১৩ বছর ধরে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সনদ নবায়ন করেননি বলে ভুল স্বীকার করেছেন সেন্ট্রাল হাসপাতালের আলোচিত গাইনি চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহা। তিনি বলেন, আমার আগেই নিবন্ধন নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এত ব্যস্ত থাকি যে, সময় পাইনি। এটা আমার ভুল হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় পরিবারের নিজ বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
সংযুক্তা বলেন, আমার নিবন্ধন নেই, বিষয়টি কিন্তু এমন না। নিবন্ধন আছে, তবে সেটি রিনিউ করা হয়নি। বিএমডিসিতে রিনিউয়ের একটা ফি দিতে হয়, এটা গত বছর থেকেই অনলাইন সিস্টেম ছিল। এটা আমি জানতাম না। আমি তো আমার বাসায় আসারই সময় পাই না। নতুন চাকরির ক্ষেত্রে আমাদের কাগজপত্র ঠিক করতে হয়, আমার নতুন কোনো চাকরি হয়নি তাই কাগজপত্র ঠিক করা হয়নি।
নিবন্ধনের জন্য ১৩ বছরে একবারও সময় হয়নি? জানতে চাইলে সংযুক্তা বলেন, যখন থেকে আমি মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে বিভাগীয় প্রধান ছিলাম, তখন নিবন্ধনের বিষয়গুলো তারাই হ্যান্ডেল করতো। কাগজপত্র নিয়ে তারাই রিনিউ করে নিয়ে আসতো। সেন্ট্রাল হাসপাতালে আসার পর সেটি আর হয়ে ওঠেনি।
প্রসূতি আঁখি ও তার সন্তানের মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে ডা. সংযুক্তা সাহা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত কাউকে দোষী বলা উচিত নয়। আমি ওই সময় ছিলাম না এমনকি জানতাম না এই রোগী সম্পর্কে।
অনলাইনে চিকিৎসা প্রচারণা বিষয়ে তিনি বলেন, আমি লাভের জন্য লাইভ করিনি। অনলাইনে বুস্টিংও করিনি। মানুষের মাঝে নরমাল ডেলিভারি নিয়ে সচেতনতায় এটি করতাম। জনসচেতনতার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করতাম। রোগীরা স্ব-প্রণোদিত হয়ে লাইভে যুক্ত হতো।
গত ৯ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালে সি-সেকশন সার্জারির সময় এক নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। কয়েকদিন পরে মাহবুবা রহমান আঁখি নামের ওই মা অপর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এই ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলা ও মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।
সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন আঁখি। তবে অভিযোগ রয়েছে- রোগী ও তার পরিবারকে সার্জারির আগে বলা হয়েছিল যে ডা. সংযুক্তা সাহা অপারেশন করবেন। হাসপাতালে তাকে ওই চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি করা হলেও ডা. সংযুক্তা সাহা দেশেই ছিলেন না। অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে তখন অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। পরদিন মারা যায় শিশুটি।