কলারোয়ার সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়নের মাদরা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম (২৪) মারা গেছেন। গত ১২ জুন বাংলাদেশ সময় বেলা ১২টার দিকে কনস্ট্রাকশনের কাজের সময় ৩ তলা বিল্ডিং থেকে পড়ে তিনি মারাত্মকভাবে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হোন। এসময় তার সহকর্মীরা পাশ্ববর্তী একটি সরকারি হাসপাতালে (বন্দর মহারানী, দিরাজা) ভর্তি করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহতের মেঝো ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী মফিজুল ইসলাম কলারোয়া নিউজকে বলেন, ”আমার ছোট ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর আমরা জরুরি চিকিৎসা সহায়তা পাইনি। ভাইয়ের বৈধ্য কাগজপত্র না থাকায় তার কোম্পানী (CSM CONSULTANT) পক্ষ থেকে কোনোরকম সহায়তার হাত বাড়ায়নি তারা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভাইয়ের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট দিয়েছে। আমাদের ধারণা, কোম্পানীটি যোগসাজশ করে এমন রিপোর্ট বের করেছে। যাতে লাশ দেশে নিয়ে যেতে না পারি, কোম্পানীও যাতে কোনো ধরণের ঝামেলায় না জড়ায়। আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি এখানে অবিস্থত বাংলাদেশ হাইকমিশনে জানিয়েছি। জানিনা শেষ পর্যন্ত ছোট ভাইয়ের লাশ দেশে নিয়ে যেতে পারব কি-না।”
নিহতের মামা মনিরুল ইসলাম কলারোয়া নিউজকে বলেন, “লাশ দেশে আনার জন্য আমরা মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এখনো ফলপ্রসূ কিছু আমরা পাইনি। নিহত সিরাজুল যে কোম্পানীতে কর্মরত ছিলো সেখান থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। এদিকে ছেলের শোকে বাবা-মায়ের কান্নার আহাজারি যেন থামছেই না। ছেলের লাশ দেশে আনতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতার আকুতি জানিয়েছেন নিহত সিরাজুলের বাবা-মা।”
এ বিষয়ে সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল বলেন, “বিষয়টি আমি অবগত আছি। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী আমি জেনেছি, নিহত সিরাজুলের কর্মস্থল CSM কোম্পানীটি হাসপাতালের সঙ্গে যোগসাজশ করে মৃত্যুর পর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট দিয়েছে। সে কারণে বর্তমানে লাশ দেশে আনতে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। আমি বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের মালয়েশিয়া জোনের মিনিস্টার (শ্রম) নাজমুস সাদাত সেলিম কলারোয়া নিউজকে বলেন, “আমরা প্রতি মাসে প্রবাসীদের মৃত্যুর পর নানা নাটকীয়তার অভিযোগ পাচ্ছি। বিশেষ করে কোনো অবৈধ প্রবাসীর মৃত্যু হলে তাৎক্ষণিক করোনা পভেটিভ রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। যাতে লাশ দেশে ফিরতে না পারে। এখন কেউ যদি ঐ রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করে মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেন তাহলে তিনি হয়তো সুফল পাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে বাংলাদেশ হাইকমিশনে তারা একটা অভিযোগ করুক। এরপর আমরা বিষয়টি দেখবো।”