আগামী নির্বাচনে আ.লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে: কাজী নাবিল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে, এমন আশা প্রকাশ করে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে শেখ হাসিনার প্রতি। আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যে নির্বাচন হবে, বাংলাদেশের মানুষ সেখানে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখবেন। আমরা আবারও দেখতে পাবো—বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। দেখতে পাবো, নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অদম্য উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল এসব কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতে কাজী নাবিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর সফলভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য মো. আবদুল হামিদকে অভিনন্দন জানান।

একাধিক আন্তর্জাতিক উপাধিতে ভূষিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে কাজী নাবিল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একের পর এক যুগান্তকারী অর্থনৈতিক পরিবর্তন হচ্ছে। একের পর এক মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়ে চলেছে। দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি—স্বপ্নের পদ্মা সেতু বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কুচক্রের ষড়যন্ত্র চ্যালেঞ্জ করে বাস্তবায়ন করার জন্য দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের মানুষ হিসেবে ধন্যবাদ জানাই। নড়াইলে মধুমতি সেতু নির্মাণ করে যশোর ও খুলনা এখন দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এর ফলে আমাদের অর্থনীতিতে আমূল ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে ২৪তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ ষষ্ঠ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি এবং দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল শক্তি।’

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছে সেটা বলতে গেলে দিন শেষ হয়ে যাবে, মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু ছাড়াও মেগা প্রকল্প মেট্রোরেল উদ্বোধন হয়েছে। খুব শিগগিরই চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা শেখ হাসিনার ওপর আছে। তার নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মহামারি আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি জীবন ও জীবিকা উভয়ই নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন। কোভিড মোকাবিলায় আমরা বিশ্বে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছি। বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে ফেরত আসতে পেরেছি।’

বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে কাজী নাবিল বলেন, ‘শেখ হাসিনা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন দেখতে পাচ্ছি—তথাকথিত বিরোধী দল, যারা একাত্তর ও পঁচাত্তরের পরাজিত শক্তি ও ওই শক্তির প্রেতাত্মা বিএনপি-জামায়াত জোট এখনও বাংলাদেশকে পেছনের দিকে নিতে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’

কাজী নাবিল বলেন, ‘খালেদা জিয়া হচ্ছেন এমন এক নেত্রী, যিনি এতিমের টাকা মেরে দণ্ডিত হয়েছেন। তার ছেলে দণ্ডিত হয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখানে বসে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যাতে বাংলাদেশকে পেছনের দিতে নিয়ে যাওয়া যায়। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সালে বিএনপির দুঃশাসন মানুষ ভুলে যায়নি। তখন সারা বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তৈরি হয়েছে বাংলাভাই, সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে। একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে। আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন। একের পর এক সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। এমপি আহসানউল্লাহ মাস্টার, শাহ এএমএম কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশ তখন সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। তখন স্লোগান শোনা যেতো—আমরা হবো তালেবান বাংলা হবে আফগান। মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে তাদের সেই বাংলাদেশকে। মানুষ সমর্থন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে। যিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, অবকাঠামো উন্নয়নসহ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্ভুক্তিমূলক সামষ্টিক উন্নয়নের প্রতি মানুষ আস্থা রাখছে।’

সম্প্রতি যশোরে অনুষ্ঠিত জনসভার প্রসঙ্গ টেনে যশোর সদর আসনের এই এমপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি যশোরে স্মরণকালে বৃহত্তর জনসভা করেছেন। এতে ছয় লক্ষাধিক জনসমাগম হয়েছিল। সেখানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—যশোর স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে। যশোর মেডিক্যাল কলেজের ৫০০ শয্যা হাসপাতাল, সেটি নির্মাণ করা হবে। আজকে তার কাছে সেই দাবির কথা ব্যক্ত করছি।’

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।