্য অসংখ্য সুযোগ থাকলেও সেটির উত্তম ব্যবহার করতে পারেন না তারা। এজন্য সকল ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিংকেজ ক্লাব বা তথ্য নির্ভর ডেস্ক স্থাপন করা গেলে সহজে তথ্য পেয়ে নির্দিষ্ট স্থান থেকে সেবা পেতে সহজ হবে বলেও দাবি জানিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় যুব ও নারীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, শিক্ষা অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী দপ্তর, এলজিইডি, স্বাস্থ্য সেবা, আমার বাড়ি আমার খামার সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান কি সেবা দেয়, কিভাবে তাদের সেবা নিতে হয়, কারা এই সেবা নিতে পারবে সেটি জানেন না অধিকাংশ মানুষ। সামাজিক নিরাপত্তা সহ বিভিন্œ ভাতাভোগীদের ভাতা পেতে কি কি প্রয়োজন কোন অফিসের কাজ কি সেটি না জানার কারনে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। নাগরিকের জন্য সরকার কি কি সেবা চালু রেখেছে সেটির সুনির্দিষ্ট ভাবে কোথাও কোন তথ্য নেই। আর এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতারকের খপ্পরে পড়তে হয় অনেকের।
দেবহাটা উপজেলার যুব সংগঠনের কর্মী মনিরুল ইসলাম (২০) জানান, বর্তমান সময়ের যুব ও নারীরা ইন্টারনেটের অপব্যবহার করছে। তাদের জন্য কোন তথ্য সহায়তা কেন্দ্র না থাকায় তারা নিজেদের যোগ্য করে তুলতে পারে না। বিশেষ করে নারী ও যুবদের জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠানের সাথে লিংকেজ না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তাছাড়া প্রতিবছর বার্ষিক বাজেটে ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি বরাদ্ধ রেখে কোন তথ্য সেন্টার বা লিংকেজ ক্লাব স্থাপন করা যায় তাহলে সহজেই সেবা পাওয়া যাবে।
আশাশুনি উপজেলার মফিজুল ইসলাম (২৫) জানান, আমাদের জন্য সরকার বিভিন্ন সেবা রেখেছে। কিন্তু আমরা সঠিক সময়ে তথ্য না পাওয়ার কারনে সেগুলো ভোগ করতে পারি না। এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার ও পোস্ট অফিসের ই সেন্টারের কর্মীরা তেমন বেশি ভূমিকা রাখতে পারছে না। এতে করে আমরা সেবা নিতে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছি।
শ্যামনগরের দ্বীপ অঞ্চল গাবুরীর বাসিন্দা সাহেব আলী (২৬) জানান, আমরা দ্বীপ এলাকায় বাস করি। ডাঙ্গার মানুষের থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা কম পেয়ে থাকি। আমাদের এলাকা বছরের বিভিন্ন সময় দূর্যোগের কবলে পড়ে। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা লেগেই থাকে। দূর্যোগ কাটিয়ে সোজা হয়ে উঠতে উঠতে আবার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। আমাদের এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানের খুবই সংকট। তার উপর রয়েছে লোনা পানির সমস্যা। আমাদের এলাকার যুব ও নারীদের জন্য যদি কোন তথ্য সহায়তা বা ইয়ুথ ক্লাব করা যায় তাহলে আমরা খুবই উপকৃত হব।
বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের রাইট টু গ্রো প্রকল্পের অ্যাডভোকেসি এন্ড জেন্ডার অফিসার অনিন্দতা বিশ্বাস জানান, আমরা পুষ্টি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে কাজ করছি। কাজের সুবাদে দেখেছি গ্রামের মানুষ তথ্য না পাওয়ার কারনে নানা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে লিংকেজ করার মাধ্যমে তাদেরে এগিয়ে আনা সম্ভব।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।