দেশপ্রেমের কথা বলা, স্বাধীনতার কথা বলা এখন নাকি রাষ্ট্রদ্রোহ: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক ভাইয়েরা আটকে গেছেন। তাঁরা এখন মন খুলে লিখতে পারেন না। এখন কেউ যদি দেশপ্রেমের কথা বলেন, স্বাধীনতার কথা বলেন, অধিকারের কথা বলেন, তাহলে এখন নাকি রাষ্ট্রদ্রোহ হবে।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরে মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। যে আইনে সাংবাদিক ভাইয়েরা আটকে গেছেন। তাঁরা এখন মন খুলে লিখতে পারেন না। এই যে আপনারা ফেসবুক চালান, স্ট্যাটাস দেন, কমেন্টস দেন, লাইক দেন—এগুলো দেওয়া যাবে না। কেউ যদি দেশের সম্পর্কে কথা বলেন, দেশপ্রেমের কথা বলেন, স্বাধীনতার কথা বলেন, মুক্ত স্বাধীনতার কথা বলেন, অধিকারের কথা বলেন, তাহলে নাকি হবে রাষ্ট্রদ্রোহ।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকারের সমালোচনা করা রাষ্ট্রদ্রোহ নয়। সরকার খারাপ কাজ করলে, তার সমালোচনা করাই গণতন্ত্রের নিয়ম। এই সরকার সেটাও করতে দিতে চায় না। যখন সাংবাদিক নেতারা বলছেন, যখন জাতিসংঘ থেকে বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করো, বাতিল করো। তখন আইনমন্ত্রী জোর গলায় চিৎকার করে বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। কারণ তিনি জানেন, এই সব আইন বাতিল হয়ে গেলে তাঁরা জনগণের সামনে দাঁড়াতেও পারবেন না।

আগামী সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যখন নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তখন তারা (আওয়ামী লীগ) বলছে, সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে? এই নির্বাচনে কি মানুষের মতের প্রতিফলন ঘটবে? আগে থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি করবে যে বিরোধী দল যাতে নির্বাচনে দাঁড়াতেই না পারে। এ কারণে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে কোনো মতেই এই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। আমরা চাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক, যে নির্বাচনে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। কিন্তু এই সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে, তবে সেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে না।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, এই সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে সারা দেশের মানুষকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। একটা অসহনীয়-শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে নিয়ে গেছে। এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে গণমাধ্যম, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করে ফেলেছে।

কৃষক খেতে সেচ দিতে পারছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিদ্যুৎ-সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা (সরকার) সব ক্ষেত্রে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছে। কিন্তু তাঁদের (আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী) ঘাটতি নেই। তাঁদের দিকে তাকান, তাঁদের কেবল উন্নতি। যাঁদের টিনের ছাপরা ঘর ছিল, তাঁদের এখন পাঁচতলা বাড়ি। যাঁরা সাইকেল চালাতেন, তাঁরা এখন বড় গাড়ি চালান।

এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সহসভাপতি নুর করিম, ইউনূস আলী, আবু তাহের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।