প্রিগোজিনের বিদ্রোহ পরিকল্পনা আগেই জানত যুক্তরাষ্ট্র: নিউইয়র্ক টাইমস

রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে নাটকীয় লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়ার মতো কোনো পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তাদেরই ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন— এ কথা আগেই জানত যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি প্রিগোজিনের এই পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পেরে প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রাগার নিয়ে উদ্বিগ্নও হয়ে পড়েন মার্কিন কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বিদ্রোহের মতো কোনো পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে গত বুধবারই মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছিল।

আর এই খবর শোনার পর মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক উদ্বেগ ছিল— প্রিগোজিনের এই পদক্ষেপ মস্কোর পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণকে কোনোভাবে প্রভাবিত করবে কিনা।

মার্কিন গোয়েন্দারা গত কয়েক মাস ধরে ওয়াগনারপ্রধান এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুসহ সামরিক নেতাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পর্যবেক্ষণ করছিলেন বলেও জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার রোস্তভ প্রদেশে প্রবেশ করেন ওয়াগনার সেনারা। পুরো বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন প্রিগোজিন নিজে। প্রথমে তারা রোস্তভের সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর দখল করেন। এর পর মস্কোর দিকে অগ্রযাত্রা হন।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে রুশবাহিনী যে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছেন, সেটি রোস্তভের এই সদরদপ্তর থেকেই পরিচালনা করা হতো।

রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানান, ওয়াগনার বাহিনীর বহরটি প্রথমে রোস্তভ থেকে ভোরোনেজে আসে। এর পর সেখান থেকে মস্কোর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আর ঠিক তখনই হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়। ওই বহরটিতে সাঁজোয়া যান এবং অন্তত একটি ট্যাংক ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এই শহরটি মস্কো থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এদিকে ওয়াগনার সেনারা যেন কোনোভাবেই মস্কোতে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সেখানে আগেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। মস্কোর বিখ্যাত রেড স্কয়ারে লোহার ব্যারিকেডও দেওয়া হয়।

পরে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের ওই লড়াই অনেকটা নাটকীয় ভাবেই থেমে যায়। মূলত ক্রেমলিনের সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার হুমকি দিয়ে রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রা করার ঘোষণা দেওয়া হলেও পরে তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে বিবিসি বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার বিশৃঙ্খল ২৪ ঘণ্টা পরও মস্কোর দিকে গভীর মনোযোগ রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এর আগে এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে গত কয়েক ঘণ্টা কথা বলেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড জে অস্টিন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘চলমান পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয়মূলক পদক্ষেপে যুক্ত থাকবে।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন আরও বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে সমর্থন রয়েছে, সেটিও পরিবর্তন হবে না।

 

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।