প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ ঈদের পর সার্কুলার, আগস্টে পরীক্ষা

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া আবারো শুরু হয়েছে। এর আগে গত জানুয়ারিতে সারাদেশে ৩৭ হাজার সহকারি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। এখন শূন্য পদে আরো ১৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ছয়টি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ঈদের পর বাকি দু’টি বিভাগের সার্কুলার জারি করে আগামী আগস্টে পৃথকভাবে লিখিত পরীক্ষা নেয়ার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নতুন শিক্ষক নিয়োগের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনটি বিভাগের (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট) শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর পরের মাসে অর্থাৎ মার্চে প্রকাশ করা হয় আরো তিনটি বিভাগের (খুলনা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ) বিজ্ঞপ্তি। এই ছয় বিভাগে প্রাক প্রাথমিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে।

তবে এখনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের। এই দুই বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অপেক্ষায় আছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।

এ দিকে সর্বশেষ তথ্যানুয়ায়ী দেশে বর্তমান ৬৬ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজার ৯২৬টি শূন্যপদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে ২৯ হাজার ৮৫৮টি এবং সহকারী শিক্ষক ৮ হাজার ৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে।

গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাতীয় সংসদে আরো জানান, শূন্যপদ পূরণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। সরাসরি নিয়োগযোগ্য ১ হাজার ৯৫৫টি প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গত ৪ জানুয়ারি সরকারি কর্মকমিশনে রিকুইজিশন করা হয়েছে। প্রথম গ্রুপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। এরপর রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গত ২৩ মার্চ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। আর আসন্ন কুরবানির ঈদের পরই ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্র থেকে জানা গেছে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ঘাটতি পূরণে শিগগিরই নেয়া হবে লিখিত পরীক্ষা। বর্তমানে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৩৪। অর্থাৎ, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গড়ে ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য রয়েছেন একজন করে শিক্ষক। তাই ডিপিই চায় ঈদের পরই ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ইতিহাসের সব থেকে বৃহৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রাথমিকে নিয়োগ পান ৩৭ হাজার সহকারি শিক্ষক। ইতোমধ্যে তারা যোগদানও করেছেন।

ডিপিই সূত্রে জানা যায়, নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় চলতি বছরেই সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেইসাথে এ সময়ে নতুন করে অবসরে যাওয়া শিক্ষকরা এই তালিকায় যুক্ত হতে পারেন। এই সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ১৫ হাজারের অধিক হতে পারে।

ডিপিই’র নিয়োগ সংক্রান্ত বিভাগে গিয়ে জানা যায়, ৩৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন কিছু সমালোচনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই একই মডেলে তারা এবারের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাও নিতে চান। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছরের জুন মাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি তাই ডিপিই চায় কোরবানির ঈদের পরই নিয়োগ পরীক্ষা নিতে।

ডিপিই পলিসি এবং অপারেশন বিভাগের পরিচালক মনীষ চাকমা বলেন, এ দুই বিভাগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত হবে। এরপর আমরা দ্রুত পরীক্ষা নিতে চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, লিখিত পরীক্ষা কবে নেয়া হবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা চাই দ্রুত নিয়োগ পরীক্ষা নিতে।

তিনি জানান, এবারের নিয়োগ পরীক্ষাও পূর্বের মতো বিভাগওয়ারী নেয়ার পরিকল্পনা চলছে।

Check Also

গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণ

গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণ সভা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।