মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ভাষানচরে স্থানাস্তরে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ সহায়তা চান। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
গুয়েন লুইসকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু খুব শিগগির রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরো উন্নত ভাষানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে। তিনি বলেন, যদি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা সম্পন্ন ভাষানচরে স্থানান্তর করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন। কারণ, এখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভাষানচরে উন্নতমানের জীবনযাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানবিক কারণে বিপূল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হলেও তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় ধরণের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান। আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে।
তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জঙ্গিবাদেও জড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয়েছে। বৈঠকে গুয়েন লুইস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জন ও এসডিজি অর্জনে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ কিছু চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হবে বলে জানান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ অতীতেও বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে।