সব দলকে সমঝোতার ডাক

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে চলমান সংকট সমাধানে সংঘাতের বদলে সংলাপ হোক।তিনি রাজনীতির মাঠে সব রাজনৈতিক দলকে এক টেবিলে বসে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সুজন আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ও সংলাপের আহ্বানে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান।

মানববন্ধন আয়োজনের উদ্দেশ সম্পর্কে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা কোনো দলের পক্ষে নই, বিপক্ষেও নই। সরকারেরও বিপক্ষে নয়, এটা জনগণের পক্ষে। সারা দেশে মানুষ আজ নিজের ভোটাধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

চলমান সংকট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দলীয় সরকার বনাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার এটি সমস্যা নয়, মূল সমস্যা ভোটাধিকার। ভোটাধিকার নিয়ে সমস্যা গণতন্ত্রের সমস্যা, কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও যথাযথ আয়োজনে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনের আচরণ নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচনি ক্ষেত্রে সমতা থাকতে হবে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের জন্য। ১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছে সেটা ভেঙে দেওয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেটা নিশ্চিত করতে সস্তা স্লোগানের বাইরে এসে রাজনৈতিক দলগুলো মূল সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে।’

বিদেশিদের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘যেকোনো রাষ্ট্র গণতন্ত্রের জন্য আমাদের দায়বদ্ধ করতে পারে। বাঙালি ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তান, তারপর সামরিক বাহিনী জীবনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এজন্য সারা বিশ্বের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মানবাধিকার কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যেন সমঝোতায় বসে। সংঘাত বা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়, প্রয়োজন সংলাপ।’

ঢাকা মহানগর সুজনের সাধারণ সম্পাদক জুবায়েরুল হক নাহিদ বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। এখানকার মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চায়। এজন্য নয় যে, সমঝোতা বাদ দিয়ে খেলা হবে। আমরা কোনো খেলা দেখতে চাই না। আমরা চাই, আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবে নির্বাচন কিভাবে হবে।  অবশ্যই এক টেবিলে বসতে হবে। সুনির্দিষ্ট পন্থা ঠিক করে সংঘাতের অবসান হবে।’

আজীবন সদস্য পরিবেশকর্মী আমিনুর রসুল বলেন, ‘যাদের ওপর ভরসা করে জাতি, তারা আজকে সংঘাতের দিকে যাচ্ছে। এটি লজ্জার, তাদের সাংবিধানিকভাবে পন্থা ঠিক করতে হবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সমঝোতায় বসুন, আলোচনা করুন। না হয় আপনাদের ভবিষ্যতও ভালো নয়।’

সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা আছেন। তারা যদি ক্ষমতা হস্তান্তরের সুষ্ঠু পদ্ধতি দিয়ে দিতে না পারেন, তাহলে কে দেবে! ৫২ বছরে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এখনো ঠিক করতে পারিনি। উন্নয়নের চেহারা দেখছি কিন্তু মানবিক উন্নয়ন না হওয়াতে ভেতর ভেতরে ক্ষতি হচ্ছে।’

জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের নাসিমা আক্তার জলি বলেন, ‘মতপ্রকাশ করতে গিয়ে যেন আমরা অসহিষ্ণু আচরণ না করি। সব দলের প্রতি আহ্বান, একত্রে বসেন যেন আমরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারি। আপনারাই জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবেন।’

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।